Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সোনিকা-মৃত্যু মামলায় গতি আনতে নির্দেশ

গত বছর ২৯ এপ্রিল টালিগঞ্জ থানার রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সোনিকার।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি ফেরত পেলেন বিক্রম। বুধবার। (ইনসেটে) বিক্রম এবং সোনিকা। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি ফেরত পেলেন বিক্রম। বুধবার। (ইনসেটে) বিক্রম এবং সোনিকা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০১
Share: Save:

মডেল অভিনেত্রী সোনিকা সিংহ চৌহানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার সমস্ত নথি এক মাসের মধ্যে আলিপুর দায়রা আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছর ২৯ এপ্রিল টালিগঞ্জ থানার রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সোনিকার। ঘটনায় তাঁর বন্ধু তথা অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। বিক্রমই চালকের আসনে ছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ। ডিসেম্বরে আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক দশ লক্ষ টাকার বন্ডে গাড়ি ফেরতের নির্দেশ দেন। তার প্রেক্ষিতে এ দিন টালিগঞ্জ থানা থেকে বিক্রম গাড়িটি ফেরত পেয়েছেন বলে তাঁর আইনজীবী জানান।

মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গত জুলাইয়ে চার্জশিট পেশ হয় বলে পুলিশ জানায়। তার পরেও চার্জ গঠন ও বিচার শুরু না হওয়ায় সম্প্রতি হাইকোর্টে মামলা করেন সোনিকার বাবা বিজয় সিংহ চৌহান। তাঁর আইনজীবী সঞ্জয় বসু ও সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মামলার আবেদনে বলা হয় বিক্রম তাঁর আইনজীবী মারফত নিম্ন আদালতে নানা অজুহাত দেখিয়ে চার্জ গঠন ঠেকিয়ে রাখছেন। ফলে বিচার শুরু হচ্ছে না। অবিলম্বে মামলার নথি দায়রা আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিক হাইকোর্ট।

এ দিন সেই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি দে-র আদালতে। আবেদনকারীর অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের কী বক্তব্য, সরকারি কৌঁসুলি শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় ও অয়ন বসুর কাছে তা জানতে চান বিচারপতি। সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, বিক্রম জামিনে থাকলেও নিম্ন আদালতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আবেদন করছেন। কখনও তিনি বলছেন, মামলার সব নথি পুলিশ দেয়নি। কখনও বলছেন, অনেক নথি পড়া যাচ্ছে না। সিসিটিভি ফুটেজ বা দুর্ঘটনাস্থলের নকশা মেলেনি, সেই অভিযোগও করছেন। কিন্তু অভিযুক্ত পক্ষকে ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে সব নথি দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ‘ক্র্যাশ ডেটা’-ও (কত জোরে গাড়ি চলছিল ইত্যাদি) দেওয়া হয়েছে। পুলিশ গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছিল। গাড়ি ফেরত চেয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিলেন অভিযুক্ত। নিম্ন আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছে। সরকারি কৌঁসুলিদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি ওই নির্দেশ দেন।

শাশ্বতগোপালবাবু পরে জানান, ফৌজদারি বিধি অনুযায়ী চার্জশিটে যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এমন ধারা দেওয়া হয় যেটি বিচার করার ক্ষমতা দায়রা আদালতের বিচারকের, তা হলে সেই মামলা পাঠাতে হয় দায়রা আদালতে। এ ক্ষেত্রে মামলাটি এখনও মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতেই আছে।

বিক্রমের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা এ দিন জানান, অক্টোবরে গাড়ি ও লাইসেন্স ফেরত চেয়ে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করেছিলেন তাঁর মক্কেল। ম্যাজিস্ট্রেট লাইসেন্স ফেরতের নির্দেশ দিলেও গাড়ি ফেরত দেননি। নভেম্বরে আলিপুর জেলা ও দায়রা আদালতে গাড়ি ফেরত চেয়ে আবেদন করা হয়। পরের মাসে বিচারক দশ লক্ষ টাকার বন্ডে গাড়ি ফেরতের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জানিয়ে দেন, কোনও অবস্থাতেই গাড়ির মূল যন্ত্রাংশ (ইঞ্জিন ইত্যাদি) বদলানো যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE