প্রতীকী ছবি
বর্ষার বেগ বাড়তেই ছড়াতে শুরু করেছে ডেঙ্গি। উল্টোডাঙা-মানিকতলার খালপাড় এলাকা সংলগ্ন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে গত কয়েক দিনে জনা তিরিশেরও বেশি জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে বলে খবর। ওই এলাকার পুরকর্মীদের দেওয়া তথ্য অনুসারে মূলত ক্যানাল ইস্ট রোড, মুরারিপুকুর রোড এবং হরিশ নিয়োগী রোডে বেশ কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের রক্তপরীক্ষায় জানা গিয়েছে, এনএস-১ পজিটিভ। সংখ্যা কম হলেও ডেঙ্গির সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত পুর প্রশাসনও। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত জানুয়ারি থেকে শহরে ডেঙ্গি পজিটিভের যে তালিকা রয়েছে তাতে ওই ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যাটাই বেশি। পুরসভার হিসেবে, গত সাড়ে ৬ মাসে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ ছাড়ায়নি। পুরসভার টিম নিয়মিত ভাবে কয়েক দিন ধরে ওই ওয়ার্ডে মশা নিধন এবং জমা জল ও জঞ্জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তাতে ওই ওয়ার্ডে ডেঙ্গির সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানালেন পুরসভার এক পতঙ্গবিদ।
সোমবারই মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানিয়েছিলেন, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লেই জল জমা শুরু হয়। তাই ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভার র্যাপিড অ্যাকশন টিমকে সতর্ক করা হয়েছে। কোথাও জল যাতে না জমে সে জন্য লাগাতার প্রচারও চালানো হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডেঙ্গি একেবারে নির্মূল করা যাবে এমন কথা কখনওই বলছি না। তবে ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো আমাদের মূল লক্ষ্য।’’ তিনি জানান, এ বার পুরসভার স্বাস্থ্য এবং জঞ্জাল দফতর যৌথ ভাবে জমা জল ও জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজে নেমেছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি বছর বর্ষার পর থেকেই ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়তে থাকে। তাই বছরের শুরু থেকেই জল জমানোর বিরুদ্ধে ক্রমাগত প্রচার, স্লোগান, লিফলেট বিলির কাজ করেছে পুর প্রশাসন। সপ্তাহে দু’দিন করে প্রতিটি এলাকার কাউন্সিলরদেরও এলাকায় নেমে পুরকর্মীদের সঙ্গে ডেঙ্গি প্রতিরোধের অভিযানে সামিল হওয়ার জন্য লিখিত নির্দেশও পাঠানো হয়েছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরকর্মীদের কথায়, ক্যানাল ইস্ট রোডে একটি বড় সংস্থার নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে ডেঙ্গিবাহী এডিসের লার্ভা মিলেছে। তাঁদের ধারণা ওই নির্মাণস্থল থেকেই ডেঙ্গির সংক্রমণ বেড়েছে। উল্টোডাঙা, মুচিপাড়া এবং বেলেঘাটার কয়েকটি এলাকাতেও জ্বরের খবর মিলছে।
মঙ্গলবার ওই পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভার স্থানীয় বরোয় এক বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ক্যানাল ইস্ট রোডের যে বিল্ডিংয়ে মশার আতুঁড়ঘর গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ, সেই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ আপাতত বন্ধ রাখার নোটিস দেওয়া হবে। বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও কেন জল জমানো হয়েছে তা নিয়েও ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে পুর প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy