ফাইল চিত্র।
শহরে জলাভূমি, পুকুর বা জলাশয় থাকলেও সেগুলির অবস্থান নিয়ে ঠিক তথ্য পুরসভার কাছে ছিল না। একটি পুকুরের অবস্থান কোথায় জানতে চাওয়া হলে বলা হত, অমুক মোড়ের পাশের গলিতে বা অমুক পার্কের কাছে। এ ভাবেই সেই পুকুরের অবস্থান চিহ্নিত করা হত এত দিন। এ বার শহরের পুকুর বা জলাশয়ের স্থায়ী অবস্থান চিহ্নিত করতে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ নম্বর। সম্প্রতি পুর প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, সুষ্ঠু সংরক্ষণের জন্য শহরের সব জলাশয়ের অবস্থান-সহ নতুন তথ্যসমৃদ্ধ তালিকা করা হচ্ছে। সেই তালিকায় একটি পুকুর বা জলাশয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে। পুর কমিশনার খলিল আহমেদের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই নির্দিষ্ট নম্বর সংশ্লিষ্ট পুকুরের পাড়ে হোর্ডিংয়ে লিখে রাখা হবে। তাতে শুধু নম্বরই নয়, পুকুরটি কোন বরোর কোন ওয়ার্ডে রয়েছে, রাস্তার নাম, পুকুরের মাপ— এ সব তথ্যও দেওয়া থাকবে। তা ছাড়া, ওই সব জলাশয়ের কোনগুলির সৌন্দর্যায়ন হয়েছে , তার জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে তা-ও লেখা থাকবে সেখানে।
সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন বরোয় প্রশাসনিক বৈঠক চালু করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তেমনই এক বৈঠকে পুকুর বোজানোর প্রসঙ্গ ওঠে। তার পরেই পুকুর বোজানোর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবেই নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমান পদ্ধতিতে কী ব্যবস্থা ছিল? পুরসভার পরিবেশ দফতরের এক অফিসার জানান, পুকুর বুজিয়ে বাড়ি তৈরির অভিযোগ প্রায়ই জমা পড়ে পুরসভায়। সেই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে পুকুরের ঠিক অবস্থান জানা না থাকায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় কর্মী-অফিসারদের। দেখা যায়, যে জায়গায় পুকুর থাকার কথা সেখানে নির্মাণ হয়ে রয়েছে। পুরসভার রেকর্ডে পুকুরের মাপ এক রকম, বাস্তবে অন্য। তাতে তদন্তের রিপোর্টও ঠিক হত না। পুরসভা সূত্রের খবর, টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট বদলে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে আবার কোনও কোনও তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে। এমন নানা অনিয়ম রুখতেই নির্দিষ্ট নম্বরের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে মনে করছেন পুরসভার কর্মী-অফিসারেরা।
আরও আগে এই ব্যবস্থা করা হল না কেন? পুরসভার এক আধিকারিক জানান, এই ধরনের সিদ্ধান্ত পুরবোর্ড নিয়ে থাকে। আগে পুরবোর্ড এমনটা ভাবেনি। তবে পুকুর বোজানো রুখতে পুরসভায় একটি বিশেষ সেল ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। সেই সেলের সঙ্গে যুক্ত অফিসার-ইঞ্জিনিয়ারেরা রোজ সেই কাজ দেখবেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টাই শহরের বিভিন্ন পুকুর বা জলাশয়ের উপরে নজরদারি রাখার ব্যবস্থা হবে। এর জন্য কাজে লাগানো হবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। রাতের দিকে প্রয়োজনে ড্রোন ক্যামেরাও ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কোথাও পুকুর বোজানোর ঘটনা দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুরসভার বিশেষ কমিশনারকে (সাধারণ) জানাতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy