আবর্জনা, জমা জলে মশার আঁতুড়ঘর লেক টাউন। নিজস্ব চিত্র
গত এক মাসে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন ১৬ জনের রক্তের নমুনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস (নাইসেড)-এ পাঠিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, সকলের রক্তেই ডেঙ্গ ২-এর জীবাণু মিলেছে। ওই রিপোর্টের পর থেকে শহরে ডেঙ্গ ২ ভাইরাস উদ্বেগ বাড়িয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের। সেই প্রেক্ষিতে এ বার ডেঙ্গ ২ ভাইরাসের আক্রমণ কী ভাবে চিহ্নিত হতে পারে, অর্থাৎ ভাইরাসের টাইপ (সেরোটাইপ) জানার পরিকাঠামো গড়তে উদ্যোগী হল পুর প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা এবং বরোর স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গ ২ ভাইরাস সময়ে চিহ্নিত করতে না পারলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই শরীরে ওই ভাইরাস ঢুকেছে কি না, তা দ্রুত জানা দরকার। সে কারণেই ডেঙ্গির ধরন জানা আরও জরুরি। এক বার তা জানা গেলে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, অগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এমন ১৬ জনের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিল নাইসেডে। তাঁরা সকলেই তিন নম্বর বরো এলাকার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আপাতত তাঁরা ভাল আছেন। যদিও ডেঙ্গিতে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে পুর প্রশাসনের। সম্প্রতি তিন জন মারা গিয়েছেন এই রোগে। এক জন উল্টোডাঙার ঝুমা অধিকারী এবং অন্য জন যাদবপুরের লোটাস পার্কের মৌ মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়া মধ্য কলকাতার সূর্য সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা শীর্ষেন্দু ঘোষের
মৃত্যুও ভাবাচ্ছে পুরসভাকে। কারণ, শীর্ষেন্দুর রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই।
তবে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত সারা রাজ্যে কত জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কারণ, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তা ঘোষণা করার অধিকার রয়েছে শুধু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গঠিত বিশেষ কমিটির। তবুও শহরে তিন জনের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘নথি দেখে জানা গিয়েছে, তিন জনেরই এনএস-১ পজিটিভ ছিল। সে সব কাগজ স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে।’’ অর্থাৎ ডেঙ্গিতেই যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই ইঙ্গিত মিলেছে পুরসভার তরফে।
পুরসভা সূত্রের খবর, জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১০৫০। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ওয়ার্ডগুলি হল ৬, ১৪, ৩৬, ৪৭, ৭৪, ৮১, ৮২, ১০৮ এবং ১০৯। শুধু উল্টোডাঙার মানিকতলা খালের পাশেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত ৯৬ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তবে সকলেই ভাল আছেন। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, ডেঙ্গ ২ ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এনএস-১ পরীক্ষা করানোর আবেদন জানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। যাতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কেউ সময় নষ্ট না করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy