Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সরোবরের বর্জ্য থেকে সার তৈরি করবে কেএমডিএ

কেএমডিএ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে বর্জ্য নিয়ে যে সমীক্ষা হয়েছে তা থেকে জানা গিয়েছে প্রতিদিন প্রায় দেড় টনের কাছাকাছি জৈব বর্জ্য তৈরি হয়। ফলে, এক মাসে এই বর্জ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০ টন।

রবীন্দ্র সরোবর।—ফাইল চিত্র।

রবীন্দ্র সরোবর।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০৯
Share: Save:

বর্জ্য হিসেবে জলের কচুরিপানা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে গাছের পাতা সংগ্রহ করা হয়। ওই বর্জ্য ফেলে না দিয়ে রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে সে সব পুনর্ব্যবহারের জন্য জৈব সার তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করা হয়েছে। এমনকি, ওই প্রকল্পের জন্যও যৌথ সমীক্ষাও করা হয়েছে। দ্রুত এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে নির্দেশ দিয়েছেন নগরোন্ননয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রবীন্দ্র সরোবরে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতেই শনিবার কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়।

কেএমডিএ-র আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন,‘‘প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বেসরকারি সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। এই প্রকল্পের জন্য খরচ ধার্য করা হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। কী ভাবে ওই কাজ করা হবে তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনা হবে।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে বর্জ্য নিয়ে যে সমীক্ষা হয়েছে তা থেকে জানা গিয়েছে প্রতিদিন প্রায় দেড় টনের কাছাকাছি জৈব বর্জ্য তৈরি হয়। ফলে, এক মাসে এই বর্জ্যের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০ টন। এই বর্জ্যের মধ্যে শুকনো পাতা ছাড়াও জলজ উদ্ভিদ, কচুরিপানা, গাছের ভাঙা ডাল এবং ঘাস রয়েছে। যে পরিমাণ বর্জ্য প্রতিনিয়ত তৈরি হয়, তা থেকে ৩০ শতাংশ জৈব সার তৈরি করা যেতে পারে বলে প্রাথমিক সমীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গাছের ডালপাতা এবং জলজ উদ্ভিদ থেকে যে সার তৈরি হবে তাতে নাইট্রোজেন, পটাশিয়াম এবং ফসফেটের পরিমাণ কম থাকে। সেই সার কাজের উপযোগী করে তুলতে তার মধ্যে নির্দিষ্ট হারে নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশিয়ামের (এন পি কে) হার বাড়ানোর প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, কী ভাবে এই সারে নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশিয়ামের মান বাড়ানো যাবে সেই ব্যাপারেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে।

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বর্তমানে যে বর্জ্য তৈরি হয় তা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে কর্মী ছাড়াও প্রয়োজন হয় অর্থের। কোনও কোনও সময়ে লোকাভাবে এলাকা অপরিষ্কার থাকারও অভিযোগ এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ভাবা হয়েছিল, বর্জ্য পদার্থ সরানোর পরিবর্তে সেগুলি সরোবর চত্বরের এক পাশে রেখে সেখানে সার তৈরি করা হবে। এই সারের একাংশ সরোবরের উদ্যানের গাছ বা ফুলের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবহার করা ছাড়াও বাইরে বিক্রি করলে কেএমডিএ সামান্য হলেও অর্থ উপার্জন করতে পারবে। ফলে, সরকারি সংস্থারও আর্থিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

সমীক্ষার ভিত্তিতেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ৩০ শতাংশ সার প্রতি কিলোগ্রাম ৫ টাকা করে পাইকারি বাজারে বিক্রি করা যাবে। এ ছাড়াও সরোবরের কাউন্টার থেকে সরাসরি ওই সার কিলোগ্রাম প্রতি ২০ টাকা করে কেনা যাবে। কেএমডিএ পরিচালিত অন্যান্য পার্ক বা উদ্যান থেকেও এই সার বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMDA Rabindra Sarobar Fertilizer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE