প্রস্তুতি: জিঞ্জিরাবাজার উড়ালপুল উদ্বোধনের আগে চলছে রং করার কাজ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে জট কাটতে চলেছে জিঞ্জিরাবাজার উড়ালপুলের। সব ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার উড়ালপুলটির উদ্বোধন হতে চলেছে। গত অক্টোবরে সেটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী ওই উড়ালপুল দিয়ে চলাচলকারী ভারী যানবাহনকে টোল দিতে হবে। তবে মোটরবাইক বা ছোট গাড়ির থেকে টোল আদায় করা হবে না।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, উড়ালপুল তৈরি হওয়ার পরে টোল আদায় নিয়ে প্রাথমিক ভাবে সমস্যা হয়েছিল। পরে নির্মাণকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটে। ওই সংস্থার সঙ্গে যে শর্তে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়েছিল, আপাতত তাতেই স্থির থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নির্মাণকারী সংস্থার অন্যতম কর্ণধার সুমিত ডাবরিওয়াল বলেন, ‘‘সমস্যা মিটে গিয়েছে। সরকার পুরনো শর্তেই রাজি হয়েছে।’’
রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক জানান, উড়ালপুল নির্মাণের সময়ে প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি ছিল, এটি তৈরির খরচ সংশ্লিষ্ট সংস্থা টোল বসিয়ে আদায় করবে। রাজ্য প্রথমে চুক্তিতে রাজি হলেও পরবর্তীকালে টোল নেওয়ার বিরোধিতা করে। সে ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী, উড়ালপুল তৈরিতে সংস্থার যা খরচ হয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে তাদের সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু
তারা টাকা ফেরত দিতে না পারায় কেএমডিএ-কে হস্তান্তর করা যায়নি প্রকল্পটি। আটকে যায় উড়ালপুলের উদ্বোধনও।
যদিও নগরোন্নয়ন দফতরের দাবি, উড়ালপুলের নির্মাণ-খরচ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বরাদ্দ করার ক্ষেত্রে রাজ্যের আর্থিক অসুবিধা আছে। সে কারণে প্রথমে টোল নেওয়ার বিরোধিতা করা হলেও পরে তা থেকে সরে আসা হয়। তবে কোন গাড়ির ক্ষেত্রে কত টাকা টোল আদায় করা হবে, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালপুলটি যোগ করেছে জিঞ্জিরাবাজার ও বাটানগরকে। দুই লেনের এই উড়ালপুল চালু হলে কম সময়ে যেমন কলকাতা থেকে বজবজ পৌঁছনো যাবে, তেমন কলকাতার দিকেও আসা যাবে সহজে। প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২২৫ কোটি টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩০ কোটিতে। উন্নয়ন সংস্থা যৌথ সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রাণবন্ধু নাগ বলেন, ‘‘নিবেদিতা সেতুতে তো টোল নেওয়ার রেওয়াজ বহু দিন থেকে রয়েছে। তবে আশা করব, নাগরিকদের কথা ভেবে নতুন উড়ালপুলে কম টাকা টোল নেওয়া হবে।’’
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে বেশির ভাগ গাড়িকে তারাতলা রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার জেরে দিনের একটা বড় সময় যানজট লেগে থাকছে জিঞ্জিরাবাজারে। উড়ালপুলটি চালু হলে জিঞ্জিরাবাজারের দিকে প্রচুর গাড়ি পৌঁছবে। এতে ওই এলাকায় যানজট আরও বাড়ার আশঙ্কাও থাকছে। তবে কেএমডিএ জানিয়েছে, উড়ালপুলের নীচের রাস্তা বজবজ ট্রাঙ্ক রোড চওড়া করা হচ্ছে। যাতে উড়ালপুলের উপরে গাড়ির অত্যধিক চাপ না পড়ে।
অন্য দিকে, জিঞ্জিরাবাজার থেকে ডায়মন্ড হারবার যাওয়া সুগম করতে ব্রেসব্রিজের পাশ দিয়ে চার লেনের একটি উড়ালপুল তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই উড়ালপুল যোগ করা হবে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের সঙ্গে। মেয়র তথা পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম উড়ালপুল তৈরির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-কে। সংস্থা সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই কলকাতা পুরসভা, সিইএসসি, কলকাতা পুলিশ, কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং রেলের বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটসের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy