Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খাবারে ভেজাল ঠেকাতে তৈরি নয় পুরসভাই

দেশব্যাপী ফুড সেফটি অ্যান্ড স্টান্ডার্ড অ্যাক্ট চালু হওয়ার পরে কলকাতা পুর প্রশাসনও ভেজাল আটকাতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় সরাসরি ফুড সেফটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার দোকান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০২:০৪
Share: Save:

ভাঁড়ারে পর্যাপ্ত টাকা নেই। যেটুকু বা আছে, তা খরচ করার জন্য রাজ্যের অর্থ দফতরের সম্মতি মিলছে না। আর তা না মেলায় আটকে গিয়েছে খাবারে ভেজাল রোখার কাজ। এমনই অবস্থা কলকাতা পুরসভার। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে এ বার খোদ অর্থমন্ত্রীর কাছে দরবার করার কথা ভাবছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরই মনে করছে, কলকাতার মতো বড় শহরে খাবারে ভেজাল রোখার পরিকাঠামো নেই পুর প্রশাসনের। সম্প্রতি তাদের তরফে বিষয়টি রাজ্যের ফুড সেফটি দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ-ও বলে দেওয়া হয়েছে, মূলত লোক এবং যন্ত্রের অভাবের জন্যই ভেজাল রোধে নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। পুরসভার এক কর্তা জানান, ফুড সেফটি লাইসেন্স ফি বাবদ পাওয়া যা টাকা আসে, তা দিয়েই ভেজাল প্রতিরোধের কাজ করা যায়। কিন্তু ওই টাকা খরচে অর্থ দফতরের সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশব্যাপী ফুড সেফটি অ্যান্ড স্টান্ডার্ড অ্যাক্ট চালু হওয়ার পরে কলকাতা পুর প্রশাসনও ভেজাল আটকাতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় সরাসরি ফুড সেফটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার দোকান। গত পুজোর সময় থেকে দফায় দফায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছেন পুরকর্মীরা। ‘প্লাস্টিক ডিম’ থেকে শুরু করে শরবত ও আখের রসে শিল্পে ব্যবহৃত বরফ মেশানো নিয়েও তৎপর হয়েছেন তাঁরা। বিভিন্ন রেস্তোরাঁর হেঁশেলে ঢুকেও অভিযান চলেছে। কোথাও মিলেছে বাসি, ছাতা পড়ে যাওয়া মুরগির ঠ্যাং, কোথাও আবার খাবারে পোকা। কোনও জায়গায় গিয়ে পুরকর্মীরা দেখেছেন, বাসি তেলেই রান্না চলছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভেজাল খাওয়ানোর প্রবণতা রয়েই গিয়েছে।

পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ভেজাল রোধে নিয়মিত অভিযান চালানো জরুরি। কিন্তু সেই লোকবল আমাদের নেই।’’ তিনি জানান, ৩৮ জন ফুড সেফটি অফিসারের জায়গায় আছেন মাত্র ১৪ জন। ১৬টি বরোতে একটা করে পুরসভার দল দরকার। কিন্তু নেই। প্রতি বরোর জন্য নেই গাড়িও। টাকার অভাবে কেনা যাচ্ছে না খাবার পরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রও।

অতীনবাবু জানান, শহরে অনেকেই ফুড লাইসেন্স ছাড়া এত দিন খাবারের দোকান চালিয়ে এসেছেন। তাঁদের ভরসা ছিল শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স। এখন ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করতে এলে বলা হচ্ছে, ফুড লাইসেন্স না নিলে তা দেওয়া হবে না। মেয়র পারিষদ জানান, এতে কিছুটা হলেও কাজ হচ্ছে। ফুড লাইসেন্সের ফি বাবদ টাকা আদায় হচ্ছে। পুরসভার এক আমলা জানান, ফুড লাইসেন্সের ফি বাবদ আদায় হওয়া টাকা রাজ্যের সম্মতি ছাড়া খরচ করা যাবে না। এই নিয়ম কেন্দ্রীয় সরকারেরই। কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে কেন্দ্র পুরসভাকে ওই টাকা খরচের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের সম্মতি না মেলায় আটকে রয়েছে টাকা। সেই জট কাটাতেই রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চায় পুর প্রশাসন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE