পুর কমিশনার খলিল আহমেদ।—ছবি সংগৃহীত।
২০১১ সালের পর থেকে প্রায় হাজার দশেক অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়েছে কলকাতা পুরসভায়! বর্তমানে মোট অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যাই সাড়ে ষোলো হাজার! যে সংখ্যাটা পুরসভার বাইশ হাজার স্থায়ী কর্মীর প্রায় ঘাড়ের কাছে শ্বাস ফেলছে। পুর নথি থেকে পাওয়া এই তথ্য দেখেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগে রাশ টানতে চায় পুর প্রশাসন। এ নিয়ে মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে হবে পুরসভার পার্সোনেল দফতরের মাধ্যমে। পুর দফতরের কর্তাদের সেই নির্দেশ মেনেই কাজ করতে বলা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন বিভিন্ন দফতর তাদের চাহিদা মতো অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করত। ওই দফতরের কোথায় কত কর্মী আছেন, তাঁদের বেতন কোথা থেকে দেওয়া হবে, পুর ভাঁড়ারে বেতন দেওয়ার মতো টাকা রয়েছে কি না, সে সব নিয়ে এত দিন সমীক্ষাই হত না। এখন দেখা যাচ্ছে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্মী অনেক দফতরে আছেন। পুর নথি থেকে জানা গিয়েছে, বর্তমানে পুরসভায় স্থায়ী কর্মচারী ২২ হাজারের মতো। এ দিকে, প্রায় সাড়ে ষোলো হাজার অস্থায়ী কর্মী নিযুক্ত রয়েছে পুরসভার বিভিন্ন দফতরে। সংখ্যাটা এত বাড়ল কেন? পুরমহলের এক পক্ষের মতে, কাউন্সিলর থেকে নেতা-নেত্রী সহ বিধায়ক, সাংসদদের একাংশের সুপারিশে অস্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে জঞ্জাল অপসারণ, ১০০ দিনের কাজের লোক, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা কর্মী-সহ একাধিক দফতরে ঢালাও ভাবে লোক নিয়োগ হয়েছে। পুর নথি অনুযায়ী, এঁদের বেতন দিতে বছরে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা খরচ করে পুরসভা।
এখন প্রশ্ন, আদৌ এত কর্মীর প্রয়োজন আছে কি? একাধিক পুর আধিকারিক জানাচ্ছেন, ২০১১ সালের পরেই পুরসভার কলেবর বৃদ্ধি হয়েছে। ওয়ার্ডের সঙ্গে বেড়েছে পরিষেবার বহর। সে ভাবে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়নি। তাই গত প্রায় আট বছরে দফায় দফায় অস্থায়ী কর্মী নিতে হয়েছে। তবে সেই সংখ্যা সাড়ে ষোলো হাজারে পৌঁছে গিয়েছে শুনেই চোখ কপালে উঠেছে কর্তাদের। এত কর্মী কোথায়, কী কাজ করছে এ বার তার হিসেব রাখতে চায় পুর প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই তথ্য পেতে চায় পুরবোর্ড। মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের অনুমোদনে ওই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
শুধু নতুন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগই নয়, তাঁদের নবীকরণের কাজও এ বার থেকে পার্সোনেল দফতরের মাধ্যমে করা হবে। বেতন দিতে গিয়ে পুরসভার ভাঁড়ারে টান আটকাতে এই পদক্ষেপ। সে সব কিছু ভেবেই নিয়োগ থেকে নবীকরণ। সব ক্ষেত্রেই ওই নির্দেশ অনুসরণ করতে প্রতিটি দফতরের বিভাগীয় প্রধানদের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্দেশ দেওয়া হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy