Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিকে হারিয়ে শেষ রবিবারে জয়ী ক্রেতা

শহরের শপিং মলগুলির পাশাপাশি এ দিন সব থেকে বেশি ভিড় দেখা গেল ধর্মতলায়। বরাবরের কেনাকাটার ক্ষেত্র হিসেবে এ দিন দুপুর থেকেই সেখানে ক্রেতার ঢল নামে। জওহরলাল নেহরু, চৌরঙ্গি রোড হয়ে সন্ধ্যার পরে ধর্মতলার রাস্তায় প্রায় চলাই দায়।

ঢল:  ভিড় নিয়ন্ত্রণের দড়ি সরিয়েই জনজোয়ার নিউ মার্কেট চত্বরে।

ঢল: ভিড় নিয়ন্ত্রণের দড়ি সরিয়েই জনজোয়ার নিউ মার্কেট চত্বরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

পুজোর আগের শেষ রবিবার। পুজোর বাজারের ফাইনাল হিসেবে ধরা হয়েছিল দিনটি। ফাইনাল শুরুর প্রথম ১৫ মিনিট যদি হয় বৃষ্টির দখলে, বাকিটা অবশ্যই ক্রেতাদের। বৃষ্টির ভ্রূকুটিকে অন্তত ডজনখানেক গোলে হারিয়ে ভিড় উপচে পড়ল শহরের বাজারগুলিতে। দিনভর ঘুরপাক খেল একটিই মন্ত্র, ‘‘আর সময় নেই। দ্রুত বেছে নিতে হবে ভালটা।’’

শহরের শপিং মলগুলির পাশাপাশি এ দিন সব থেকে বেশি ভিড় দেখা গেল ধর্মতলায়। বরাবরের কেনাকাটার ক্ষেত্র হিসেবে এ দিন দুপুর থেকেই সেখানে ক্রেতার ঢল নামে। জওহরলাল নেহরু, চৌরঙ্গি রোড হয়ে সন্ধ্যার পরে ধর্মতলার রাস্তায় প্রায় চলাই দায়। সেখানেই বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে এসেছিলেন দমদমের স্নেহা পাল। বললেন, ‘‘বাবা এই ভিড়ে পারছেন না। মনে হচ্ছে বেরিয়ে গেলে ভাল হত। কিন্তু কিছু করারও নেই। আর তো আসা যাবে না।’’ ঘড়ি ধরে সময় দেখে ছুটে বেড়াচ্ছেন ব্যারাকপুরের সমীর হালদারও। স্ত্রী, কন্যাকে নিয়ে একটি পোশাকের দোকানে ঢোকার আগে তিনি বলেন, ‘‘চার ঘণ্টায় সবে পাঁচটা জিনিস কেনা হয়েছে। এত ভিড় হবে ভাবিনি।’’

ধর্মতলায় এ দিন এতটা ভিড় হবে হয়তো আন্দাজ করেনি পুলিশও। তবু তাদের তরফে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল বলে দাবি নিউ মার্কেট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকের। তিনি জানান, ধর্মতলার মোড়ে কোনও গাড়িকেই এ দিন দাঁড়াতে দেওয়া

হয়নি। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ধর্মতলার মোড় থেকে ট্যাক্সি ধরাও এ দিন সম্পূর্ণ বন্ধ। তবে এর মধ্যেই বিপদের আশঙ্কা বাড়াল যাত্রী পারাপারের জন্য ধর্মতলার মোড়ে লাগানো ট্র্যাফিকের দড়ি। ওই দড়িতে ছাতা আটকে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলেন এক মহিলা। প্রবল বিরক্ত হয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বৃষ্টিও আর হল না, অথচ ছাতাটা অকারণ নিয়ে বইতে হল। এত দড়ি ধরারই বা কী আছে কে জানে?’’

ভিড় সামলানোর বাড়তি ব্যবস্থা দেখা গেল গড়িয়াহাটেও। সিভিক ভলান্টিয়ারদের সরিয়ে সেখানে দুপুর থেকেই ফুটপাত সামলেছেন পুলিশকর্মীরা। এর মধ্যেই দেখা গেল, এক ধাক্কায় গড়িয়াহাটের পার্কিংয়ের খরচ বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। বেআইনি পার্কিং নিয়ে পুরসভার অভিযানের পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। পার্কিংয়ের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী আবার বললেন, ‘‘পুজোর আগের শেষ রবিবার, আজও দশ-কুড়ি টাকা বেশি না নিলে চলে!’’ এ সবে অবশ্য মন নেই ক্রেতাদের। প্রবল ভিড়ের মধ্যে মানিকতলার শম্পা হাজরা দাবি করলেন, ‘‘গড়িয়াহাটে না এলে পুজোর বাজার শেষ হয় না। গত সপ্তাহেও এসেছিলাম। শাড়ির সঙ্গে পরার মতো গয়না কিনতে আজ আবার আসতে হল।’’

দাপটে ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত এক ব্যাগের দোকানের মালিক শান্তনু হাজরা বললেন, ‘‘বৃষ্টি হলেও আজ কিছু হত না। পুজোয় পুরনো পোশাক পরার থেকে বৃষ্টিতে ভিজে কেনাকাটা করা ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Durga Puja Durga Puja Marketing Shopping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE