Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ডুবছে রবীন্দ্র সরোবরের দ্বীপ, বাঁচাতে ফের সমীক্ষা

মাটি দিয়ে জলাশয়ের মধ্যে নির্মিত ওই কৃত্রিম দ্বীপগুলি ক্রমশ তলিয়ে যাওয়ার জেরে দ্বীপের যাবতীয় গাছপালাও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কেএমডিএ-র এক আধিকারিক।

ডুবন্ত: রবীন্দ্র সরোবরের এই কৃত্রিম দ্বীপগুলি নিয়েই এখন চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র

ডুবন্ত: রবীন্দ্র সরোবরের এই কৃত্রিম দ্বীপগুলি নিয়েই এখন চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। নিজস্ব চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৯
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবরের সব ক’টি দ্বীপ ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ওই দ্বীপগুলির বর্তমান অবস্থা নিয়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে সেখানে সেগুলিকে ‘ডুবন্ত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরেই ওই দ্বীপগুলি কী ভাবে বাঁচানো সম্ভব তা নিয়ে ফের সমীক্ষার জন্য বটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে কেএমডিএ।

মাটি দিয়ে জলাশয়ের মধ্যে নির্মিত ওই কৃত্রিম দ্বীপগুলি ক্রমশ তলিয়ে যাওয়ার জেরে দ্বীপের যাবতীয় গাছপালাও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কেএমডিএ-র এক আধিকারিক। দ্বীপগুলি নষ্ট হয়ে গেলে এই জাতীয় সরোবরের সৌন্দর্যায়ন ছাড়াও এলাকার সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। সেই কারণে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ফের সমীক্ষা করিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওই আধিকারিক।

বটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানী ওঙ্কারনাথ মৌর্য বলেন, ‘‘মাটি ক্ষয়ে যাওয়ার ফলেই দ্বীপগুলি ডুবে যাচ্ছে। কী কী গাছ রয়েছে এবং সেগুলি কী ভাবে বাঁচানো যায়, তার জন্য ফের সমীক্ষার প্রয়োজন। মাটি ধরে রাখতে পারে এমন কিছু গাছ পোঁতা প্রয়োজন।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, ১৯২০ সাল নাগাদ শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য রবীন্দ্র সরোবর কাটার কাজ শুরু হয়। তৎকালীন কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ (কেআইটি) এই কাজ করেছিল। সেই সময়েই সরোবরের মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হয়। সরোবরে আপাতত ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচটি দ্বীপ রয়েছে।

দ্বীপের গাছে বাস করে নানা ধরনের পাখিও। ওই দ্বীপগুলিতে হরিণ বা অন্য প্রাণী রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বন দফতরের অনুমতি না মেলায় তা বানচাল হয়ে যায়।

কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা ছাড়াও রাজ্য বন দফতর, জ়ুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া, বটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দ্বীপগুলির বর্তমান অবস্থার সমীক্ষা করা হয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আগে বেশি বৃষ্টিতেও সরোবরের জল দ্বীপে উঠত না। কিন্তু এখন অল্প বৃষ্টিতেই দ্বীপগুলিতে জল উঠে যাচ্ছে। কিছু দিন আগে পরিবেশ আদালতের তরফেও দ্বীপগুলির সংরক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত দ্বীপের ক্ষয় রোধ করতে সেগুলির চারপাশে শালবল্লা দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে মাটিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। এই অবস্থায় মাটি ধরে রাখার জন্য কয়েকটি বিশেষ প্রজাতির গাছ পোঁতার পরিকল্পনা হয়েছে। বটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার নতুন সমীক্ষার রিপোর্ট পেলে পুজোর পরেই কাজ শুরু করা হবে বলেও কেএমডিএ-র তরফে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindra Sarobar KMDA Botanical Survey of India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE