বারাসতের একটি মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়। রবিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
আশঙ্কা ছিল, বৃষ্টিতে ভাসবে কালীপুজো। কিন্তু বাস্তবে সামান্য মেঘেরও দেখা মিলল না। দুর্গাপুজোর মতো না-হলেও রবিবার, কালীপুজোর দিনে তাই দুপুর থেকেই জমজমাট ভিড় মণ্ডপে। বৃষ্টিতে ভিজে গিয়ে নয়, শুকনো আবহাওয়াতেই প্রতিমা দর্শন সারল শহর। তবে ভিড়ের নিরিখে এ বারও অবশ্য কলকাতাকে টেক্কা দিল দুই ২৪ পরগনা-সহ শহরতলি।
প্রতিবারের মতোই কলকাতার কালীপুজো বলতে দর্শনার্থীদের কাছে মুখ্য সেই আমহার্স্ট স্ট্রিট। দুপুর থেকে ক্রমে কেশবচন্দ্র স্ট্রিট হয়ে আমহার্স্ট স্ট্রিটমুখী ভিড় বাড়তে থাকে। পুরনো জৌলুস নিয়ে এ বারেও মণ্ডপ সাজিয়েছে নবযুবক সঙ্ঘ তথা ফাটাকেষ্টর পুজো। প্রায় ১৬ ফুট উঁচু প্রতিমার পাশাপাশি এ বারের আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে রাস্তার ধারের আলোকসজ্জা। বিকেলে সেই মণ্ডপে ঢোকার মুখে টাঙানো প্রয়াত ফাটাকেষ্টর ছবি দেখে এক দর্শনার্থী তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ‘‘লোকটা কি নেতা?’’ যাঁর ছবি, তাঁর মাহাত্ম্য শুনে ওই তরুণীর মন্তব্য, ‘‘কালীঠাকুর দেখার মতোই এঁকে দেখাও তো বাড়তি পাওনা।’’ জৌলুস ধরে রাখার প্রতিযোগিতায় হাজির সৌমেন মিত্রের (ছোড়দা) আমহার্স্ট স্ট্রিট শ্রী শ্রী কালীপুজোও। সেখানে মণ্ডপ সংলগ্ন অস্থায়ী ছাউনির গায়ে ছোড়দার ছবি লাগানো। ব্যক্তিত্বের লড়াই যে পুজোতেও, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।
প্রতি বছরই এই দু’টি বড় পুজোর নিজস্ব দর্শক থাকে। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে রাত যত গড়িয়েছে, ভিড় বেড়েছে আমহার্স্ট স্ট্রিট হয়ে বৌবাজার পর্যন্ত অন্য পুজোমণ্ডপগুলিতেও। দুর্গাপুজোর মতো এ দিনও ওই এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে পুলিশকে। লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, এই বেষ্টনীর বাইরে এ দিন ভিড় হয়েছিল খিদিরপুর আর বাগমারির বেশ কিছু পুজোয়। বাগমারি সর্বজনীনের মাদুরের মণ্ডপ দেখে এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘এখানে আর সময় নষ্ট করে লাভ নেই। বারাসতের দিকে যেতে হবে। ওখানে অনেকগুলো পুজো রয়েছে।’’
কলকাতার পুজো দেখে শহরতলিতে যাওয়ার পথে অবশ্য এ দিনও দর্শনার্থীদের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে টালা সেতু। সেতু সংলগ্ন কয়েকটি পুজো উদ্যোক্তার দাবি, টালা সেতুর কথা ভেবে তাঁদের মণ্ডপে এ বার সে ভাবে ভিড় জমেনি। তবে দমদম রোডে এ দিন ব্যাপক পুজো-জনতার ভিড় হয়েছে বলে খবর। দমদম শীলবাগান মিত্র সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তা প্রবীর পাল বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে কী হবে না হবে তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। মানুষের ঢল দেখে মন ভরে গিয়েছে। আর কোনও চিন্তা নেই।’’ যদিও দমদম রোডের উপরে তিনটি কালীপুজোর মণ্ডপ থাকায় ভিড়ের চাপে এক সময়ে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দেওয়া গিয়েছে। নেপাল সূত্রধর নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা অবশ্য বললেন, ‘‘টালা সেতু বন্ধ থাকায় দমদম রোড অন্যতম ভরসা। মানুষের চাপের সঙ্গে গাড়ির চাপে স্থানীয়দের চোখের
জল ছুটেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy