Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জট কাটার পথে জোকা মেট্রোরও

কেন্দ্র-রাজ্য সৌহার্দ্যের আবহে কাটতে চলেছে আরও একটি মেট্রো প্রকল্পের জট। সপ্তাহ দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যৌথ উদ্যোগে জটিলতা কেটে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছে দত্তাবাদে। এ বার জোকা প্রকল্পের জমি-জট কাটার ইঙ্গিত মিলেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের জটিলতা কাটাতে জমি অধিগ্রহণের ব্যয়ের একাংশ নিজের হাতে তুলে নেবে রাজ্য সরকার। তাতে রাজ্যের খরচ হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০০:৩৮
Share: Save:

কেন্দ্র-রাজ্য সৌহার্দ্যের আবহে কাটতে চলেছে আরও একটি মেট্রো প্রকল্পের জট। সপ্তাহ দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যৌথ উদ্যোগে জটিলতা কেটে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ শুরু হয়েছে দত্তাবাদে।
এ বার জোকা প্রকল্পের জমি-জট কাটার ইঙ্গিত মিলেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের জটিলতা কাটাতে জমি অধিগ্রহণের ব্যয়ের একাংশ নিজের হাতে তুলে নেবে রাজ্য সরকার। তাতে রাজ্যের খরচ হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
২০১০ সাল থেকে জোকা মেট্রোর জন্য প্রয়োজনীয় ওই জমি অধিগ্রহণ নিয়ে টালবাহানা থাকায় কার্যত অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল প্রকল্প শেষ করা নিয়েই। কারণ, ডায়মন্ড হারবার রোডের কাছে বাখরাহাট এলাকায় রসকুঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী তিনটি মৌজার জমি নিয়ে মেট্রোর কারশেড তৈরি হওয়ার কথা। কিন্তু এলাকাবাসীরা জমি দিতে আপত্তি জানানোয় আটকে যায় কারশেডের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ। এ দিকে, কারশেড না হলে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে না। বাস্তব এই পরিস্থিতি বুঝে ক্রমশ প্রকল্পের কাজে ঢিলেমি দিতে থাকে মেট্রো।

ইউপিএ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূল কংগ্রেস বেরিয়ে আসার পর থেকেই আশঙ্কা দেখা দিচ্ছিল জোকা মেট্রো প্রকল্প নিয়ে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাদের সঙ্গে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বোঝাপড়া না-থাকায় ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে ওই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ। কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক উষ্ণ হতেই ফের জোকা-বিবাদীবাগ মেট্রো প্রকল্পের অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

কিন্তু কী ভাবে?

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, ২০১০ সালে রসকুঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী তিনটি মৌজায় জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিস দেয় মেট্রো রেল। মেট্রোর দাবি ছিল, তাদের আইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করে নেওয়ার পরে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু এতে বেঁকে বসেন স্থানীয় মানুষেরা। তাঁদের পক্ষ থেকে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়— টাকা দাও, জমি নিয়ে যাও। এই নিয়েই শুরু হয় টানাপড়েন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির পরে প্রথমে জট কেটেছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর। দত্তাবাদ এলাকায় জমি-সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয় দু’পক্ষই। শেষমেশ দত্তাবাদ এলাকায় ৬০টি পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে এলাকায় ওই মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ বার জোকা প্রকল্পের জমি-জট কাটাতেও সম্প্রতি মেট্রো ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মধ্যস্থতার কাজ শুরু করে কলকাতা পুরসভা। আলোচনার মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দারা শেষ পর্যন্ত কাঠা-প্রতি ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় জমি ছেড়ে দিতে সম্মত হন। কিন্তু মেট্রো জানিয়ে দেয়, ১ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি তারা ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে না। এর পরেই রাজ্য সরকার বাকি টাকা দিতে সম্মত হয়ে জমি-জট কাটাতে এগিয়ে আসে। সম্প্রতি মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার রাধেশ্যাম অগ্রবালের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক শান্তনু বসু। নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরে পরিবহণ দফতর জানিয়ে দিয়েছে, কাঠা-প্রতি ক্ষতিপূরণের বাকি ৩০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার।

রাজ্যের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের এই ব্যয়ভার বহন করতে সরকারের প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ হবে। খাতায়-কলমে তার অনুমতি নিতে ওই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই অর্থ দফতরে পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত এসে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE