Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
রবীন্দ্র সরোবর

বিরল প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণের উদ্যোগ

সকালে রবীন্দ্র সরোবরে হাঁটতে গিয়ে চোখ আটকে গিয়েছিল কয়েক জন প্রাতর্ভ্রমণকারীর। জলের মাঝে জেগে থাকা ডাঙায় দু’টি কচ্ছপকে দেখেছিলেন তাঁরা। সে কথা জানিয়েছিলেন কলকাতা উন্নয়ন সংস্থাকেও (কেআইটি)।

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

সকালে রবীন্দ্র সরোবরে হাঁটতে গিয়ে চোখ আটকে গিয়েছিল কয়েক জন প্রাতর্ভ্রমণকারীর। জলের মাঝে জেগে থাকা ডাঙায় দু’টি কচ্ছপকে দেখেছিলেন তাঁরা। সে কথা জানিয়েছিলেন কলকাতা উন্নয়ন সংস্থাকেও (কেআইটি)।

সমীক্ষা করতে কেআইটি জানতে পারে, রবীন্দ্র সরোবরে দু’টি প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে। এবং দু’টিই বন্যপ্রাণী আইনে এক নম্বর তফসিলের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ সংরক্ষণের দিক থেকে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে ঠিক কতগুলি কচ্ছপ রয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন কেআইটি কর্তৃপক্ষ।

পরিবেশগত দিক থেকে রবীন্দ্র সরোবর গুরুত্বপূর্ণ। শহরের মধ্যে থাকা এই সরোবরে তাই ওই দুই প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ প্রকল্প স্থির করেছে কেআইটি। সরোবরটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুধীন নন্দী জানান, কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান তাঁদের নেই। তাই আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ‘টার্টল সার্ভাইভাল অ্যালায়েন্স’ (টিএসএ)-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হচ্ছে।

টিএসএ সূত্রে খবর, রবীন্দ্র সরোবরে ‘ইন্ডিয়ান রুফড টার্টল’ ও ‘ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাপশেল টার্টল’ প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে। কী ভাবে সরোবরে এই কচ্ছপগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা ও বংশবৃদ্ধি করা যায়, সেই কাজই শুরু করা হবে। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

এই দুই ধরনের কচ্ছপ রবীন্দ্র সরোবরে এল কী ভাবে? জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘রুফ়ড টার্টল’ এবং ‘ফ্ল্যাপশেল টার্টল’ মিষ্টি জলের নদী, হ্রদে থাকে। সে হিসেবে এই হ্রদ তাদের বাসস্থানের মধ্যেই পড়ে। সরোবরের ছোটখাটো গাছ, জলজ প্রাণী খাদ্য হিসেবে মেলে। তবে বন দফতর ও টিএসএ-র একাংশ বলছেন, এই সরোবর যে হেতু কৃত্রিম। তাই কেউ হয়তো কচ্ছপগুলিকে এখানে ছেড়েছিল। কচ্ছপেরা জলে থাকলেও তাদের ডিম পাড়ার জন্য বা প্রজননের জন্য ডাঙার প্রয়োজন। রবীন্দ্র সরোবরের পাড় কংক্রিটের বাঁধানো হওয়ায় তাতে সমস্যা রয়েছে। জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিকর্তা কে ভেঙ্কটরমন বলেন, ‘‘পাড় বাঁধিয়ে দিলে জলজ প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। খাবারেও টান পড়ে।’’

কেআইটি-র অফিসারেরা জানান, রবীন্দ্র সরোবরের এক দিকে শালবল্লার খুঁটি দিয়ে বাঁধানো রয়েছে। সেখানে ঝোপঝাড় গাছের গুঁড়ি রয়েছে। সেখানেই কচ্ছপগুলি উঠে বসছে।

টিএসএ সূত্রে খবর, সরোবরে কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য কাদা মাটি রাখা হবে। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৫ মিটার ও প্রস্থে প্রায় ২ মিটার জায়গা জুড়ে বালি ছড়ানো থাকবে। এই বালির উপরে বসে রোদ পোহানো ছাড়াও কচ্ছপ এখানে ডিম পাড়তে পারে। সরোবরে তাদের প্রয়োজনীয় খাবারও মিলবে। এছাড়াও, কচ্ছপের ছবি দিয়ে ব্যানার এবং সরোবর পরিষ্কার রাখার জন্য সচেতনতা বাড়ানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkata news rare species tortoise
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE