Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

দূষণে দিল্লিকে হারাল কলকাতা

দীপাবলির পরবর্তী এক সপ্তাহের দূষণে দিল্লিকেও ছাপিয়ে গেল কলকাতা! এমনিতেই কলকাতায় এ বছরের দীপাবলি সাম্প্রতিক সময়ের সব চেয়ে ‘দূষিত’ বলে জানিয়েছিলেন পরিবেশ গবেষক ও পরিবেশকর্মীদের একাংশ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্যও তেমনটাই বলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১০
Share: Save:

দীপাবলির পরবর্তী এক সপ্তাহের দূষণে দিল্লিকেও ছাপিয়ে গেল কলকাতা! এমনিতেই কলকাতায় এ বছরের দীপাবলি সাম্প্রতিক সময়ের সব চেয়ে ‘দূষিত’ বলে জানিয়েছিলেন পরিবেশ গবেষক ও পরিবেশকর্মীদের একাংশ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্যও তেমনটাই বলেছে।

গত ৭ নভেম্বর ছিল দীপাবলি। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, তার পরের সাত দিনে বাতাসের মানের সামান্যতম উন্নতিও হয়নি। এখন কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় বাতাসের গুণমানের সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স) নির্ভর করে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা (পিএম ১০) ও ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) উপরে।

গত ৮ নভেম্বর রাত ১১টায় বিটি রোডের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা এবং ময়দানের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটারে ৪৬১.০৩ মাইক্রোগ্রাম এবং ২৪৫.৯১ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ২৮৩.৪৭ ও ১৬৩.৪৫ মাইক্রোগ্রাম। তার পরের দিন, অর্থাৎ ৯ নভেম্বর সেই মাত্রা বেড়ে যায়। সে দিন রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৭০১.০৩ ও ২৫৩.৩ মাইক্রোগ্রাম। ওই দুই এলাকায় পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩৭৩.৯৩ এবং ১৭২.৪ মাইক্রোগ্রাম। ১২ নভেম্বর, অর্থাৎ গত সোমবার সেই মাত্রা শীর্ষে ওঠে। রবীন্দ্রভারতী এলাকায় সে দিন প্রতি ঘনমিটারে পিএম ১০-এর উপস্থিতি ছিল ১২৪৪.২৩ মাইক্রোগ্রাম!

আরও পড়ুন: সফল বদল হৃদ্‌যন্ত্রের, আত্মবিশ্বাসী মেডিক্যাল

কলকাতার যেখানে এমন হাল, সেখানে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, দিল্লির আনন্দবিহার এলাকায় দীপাবলির পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে ৯ নভেম্বর বাতাসে পিএম ১০-এর পরিমাণ ছিল সর্বাধিক, ৭২২.০৫ মাইক্রোগ্রাম। সে দিন ওই এলাকায় প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ৫০৩.৯১ মাইক্রোগ্রাম।

চলতি সপ্তাহের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত মঙ্গলবার রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া এলাকায় পিএম ১০ এবং পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৬৪১.২ এবং ৩৩১.৬৩ মাইক্রোগ্রাম। পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল ৪১১.১ এবং ১৯৮.৪৭ মাইক্রোগ্রাম। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বলছে, সেদিনও দিল্লি দূষণে পিছিয়ে। কারণ, আনন্দবিহার এলাকায় পিএম ১০-এর উপস্থিতি ছিল ৬৩১.৫৯ মাইক্রোগ্রাম।

শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কারণ, সে দিন রবীন্দ্রভারতী ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় পিএম ১০-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৪৮৫ ও ২৩১.১৭। পিএম ২.৫-এর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ২২৪.১ এবং ১২৮.৯৭। তবে রবিবার দিল্লির থেকে কলকাতার দূষণ কমই ছিল।

কিন্তু দিল্লিকে প্রায়ই দূষণে কলকাতা ছাপিয়ে যাচ্ছে কেন?

পরিবেশ গবেষকদের একাংশের বক্তব্য, দূষণের নিত্যনতুন উৎস বার হচ্ছে। কালীপুজো বা ছটপুজোয় আতসবাজির দাপট এবং যানবাহনের দূষণ তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে জঞ্জালের স্তূপে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া। বিশেষ করে শীতকালে যত্রতত্র এই ঘটনা চোখে পড়ছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘‘দিল্লি ও কলকাতার বাতাসের মানের পার্থক্য খুব একটা বেশি ছিল না। যে নিয়মগুলো নিজেরাই মানা যায়, সেগুলোই মানা হচ্ছে না। তাতেই এই অবস্থা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Air Pollution KOlkata Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE