Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata news

যাদবপুরের রিপোর্ট দিয়ে রাজ্যপালের কাছে ‘পদত্যাগের’ ইচ্ছা প্রকাশ উপাচার্যের

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে দু’জনের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয়েছে। অধ্যাপক সংগঠন জুটা কর্মবিরতি করেছে। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তারা।কলা বিভাগে প্রবেশিকা না ফিরলে পড়ুয়ারাও আমরণ অনশনের পথেযাবেন বলে জানিয়েছেন।

যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ছবি: পিটিআই।

যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ১৬:০৬
Share: Save:

কলা বিভাগে প্রবেশিকা ফিরিয়ে আনার দাবিতে পড়ুয়া-অধ্যাপক-প্রাক্তনীরা ‘জোট’ বেধেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত অচলাবস্থা চলছে। কী ভাবে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় বুঝে উঠতে পারছেন না উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। শুক্রবার তিনি রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে বর্তমান অচলাবস্থার কথা জানান। তখনই তিনি ‘পদত্যাগের’ ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল তাঁকে বিষয়টি ফের বিবেচনা করে দেখতে বলেন। আদৌ উপাচার্য পদত্যাগ করবেন কি না, তা সময়ই বলবে। এ দিন রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও যান সুরঞ্জনবাবু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয়। তিনি স্পষ্টত জানিয়ে দেন, এ ভাবে কাজ করা যায় না। এদিন অধ্যাপক সংগঠন জুটা কর্মবিরতির পাশাপাশি তিন ঘণ্টা অবস্থানও করে। তারা আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। কলা বিভাগে প্রবেশিকা না ফিরলে পড়ুয়ারাও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি জুটার সদস্য অধ্যাপকেরা। তাঁদের কথায়, এক জন উপাচার্যের এমন অবস্থা, যে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে যেতে হল। আর হবে না-ই বা কেন, মন্ত্রীর ইচ্ছাতেই তো নম্বরের ভিত্তিতে কলা বিভাগে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন: যাদবপুরে নিন্দায় মুখর প্রাক্তনীরাও

দেখুন ভিডিয়ো

সুর়ঞ্জনবাবুর এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য অশোকনাথ বসু। তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক নয়। এটা একটা রাজনীতিক সিদ্ধান্ত। যার ফল ভোগ করতে হবে যাদবপুরকে। এটা মেনে নিলেন উপাচার্য থেকে অ্যাডমিশন কমিটি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”

জুটার অবস্থান কর্মসূচিতে এসেছিলেন বিদ্যাসাগার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়। তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, “উনি কি বোঝেন শিক্ষার! শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার কিছুই বোঝেন না। নিজের মত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক বিষয়ে নাক গলাতেন না। এতে স্বাধিকার ভঙ্গ হচ্ছে।”

আনন্দদেববাবুর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপকদেরও একই মত। তাঁরাও এই সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করছেন। ইংরাজি বিভাগের অধ্যাপিকা সুতনুকা ঘোষ বলেন, “ইংরাজির মতো একটি বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়া হলে মেধা যাচাইয়ের কোনও জায়গাই থাকছে না। ওই বিষয়ের পড়ুয়ার কতটা দখল রয়েছে, তা জানার জন্য একমাত্র উপায় পরীক্ষা। সেটাই বন্ধ করে দিল অ্যাডমিশন কমিটি।”

আরও পড়ুন: নিয়ম ভেঙে দিব্যি ভর্তি অফলাইনে

ইংরাজি বিভাগের অধ্যাপকেরা ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার ডাক দিয়েছেন। এদিন তুলামূলক সাহিত্যের অধ্যাপকেরও ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের এই অবস্থানে রীতিমতো চিন্তায় উপাচার্য। তাদের এই বয়কটে আগামী ১৯ তারিখ মেধা তালিকা কীভাবে প্রকাশ পাবে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জুটার পক্ষ থেকে পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই আন্দোলনে আমরা সবাই এক। কয়েক দশক ধরে চলে আসা এই রীতিকে শিক্ষামন্ত্রীর ইচ্ছামতো ভেঙে দেওয়া যায় না। এত ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলের জন্য চরম বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। আইনেও এভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত বদলের জায়গা নেই। এ বিষয়ে আমার আইনি লড়াইয়ের দিকে যেতে পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE