খন্দময়: হাওড়া মাছ বাজারের সামনের রাস্তা। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়া পুর এলাকায় একসঙ্গে ৮৪টি রাস্তা সারাইয়ের কাজ ঠিক হয়েছিল মাস পাঁচেক আগে। দরপত্র ডেকে লিলুয়ার কয়েকটি রাস্তার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। তার পরেই করোনা আতঙ্কে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। ফলে ৯০ শতাংশ রাস্তার মেরামতি স্থগিত হয়ে যায়। শুরু হয়ে গিয়েছে বর্ষা। ওই সব ভাঙাচোরা রাস্তা এখন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ থাকা টেন্ডার কমিটি ও ওয়ার্কস কমিটির বৈঠক ডেকে বুধবার এক দিনেই ৮৫টি আটকে থাকা ফাইল ছেড়ে দিয়ে দ্রুত কাজ শুরুর নির্দেশ দিলেন হাওড়ার পুর কর্তারা।
সূত্রের খবর, গত তিন বছর ধরে হাওড়া পুর এলাকার রাস্তাঘাটের হাল দিন দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় মেরামতের কাজ ঠিক মতো হয়নি। ফলে হাওড়ার অধিকাংশ রাস্তা হয় ভেঙে গিয়েছে, নয়তো বড় বড় গর্ত হয়ে মরণফাঁদ হয়ে রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার গর্ত আপাতত খোয়া দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হবে। বর্ষার পরে পিচ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
বুধবার হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বর্ষার মধ্যে পিচের প্রলেপ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই তাপ্পি দেওয়ার কাজই হবে। গর্তগুলি ভরাট করা হবে খোয়া ও পাথর দিয়ে। এর ফলে রাস্তায় হাঁটা ও যান চলাচলের একটু সুবিধা হবে।’’
যে রাস্তাগুলিতে আপৎকালীন মেরামতি শুরু হবে, সেগুলি হল বেনারস রোড, জি টি রোড, সালকিয়া স্কুল রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, জে এন মুখার্জি রোড-সহ ৬০টি বড় রাস্তা।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে হাওড়া পুরসভার টেন্ডার কমিটি এবং ওয়ার্কস কমিটির কোনও বৈঠক হয়নি। এর ফলে গত চার মাস কোনও কাজের বরাত বেরোয়নি পুরসভা থেকে। নিকাশি, রাস্তা, পানীয় জল-সহ বিদ্যুৎ বিভাগের কাজ আটকে পড়েছিল দীর্ঘদিন। এক পদস্থ পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘টেন্ডার ও ওয়ার্কস কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ আটকে থাকা ফাইল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ কাজই পাঁচ লক্ষ টাকার কম হওয়ায় ই-টেন্ডারের প্রয়োজন নেই। পুরসভার নিজস্ব টাকা থেকেই কাজ হবে।’’
এ দিনই একটি বৈঠক ডেকে কেএমডিএ, কেএমডব্লিউএসএ ও সেচ দফতরের বিভিন্ন বকেয়া কাজ সমন্বয়ের মাধ্যমে শেষ করার জন্য সব দফতরকে নিয়ে বৈঠকও করেন পুরকর্তারা।
লকডাউনের আগে হাওড়ায় পুর ভোটের হাওয়া ওঠায় এলাকার রাস্তা মেরামতি-সহ নিকাশির কাজের জন্য চাপ বাড়ছিল প্রাক্তন কাউন্সিলরদের থেকে। কিন্তু কোভিড-১৯ এবং আমপানের তাণ্ডবে সবটাই ধামাচাপা পড়ে যায়। এ দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকায় পুর পরিষেবা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। তাই আপৎকালীন এই পরিষেবা, জানাচ্ছে পুরসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy