Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

হাঁটা বন্ধ মুখ্যমন্ত্রীর! পার্ক সাপমুক্ত করতে চিঠি

এর আগেও ইলিয়ট পার্ক থেকে সাপের সাম্রাজ্য সরাতে বন দফতরের কর্মীরা সেখানে যান বলে জানিয়েছে পুরসভা। সে বার পুলিশের তরফে তাঁদের আনা হয়েছিল।

নজরে: ইলিয়ট পার্ক। ফাইল চিত্র

নজরে: ইলিয়ট পার্ক। ফাইল চিত্র

দেবাশিস ঘড়াই
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৮
Share: Save:

ইলিয়ট পার্কে সাপের উপদ্রব! তাই তিনি হাঁটার জায়গা থেকে বাদ দিয়েছেন ওই পার্ককে। চলতি মাসে চিকিৎসক দিবসের এক অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাপ-দর্শনের ঘটনা জানার পরেই ওই পার্ক সাপমুক্ত করতে উঠে-পড়ে লাগল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এ জন্য বন দফতরের সাহায্য চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে।

কারণ, তাদের সহায়তা ছাড়া ওই এলাকা সাপমুক্ত করা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। বন দফতরকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে যে, ইলিয়ট পার্কে প্রতিদিন অনেক মানুষ হাঁটতে আসেন। সেখানে প্রায়ই সাপ দেখা যাচ্ছে। যে কোনও সময়ে বড় অঘটন ঘটতে পারে। কোনও ‘আনটুওয়ার্ড ইনসিডেন্ট’ যাতে না ঘটে, তাই বন দফতর সমস্যার সমাধান করুক। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘দুর্ঘটনা এড়াতেই সাহায্য চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে।’’

এর আগেও ইলিয়ট পার্ক থেকে সাপের সাম্রাজ্য সরাতে বন দফতরের কর্মীরা সেখানে যান বলে জানিয়েছে পুরসভা। সে বার পুলিশের তরফে তাঁদের আনা হয়েছিল। পুরকর্তাদের অনুমান, ইলিয়ট পার্কে যে জলাশয় রয়েছে, সেগুলি ও তার সংলগ্ন এলাকাই সাপের আশ্রয়স্থল। সেখান থেকে কখনও-সখনও বেরিয়ে আসে সাপ। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, সাপেদের দেখা মিললেও এত দিন কোনও কামড়ের ঘটনা ঘটেনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলার পরে এ ব্যাপারে সামান্যতম ঝুঁকি নিতেও নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, পয়লা জুলাই সাপের কামড়ের চিকিৎসা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পরিকল্পনার কথা বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তখনই কথা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, আগে তিনি ইলিয়ট পার্কে হাঁটতে যেতেন। এখন আর যান না। বিশেষ করে গরমে বা বর্ষায়। কারণ, এক দিন হাঁটতে গিয়ে তিনটি ফণা তোলা সাপ দেখেন তিনি! আরও একটি সাপ পুকুর থেকে উঠছিল। এক সময়ে বাড়ি ঢোকার আগে মাঝেমধ্যে ইলিয়ট পার্কে হাঁটতেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁর জন্য ব্যাডমিন্টন কোর্টও তৈরি হয়েছিল। সেই পর্বে ছেদ টানা প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, ‘‘প্রথমে পুলিশ বলল, ঢোঁড়া সাপ। আমি বললাম, ‘মোটেই না। যেগুলো ফণা তুলে থাকে, সেগুলো বিষধর সাপ।’ দুটো সাপ দেখছি তেড়েই যাচ্ছে! একটি দেখি, ফণা তুলছে। কার্বলিক অ্যাসিড দিলেও কিস্যু হবে না। জিজ্ঞেস করলাম, এল কী ভাবে? বলে, ড্রেনেজ দিয়ে উঠছে।’’

ইলিয়ট পার্কের একাংশের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার এবং অন্য অংশের দায়িত্বে অন্য এক বেসরকারি সংস্থা। কয়েক মাস আগেই ইলিয়ট পার্কের ভিতরের রাস্তায় নতুন পেভার ব্লক বসানো হয়েছে। কারণ, সে রাস্তা প্রায়ই ভেঙে যাচ্ছিল, কোথাও আবার বসে যাচ্ছিল বলে পুরসভা সূত্রের খবর। তাই নির্বাচনের আগেই সে রাস্তা তৈরি হয়েছিল। এর পরেই সাপ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্য।

ফলে ইলিয়ট পার্ক নিয়ে কী করা যায়, সে আলোচনা শুরু হয় পুর প্রশাসনের অভ্যন্তরে। এর পরেই ঠিক হয়, বন দফতরকে চিঠি দেওয়া হবে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘বন দফতরের সাহায্য ছাড়া তো কিছু করা সম্ভব নয়। সাপ সমস্যার সমাধান ওরাই করতে পারবে।’’ মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধান চেয়ে বন দফতরকে চিঠি দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE