Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata News

দিনেও জ্বলছে আলো, দায় নিয়ে নারদ নারদ

রাতে ওই সেতুতে যে সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্প জ্বলে, তা সাধারণত দিনের আলো ফুটতেই নিভিয়ে ফেলা হয়। এ ছাড়া, সেতুর গায়ে লাগানো রঙিন আলোগুলিও রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিভিয়ে দেওয়া হয়। সবটাই হয় নিয়ম মেনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেই নিয়ম ভেঙে সেতুর সব ক’টি আলো জ্বেলে রাখা হল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরেই অনিয়মের এমন ঘটনা ঘটছে ওই সেতুতে।

আলোকিত: দিনের বেলাতেও হাওড়া সেতুতে জ্বলছে আলো। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

আলোকিত: দিনের বেলাতেও হাওড়া সেতুতে জ্বলছে আলো। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৮ ০০:৫৯
Share: Save:

হাওড়া সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও এ বার প্রকট হয়ে উঠল রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের বিভেদ!

রাতে ওই সেতুতে যে সোডিয়াম ভেপার ল্যাম্প জ্বলে, তা সাধারণত দিনের আলো ফুটতেই নিভিয়ে ফেলা হয়। এ ছাড়া, সেতুর গায়ে লাগানো রঙিন আলোগুলিও রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিভিয়ে দেওয়া হয়। সবটাই হয় নিয়ম মেনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেই নিয়ম ভেঙে সেতুর সব ক’টি আলো জ্বেলে রাখা হল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরেই অনিয়মের এমন ঘটনা ঘটছে ওই সেতুতে। কিন্তু কেন?

উত্তর খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল হাওড়া সেতুর আলো জ্বালা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের দু’টি সংস্থার চাপান-উতোরের কাহিনি। হাওড়া সেতু রক্ষণাবেক্ষণের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের। ওই সেতু দেখভালের জন্য আলাদা এক জন কমিশনার রয়েছেন, যিনি বন্দরের কর্মী। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও হাওড়া সেতু সন্ধ্যায় যে রঙিন আলোয় সেজে ওঠে, তা জ্বালানো এবং নেভানোর দায়িত্বও ন্যস্ত তাদের উপরেই। অন্য দিকে, সেতুর যে হলুদ রঙের সোডিয়াম লাইট দু’দিকে সারিবদ্ধ ভাবে এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত রয়েছে, সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করে রাজ্য সরকারের সংস্থা ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ বা কেএমডিএ।

কলকাতা বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুতে যে সোডিয়াম ভেপার আলো জ্বলে, গত কয়েক দিন ধরে তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিল কেএমডিএ। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সংস্থা আলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করলে অপর সংস্থাকে তা সরকারি ভাবে জানিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু কেএমডিএ তা করেনি বলে অভিযোগ। বন্দর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সেতুর আলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ যে করা হবে, তা তাঁদের জানানোই হয়নি।

কলকাতা বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিনের বেলাতেও সোডিয়াম আলো জ্বলছিল কেন, তা কেএমডিএ বলতে পারবে। কারণ, সোডিয়াম আলো জ্বালানো-নেভানো ওরাই করে থাকে। আমাদের দায়িত্বে রয়েছে সেতুর রঙিন আলো। সেই আলো কেন জ্বলছিল, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ বন্দর
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কেএমডিএ সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে কোনও নিয়মই মানে না। বারবার অভিযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি।

বন্দর কর্তৃপক্ষের ইলেকট্রিক্যাল দফতরের কর্তাদের অভিযোগ, কেএমডিএ-কে একাধিক বার বলা হয়েছে, এতটা সময় সেতুর আলো জ্বালিয়ে কাজ না করতে। কারণ, তাতে বিদ্যুতের ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু আলোর রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে দিনের বেলা ছ’-সাত ঘণ্টা কেন আলো জ্বালাতে হল, তা তাঁদের মাথায় আসছে না। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কলকাতা বন্দরের অনুমতি ছাড়া রঙিন আলো জ্বালানো হল কেন?

অন্য দিকে, কেএমডিএ-র তরফে এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘বন্দরের অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করি। সেতুর মূল আলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ এত বছর ধরে কেএমডিএ-ই তো করে আসছে। প্রতিদিন তো আর আলো জ্বলে থাকে না। ঠিক কী কারণে আলো জ্বেলে রেখে কাজ করা হচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ কলকাতা বন্দরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে এ দিন সেতু কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE