ঝকঝকে: ধুলো প্রায় নেই, বইমেলায় স্বস্তিতে মানুষ। সল্টলেকে। —নিজস্ব চিত্র।
ধুলোর শাপমুক্তি ঘটেছে এ বারের বইমেলায়! এমনটাই মানছেন বইপ্রেমী থেকে প্রকাশক সকলে।
প্রতি বছরই বইমেলা প্রাঙ্গণে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। কাউকে দেখা যায়, রুমাল ঢেকে হাঁটছেন, কেউ বা মাস্ক ব্যবহার করছেন। ধুলো আটকাতে মাঝেমধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে জল দিয়ে ধুইয়ে দেওয়া হত এত দিন। ফলে অনেক জায়গায়ই কাদা কাদা হয়ে যেত।
এই ছবিতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন বইপ্রেমীরা। তবে এ বার সল্টলেকে করুণাময়ী মোড়ের কাছে স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণে ধুলোর অত্যাচার অনেকটাই কমেছে বলে মানছে সব মহল। মানছেন মেলায় আসা বইপ্রেমীরাও। উদ্যোক্তাদের দাবি, দূষণ এ বারে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। যদিও দূষণ মাপার কোনও যন্ত্র চোখে পড়েনি কোথাও। কিন্তু মেলায় ঢুকলেই তা অনুভব করা যাচ্ছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।
বেলঘরিয়া থেকে নিয়মিত মেলায় যাচ্ছেন দেবাশিস সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘মিলনমেলা প্রাঙ্গণেও ধুলোর সমস্যা ছিল। সল্টলেকেও তাই হবে ভেবেছিলাম। মাস্কও সঙ্গে এনেছিলাম। প্রয়োজন হয়নি।’’ ধুলোর ছবিটা বদলানোয় খুশি গড়িয়াবাসী সুমনা ঘোষ। তিনি জানান, কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন বইমেলায় যাচ্ছেন। পায়ে পায়ে ধুলো হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তা আটকাতে উদ্যোক্তারা যে ভাবে কাজ করেছেন তা প্রশংসার।
প্রতি বছর ধুলোর জন্য বইপ্রেমীদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েন প্রকাশকেরা। বই থেকে ধুলো সাফ করা এবং ধুলো মেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টলে বসে থাকাও ভীষণ কষ্টকর, বলছেন তাঁরা। অনেকেরই মত, এ বারে কিন্তু সেই সমস্যা মিটেছে। এ বছর বইমেলার দুই প্রান্তে দু’টি ফাঁকা জায়গায় খাবারের স্টলগুলিকে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। বিক্রেতাদের মতে, ধুলো থেকে খাবার আড়াল করতে নাকানি-চোবানি খেতে হত। সেই পরিস্থিতি নেই। যদিও প্রথম কয়েক দিন স্টল তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় ধুলোর সমস্যা ছিল। পুরোদমে বইমেলা চালু হওয়ার পরে সেই সমস্যা কেটে যায়।
কী ভাবে এই পরিবর্তন?
বিধাননগর পুরসভা সূত্রে খবর, বইমেলার জন্য এ বার স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণের পাশেই অতিরিক্ত আড়াই একর জায়গা মিলেছিল। ফলে মেলার পরিসর বেড়েছে। ধুলোর বিষয়টি প্রশাসনের প্রথম থেকেই বিবেচনায় ছিল। স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণে হাঁটাচলার পথ তৈরি করাই রয়েছে। বাড়তি আড়াই একর জায়গা ইট দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। তার উপরে রং করা হয়েছে। এমনিতেই বাকি মেলা প্রাঙ্গণে পিচের রাস্তা রয়েছে। পুরসভার দাবি, এতেই ধুলোর দাপট কমেছে। এখানেই শেষ নয়। আধুনিক সাফাইযন্ত্র এবং অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে প্রতিদিন তিন বার করে বইমেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (বর্জ্য অপসারণ) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘এ বার মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার রাখায় জোর দেওয়া হয়েছে। ধুলো নিয়ে এখনও অভিযোগ নেই।’’
বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশুশেখর দে বলেন, ‘‘প্রশাসনকে অজস্র ধন্যবাদ। মেলা প্রাঙ্গণের রাস্তায় রাতারাতি ইট বসিয়ে ধুলো মুক্ত করা হয়েছে। আগামী দিনে অন্যত্র বইমেলা হলেও এ ভাবেই ধুলোর দূষণ কমানোর চেষ্টা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy