এই বাড়ি ভাঙতে গিয়েই বিপত্তি। —নিজস্ব চিত্র
বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙার আইন রয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োগ করবে কে? মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এ নিয়ে যখন বিরোধীরা সরব, তখন লালবাজারের কাছে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের একটি বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বাধার মুখে পড়লেন পুরকর্মীরা। পরে যদিও পুর কমিশনারের ‘এক্সপ্রেস অর্ডার’ নিয়ে ফের তা ভাঙতে যান পুরকর্মীরা। ওই বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভেঙেও দেন তাঁরা।
এর আগে একাধিক জায়গায় পুরকর্মীরা বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙতে সরঞ্জাম নিয়ে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন। এ দিনের মাসিক অধিবেশনে বিরোধীরাপ্রশ্ন তোলেন, আইন প্রয়োগ করতেই যখন এত সমস্যা, তা হলে সেই আইন তৈরি করারই বা কী দরকার ছিল? বিরোধীদের জবাবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেন পুরকর্মীদের ফিরে আসতে হয়েছে, তা খোঁজ নিচ্ছি। শুনেছি ওই বাড়ির বাসিন্দারা বলেছে, নিজেরাই সারিয়ে নেবেন। তাঁদের সময় দেওয়া হয়েছে। তার পরেও যদি বাড়ি না সারানো হয়, তার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যদিও মেয়রের এই যুক্তি মানতে রাজি হননি বিরোধীরা কাউন্সিলররা। তাঁদের বক্তব্য, শহরে প্রায় তিন হাজার বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে একটিও ভাঙা সম্ভব হয়নি। ওই বাড়ি ভেঙে যদি কারও মৃত্যু হয়, তার দায় কে নেবে? বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের ওই বাড়িটিও শতাব্দীপ্রচীন। বাড়ির চারদিকে বিপজ্জনকভাবে ফাটল রয়েছে। তার মধ্যেই বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটেরা রয়েছেন। বাড়ির নীচে রয়েছে অনেক দোকানও। হঠাৎ করে দুর্ঘটনা ঘটলে কে দায় নেবে? বিরোধীদের এই প্রশ্নে মেয়র বলেন, “ইতিমধ্যেই ৫২টি বাড়িতে নোটিস পাঠানো হয়েছে। ১৩টি বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটেদের সঙ্গে কথা চলছে।”
আরও পড়ুন: অন্যেরা পারছে, তবু প্লাস্টিক বন্ধে পা ফেলতে কুণ্ঠা বাংলার
এদিনের পুর অধিবেশনে আরএসপি-র কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায় শহরের বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘‘শহরের বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙা এবং বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের আইন প্রণয়ন হওয়ার পরও, তা প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বর্ষার সময় এই ধরনের বাড়িগুলো ভেঙে পড়ছে। কিছু জায়গায় কঠোর না হলে হবে না।’’
উত্তর কলকাতা, খিদিরপুর, ভবানীপুরেই এই ধরনের বাড়ির সংখ্যা বেশি। কিছু দিন আগেই বৈঠকখানা বাজারে দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে দু’জনের। পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বিধানসভায় বিল পাশ হয়ে বিল্ডিং আইনে ৪১২এ ধারা যুক্ত হয়।
আরও পড়ুন: তালা ভেঙে মশা দমনে ‘না’ কাউন্সিলরদের
কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে অভিযোগ। নতুন ধারায় বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে প্রথমে সুযোগ দেওয়া হবে মালিকপক্ষকে। তিনি রাজি না হলে পুর প্রশাসন টেন্ডার করে কোনও সংস্থাকে বরাত দিতে পারে। ওই সময়ে বাড়ির বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে হবে। বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরি করলে বাড়তি ১০০ শতাংশ ছাড় (এফএআর) দেওয়া হবে বলেও জানায় পুরসভা।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy