Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষায় লেজ়ারের নজর

মাঝেরহাটের বিপর্যয়ের পরেই রাজ্যের বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষায় নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। তারই অঙ্গ হিসেবে বুধবার রাতে লেজার ফোটোমেট্রিক মেজ়ারমেন্ট সিস্টেম (এলপিএমএস) পদ্ধতিতে আলিপুরের জিরাট সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করল সেচ দফতর।

আধুনিক: লেজার পদ্ধতিতে চলছে তথ্য সংগ্রহ। বৃহস্পতিবার, আলিপুরের জিরাট সেতুতে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

আধুনিক: লেজার পদ্ধতিতে চলছে তথ্য সংগ্রহ। বৃহস্পতিবার, আলিপুরের জিরাট সেতুতে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

কাজল গুপ্ত ও শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০৬
Share: Save:

আধুনিক প্রযুক্তিতে সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষা শুরু করল সেচ দফতর।

মাঝেরহাটের বিপর্যয়ের পরেই রাজ্যের বিভিন্ন সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষায় নেমেছে রাজ্য প্রশাসন। তারই অঙ্গ হিসেবে বুধবার রাতে লেজার ফোটোমেট্রিক মেজ়ারমেন্ট সিস্টেম (এলপিএমএস) পদ্ধতিতে আলিপুরের জিরাট সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করল সেচ দফতর। কর্তাদের দাবি, কলকাতায় এই পদ্ধতিতে প্রথম কোনও সেতুর হাল খতিয়ে দেখা হল।

সেচ দফতর সূত্রের খবর, তারা বিভিন্ন জেলা-সহ কলকাতাতেও বেশ কয়েকটি সেতু তৈরি করেছে। তারই কয়েকটি বহু পুরনো। প্রথম পর্যায়ে কলকাতায় জিরাট সেতু ও টালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের মহাবীরতলা সেতুকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেচ দফতর পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়েছে রাইটস-কে। ওই সংস্থা আবার আইআইটি খড়গপুরের সহযোগিতায় কাজটি করছে। ১৯০৪ সালে তৈরি হওয়া জিরাট সেতুটির স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করতে বুধবার রাতে বিশেষজ্ঞেরা যান। বিদেশ থেকে ইস্পাত এনে জিরাট সেতু তৈরি করা হয়েছিল। আর মহাবীরতলার সেতু তৈরি হয়েছিল ১৯৩৬ সালে।

পরীক্ষার জন্য জিরাট সেতুর নীচে অস্থায়ী লোহার কাঠামো তৈরি হয়েছিল। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সহযোগিতায় সেতুর উপরে ভারী ট্রাক দাঁড় করিয়ে, আবার সেতুর দু’দিকে গাড়ি চালিয়ে পরীক্ষার কাজ করা হয়েছে। কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, একটি নির্দিষ্ট সময়ে কতগুলো গাড়ির কত ওজন সেতুকে বহন করতে হচ্ছে, তার জেরে সেতুর কাঠামোতে কতখানি চাপ পড়ছে, সেই চাপ বহন করতে সেতুর ক্ষমতা কোন পর্যায়ে তারই তথ্য লেজার পদ্ধতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তবে পরীক্ষা চলাকালীন সেতুর নীচে লোহার কাঠামোর একাধিক জায়গায় মরচে পড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি নজরে এসেছে ইঞ্জিনিয়ারদের। সেচ কর্তারা জানান, পরীক্ষার সময়ে ওই সেতুর উপরে প্রায় ৯০ টন ভার চাপানো হয়েছিল। এর পরে লেজারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, তাতে সেতু কতটা ঝুঁকে পড়ছে কিংবা ভার বহনের ক্ষমতায় কোন বিচ্যুতি ঘটছে কি না। আইআইটি খড়গপুরে সেতু বিশেষজ্ঞ নিশীথরঞ্জন মণ্ডল জানান, সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এই পদ্ধতি যথেষ্ট কার্যকরী হবে। বর্তমানে ওই সেতু কত চাপ বহনে সক্ষম তা জানা জরুরি। কেননা সেই তথ্য সংগ্রহ এবং পর্যালোচনায় সেতুর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ সম্ভব।

সেচ দফতরের সচিব গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত রাজ্যের সেচ দফতরের আওতায় থাকা সব সেতুর স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করছি। শুধু চোখে দেখে নয়, আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পুরো কাজ করা হচ্ছে। কয়েকটি পুরনো সেতু ভেঙে ফের নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE