Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

সিলেটের সাধুহাটি গ্রামে তাঁর জন্ম, পিতা-মাতা দীননাথ ও তারাসুন্দরী। অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন ছাত্রাবস্থায়, কলেজে সতীর্থদের মধ্যে ছিলেন সজনীকান্ত দাস গোপাল হালদার প্রমুখ।

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

স্বামী গম্ভীরানন্দ স্মরণে

বারাণসীতে উপস্থিত হয়েছিলেন যুবকটি, ১৯২৩, অভিপ্রায় রামকৃষ্ণ সঙ্ঘে যোগদান। তখন অপরিচিত কাউকে রাখার নিয়ম ছিল না, সে কথা যুবকটিকে জানিয়ে অধ্যক্ষ বললেন, ‘‘বরং তুমি বেলুড় মঠে যাও।’’ যুবকটির সপ্রতিভ উত্তর: ‘‘আপনি কি আমায় দয়া করে একটি পরিচয়পত্র দেবেন?... যদি আপনি লিখে দেন যে আমি স্বামী জগদানন্দজীর সন্ধানে কাশীতে এসেছিলাম।’’ রাজি হয়ে গেলেন অধ্যক্ষ। প্রত্যুৎপন্নমতি এই সৌম্য যুবকটিই স্বামী গম্ভীরানন্দ, পরবর্তী কালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের একাদশ অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। স্বামীজির (১৮৯৯-১৯৮৮) পূর্বাশ্রমের নাম যতীন্দ্রনাথ দত্ত। সিলেটের সাধুহাটি গ্রামে তাঁর জন্ম, পিতা-মাতা দীননাথ ও তারাসুন্দরী। অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন ছাত্রাবস্থায়, কলেজে সতীর্থদের মধ্যে ছিলেন সজনীকান্ত দাস গোপাল হালদার প্রমুখ। পারঙ্গম ছিলেন খেলাধুলায়ও। চাকরিসূত্রে রেঙ্গুনে থাকাকালীন স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে প্রাণিত হয়ে ওঠেন সন্ন্যাসধর্ম গ্রহণে। সেখানে সামরিক বিভাগের কর্মী হিসাবে রপ্ত করেন শৃঙ্খলাপরায়ণতা, দায়িত্ববোধ। মনের মধ্যে তখন দেশপ্রেম, সঙ্গে নিরন্তর স্বামীজির বই পড়া, নির্জন বাড়ির ছাদে বসে নক্ষত্রখচিত আকাশের দিকে তাকালে অজানা লোকের হাতছানি... সঙ্কল্প নিলেন সংসার ত্যাগের। যখন তিনি বেলুড় মঠে আসেন, সঙ্ঘাধ্যক্ষ স্বামী শিবানন্দ— মহাপুরুষ মহারাজের কাছেই তাঁর ব্রহ্মচর্য, মন্ত্রদীক্ষা ও সন্ন্যাস লাভ, এবং দেওঘর বিদ্যাপীঠে ১৯২৩-৩৫ অবধি তিনি প্রথমে কর্মী, পরে প্রধান শিক্ষক, শেষে অধ্যক্ষ। ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, অধ্যক্ষ ছিলেন মায়াবতী আশ্রমের। দার্শনিক ও চিন্তাশীল এই সন্ন্যাসী বহুবিধ প্রবন্ধ রচনা করেছেন শ্রীরামকৃষ্ণ-শ্রীমা-স্বামীজির ভাবাদর্শ বিষয়ে। লিখেছেন মেয়েদের অধ্যাত্মচর্চার অধিকার, ধর্মের বিচার-অবিচার প্রসঙ্গেও। তাঁর অগ্রন্থিত ইংরেজি রচনার সংকলন স্বামী গম্ভীরানন্দ: হিজ় রাইটিংস অ্যান্ড লেকচার্স (সূত্রধর) প্রকাশ করবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। ১১ অগস্ট বিকেল ৫টায় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির, বেলুড় মঠ-এর বিবেকানন্দ সভাগৃহে। সঙ্গে স্বামী গম্ভীরানন্দ স্মারক আলোচনায় থাকবেন স্বামী দেবরাজানন্দ, স্বামী বিমলাত্মানন্দ, স্বামী নিরন্তরানন্দ। প্রাককথনে স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ। ভক্তিসঙ্গীতে স্বামী একচিত্তানন্দ। আয়োজনে সূত্রধর। ছবি অদ্বৈত আশ্রমের সৌজন্যে।

সূচিশিল্প

এলগিন রোডে পর্বতারোহী জগন্নাথ দত্তের একান্নবর্তী পরিবারে থাকতেন তাঁর দূর সম্পর্কের বাল্যবিধবা পিসিমা শৈলবালা। পুঁথিগত শিক্ষা তেমন না থাকলেও সেলাই ফোঁড়াইয়ে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ১৯৪১-এ রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণে তিনি স্বরচিত কবিতায় চিত্র গাঁথলেন কাপড়ে শাড়ির পাড়ের সুতোয়: ‘‘একদিন এসেছিলে/ এ ধরার কোলে/ সকলেরে তুষেছিলে সুমধুর বোলে/ এই সব মধু স্মৃতি পাশরিয়া তুমি/ কেন কবি চলে গেলে ছাড়ি জন্মভূমি/ তোমারে বিদায় দিতে কাঁদে বঙ্গমাতা/ পাখীরা গাহেনা গান স্থির বনলতা/ পেয়েছিনু তোমা কবি কত পূণ্যফলে/ কাঁদিছে পরাণ তাই ভাসি অশ্রু জলে/ দেখিনি তোমারে কভু শুনেছি ও নাম/ সাধ জাগে শ্রদ্ধা দিতে নেবে কি প্রনাম/ শৈল’’ (বানান অপরিবর্তিত)। পরিবারে সযত্নে সংরক্ষিত, ত্রিশ বছর আগে প্রয়াত শৈলবালার সেই অসামান্য শিল্পকর্ম এ বার গোচরে এল বিশিষ্ট সংগ্রাহক পরিমল রায়ের সৌজন্যে।

শতবর্ষে

এখন যে সব বাঙালির বয়স ষাট পেরিয়েছে, এবং সত্যিকারের বাংলা গানে রুচি আছে, তাঁদের সাংস্কৃতিক অবচেতনে ধরা আছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জাদুকণ্ঠের একটি গান: ‘‘শান্ত নদীটি, পটে আঁকা ছবিটি’’। বাস্তবিক, কথায়-সুরে-গায়নে মিলেমিশে ১৯৫৩ সালে রেকর্ড করা ওই গান প্রায় রাবীন্দ্রিক উচ্চতা স্পর্শ করেছিল বললে অত্যুক্তি হয় না। সেই কথা আর সুরের স্রষ্টা পরেশ ধর (১৯১৮-২০০২)। হেদুয়ার পুকুরের ধারে বসে কালোয়াতি সঙ্গীতের এই ওস্তাদ বাঁশি বাজিয়ে শোনাতেন বাল্যবন্ধু মান্না দে-কে। কিন্তু তাঁর মন পড়ে থাকত মানুষের সংগ্রামের দিকে। তাই সঙ্গীত-বাণিজ্যে মন না দিয়ে দীক্ষা নেন মার্ক্সবাদে। রচনা করেন বহু গণসঙ্গীত। একই সঙ্গে তাঁর শিক্ষিত মন প্রকৃত গণ-সংস্কৃতি কাকে বলে সেই তাত্ত্বিক প্রশ্নে উত্তাল ছিল। সত্তর দশকের বহু বিপ্লবী পত্রপত্রিকায়, এমনকি সমর সেনের ‘ফ্রন্টিয়ার’ কাগজে তার নমুনা ধরা আছে। ৯ অগস্ট বিকেল পাঁচটায় বই-চিত্র সভাঘরে এই বহুকর্মা মানুষটির শততম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবে মেঘমন্দ্র ও গণবিষাণ সংস্থা। বলবেন দেবব্রত পাণ্ডা। গান গাইবেন সীমা দাস, বিমল দে, শ্যামল চক্রবর্তী।

সম্মানিত

বাংলা লোকগানের দুনিয়ায় তিনি কিংবদন্তি। ছাত্রদের তিনি শেখান, অঞ্চল ভেদে কী ভাবে বদলে যায় গানের চলন, লয়, উচ্চারণ। পেয়েছেন বহু পুরস্কার। অমর পালকে আরও এক বার সম্মান জানাল কলকাতার পরিচিত সঙ্গীত চর্চাকেন্দ্র ‘সৌম্য অ্যাকাডেমি’। গুরুপূর্ণিমার দিন অ্যাকাডেমির ছাত্ররা গানে সুরে ভরিয়ে দিলেন প্রবীণ এই গায়ককে। ১৯২২ সালে ও পার বাংলায় জন্ম অমর পালের। মৌলিক অ্যালবাম ছাড়াও তিনি গেয়েছেন বহু ছবিতে। তবে ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমায় তাঁর গলায় ‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়’ এখনও মুগ্ধ করে বাঙালিকে।

নাট্য-উদ্যোগ

চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে যে দুস্তর ব্যবধান, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের যে জটিল বুনন আমরা আমাদের জীবনের প্রতি মুহূর্তে অনুভব করে চলি— এই বোধকেই মূর্ত করে তোলে ঊনবিংশ শতকের শেষ ভাগে লেখা চেখভের নাটক ‘চায়কা’ বা ‘সিগাল’। এর অনুপ্রেরণায় উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন ‘কিরীটির নোটবুক’। এ বার এই নাটকটিই গণকৃষ্টি-র প্রযোজনায়, অমিতাভ দত্তের পরিচালনায় ৯ অগস্ট, সন্ধে সাড়ে ৬টায় প্রথম মঞ্চস্থ হবে অ্যাকাডেমিতে। একটি বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। অন্য দিকে, ভৌগোলিক দূরত্বের বাধা অতিক্রম করে বাংলা নাটকের মাধ্যমে গত তিন বছর ধরে নেদারল্যান্ডস ও কলকাতার মধ্যে বন্ধন দৃঢ়তর করছেন কিছু নাট্যপ্রেমী মানুষ ইন্দো-ডাচ নাট্যগোষ্ঠী ‘মজলিশ’-এর হাত ধরে। ১১ অগস্ট, সন্ধে ৬টায় জ্ঞান মঞ্চে এ বার তাদের প্রথম নিবেদন, মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটক ‘সুন্দর’, এবং দ্বিতীয় নিবেদন, ‘একটি অবাস্তব গল্প’। নির্দেশনায় প্রাণেশ চট্টোপাধ্যায়।

বৃক্ষরোপণ

‘‘মরুবিজয়ের কেতন উড়াও শূন্যে,/ হে প্রবল প্রাণ।/ধূলিরে ধন্য করো করুণার পুণ্যে,/ হে কোমল প্রাণ।’’। ১৯২৮-এর ১৪ জুলাই বৃক্ষরোপণ উৎসবের সূচনাবর্ষে (১৯৪২ থেকে কবির প্রয়াণ দিবসেই উদ্‌যাপিত হয়) এই কবিতা পড়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। প্রতিমা দেবীকে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘...তোমার টবের বকুলগাছটাকে নিয়ে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানটি হল।... শাস্ত্রীমশায় (বিধুশেখর) সংস্কৃত শ্লোক আওড়ালেন— আমি একে একে ছটা কবিতা পড়লুম— মালা দিয়ে চন্দন দিয়ে ধূপধুনো জ্বালিয়ে তার অভ্যর্থনা হল।’’ এ বার কবি-প্রবর্তিত এই বৃক্ষবন্দনাকে অবিকৃত রেখে ৮ অগস্ট, বিকেল ৫টায় মনোজ মুরলী নায়ারের পরিচালনায় ‘ডাকঘর’-এর নিবেদনে নিউটাউনের রবীন্দ্রতীর্থ প্রাঙ্গণে আয়োজন হয়েছে বৃক্ষরোপণ উৎসবের। প্রধান অতিথি শুভাপ্রসন্ন।

নীরবে

আশির দশক। ভেঙে পড়ছে বারিপদা ব্রাহ্ম সমাজের ব্রহ্মমন্দির। নিঃশব্দে এক জন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেন। থমকে যাওয়া আন্দুল ব্রাহ্ম সমাজও চালু রাখতে সচেষ্ট হন তিনি। হরিনাভি ব্রাহ্ম সমাজের দেড়শো বছরে তিনি আদি ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিরূপ নির্মাণ করলেন সেখানে, ব্রিস্টলে রামমোহনের সমাধির প্রতিরূপও বসালেন। কটক ব্রাহ্ম সমাজের মন্দির রক্ষার কিছু দায়িত্ব অসুস্থ অবস্থাতেও নিয়েছেন পরাগ রক্ষিত। ১৯৬০-এ কলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম। আদতে ইঞ্জিনিয়ার, কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মানুষটি। শুধুই কি ব্রাহ্ম সমাজ? শীতে পথের মানুষদের উষ্ণতার কম্বল জড়িয়ে দেওয়া সেই পরাগ সম্প্রতি চলে গেলেন। ত্যাগরাজ হলে তাঁকে স্মরণ করলেন স্বজনেরা। বারিপদার ব্রাহ্ম সমাজেও হয়ে গেল তাঁর স্মরণসভা।

প্রয়াস

আমরা ইচ্ছে করলেই পরিবেশকে নিজেদের মতো করে নিতে পারি, আবার ঠিক ইচ্ছের অভাব থাকলে পরিবেশের শিকারও হয়ে যেতে পারি। নিজেদের কী ভাবে গড়েপিটে নেওয়া যায়, বেঁচে-থাকার আদর্শ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যায়, সে কাজেই ব্রতী সল্টলেকের প্রয়াসম্, ইউনিসেফ তাদের সঙ্গী, জোহানেসবার্গ থেকে যোধপুর অবধি বিস্তৃত তাদের কর্মপরিধি। তাদেরই কমবয়সি ছাত্রছাত্রীরা তৈরি করেছে ছবি, বেঁচে-থাকাটাকে আর-একটু ভাল পরিসরে তুলে আনার জন্য। সে সব ছবি নিয়েই পঞ্চম ব্যাড অ্যান্ড বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছে প্রয়াসম্, ১২ অগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবসে এসআরএফটিআই অডিটোরিয়ামে, সহায়তায় ফিল্মস ডিভিশন। অন্য দিকে ইউনিসেফ-এর সহায়তায় অষ্টাদশ ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, নন্দনে ৯-১২ অগস্ট, বিশ্বসেরা ছোটদের ছবির সমাহার। উদ্যোক্তা সিনে সেন্ট্রাল।

জাতিসত্তা

স্বাধীনতার আগে থেকেই ভারতীয় জনসাধারণের মনে ছাপ ফেলা শুরু হিন্দি ছবির, স্বাধীনতার পরে সে ছাপ গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। সংখ্যায় ও প্রচারে হিন্দি ছবির প্রভাব সর্বাত্মক। সব্বাই অবশ্য সিনেমাহলে ঢুকে ছবি দেখার সুযোগ পান না, তবু তাঁদের কাছে পৌঁছে যায় ছবির গান, আর সে সুযোগ নিয়ে আসে রেডিয়ো। সেই ১৯৫২ থেকে রেডিয়ো-সিলোন, বা তার পরে বিবিধ-ভারতী হিন্দি ফিল্মের গান দিয়ে মুড়ে রেখেছে ভারতীয় জীবন। এ ভাবে কি আমাদের জাতিসত্তার বোধ তৈরি হচ্ছে কোনও— এ প্রশ্নের সূত্রেই বলবেন জহর সরকার: ‘ফিল্ম সঙস, রেডিয়ো অ্যান্ড দি আইডিয়া অব ইন্ডিয়া’, বিচিত্র পাঠশালা-র বার্ষিক বক্তৃতায়, নন্দনে ১০ অগস্ট সন্ধে ৬টায়। আয়োজক সংস্থাটির ব্রত: চলচ্চিত্রকে সঙ্গী করে শিক্ষার প্রসার।

জীবনের গভীরে

নেহরু চিলড্রেনস মিউজ়িয়াম নাট্যদল শিশু-কিশোরদের হলেও, দীর্ঘ কাল ধরে এই গোষ্ঠী ছোটদের নিয়ে ছেলেখেলা তো করেই না, বরং তাদের নাটক জীবনের গভীরে ঢুকে সমাজের সমস্যাগুলিকে তুলে ধরে দর্শকের সামনে। ২০০৩-এ আত্মপ্রকাশের পর রমাপ্রসাদ বণিকের অক্লান্ত পরিশ্রম আর নিষ্ঠায় নাট্যদলটি গ্রুপ থিয়েটারের স্বীকৃতি পায়। বহু রকমের প্রযোজনার পর এ বারে তাদের নতুন নাটক ‘অবরোধ’। মানবিক সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে রচিত এ নাটকের কাহিনিকার দেবেশ মুখোপাধ্যায়, নাটককার সীমা মুখোপাধ্যায়, নির্দেশক জীবন সাহা। অ্যাকাডেমিতে মঞ্চস্থ হবে ১২ অগস্ট সকাল ১০টায়।

তবু অনন্ত জাগে

সারা জীবনে বহু স্বজন হারানোর শোক পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। এঁদের অনেকেই অকালে প্রয়াত। তবু কবি শোককে জয় করেছেন পরম স্থৈর্যে। প্রয়াত প্রিয় স্বজন, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক, তাঁদের বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের কথা, সর্বোপরি জীবন-মৃত্যু সম্পর্কিত উপলব্ধি— এই নিয়ে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের আয়োজনে প্রদর্শনী ‘তবু অনন্ত জাগে’, গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ৮-১৩ অগস্ট, ২-৮টা। বিন্যাস: স্বপন সোম।

চপলরানি

বাবা তারাকুমার ভাদুড়ি ও মা প্রভাদেবী। চার ভাই, দুই বোন। সবার ছোট ‘টুকু’কে ছোটবেলা থেকেই মেয়েলি চিকন কণ্ঠস্বর ও হাবভাবের জন্য পাড়ার ছেলে ও টাউন স্কুলের বন্ধুদের কটূক্তি সহ্য করতে হত। জ্যাঠামশায় নাট্যাচার্য শিশিরকুমার, মা প্রভাদেবী ও ছোটদিদি কেতকী দত্ত প্রথিতযশা অভিনেত্রী। সাত বছর বয়সে শ্রীরঙ্গম মঞ্চে ‘বিন্দুর ছেলে’ নাটকে ‘অমূল্য’ চরিত্রে প্রথম অভিনয়। অন্নসংস্থানের জন্য বড় জামাইবাবু পঙ্কজ নিয়োগীর অনুপ্রেরণায় সতেরো বছর বয়সে পুরুষ হয়েও ‘মর্জ্জিনা’ চরিত্রে অভিনয় ‘আলিবাবা’ নাটকে। প্রথম দিনেই দর্শকচিত্ত জয়। যাত্রাজগতে সূর্য দত্ত, মাখনলাল নট্ট, ব্রজেন্দ্রকুমার দে প্রমুখের কাছে অনেক কিছু শিখেছেন। রাজা দেবীদাস, মহীয়সী কৈকেয়ী, চাঁদবিবি, সুলতানা রাজিয়া, শবরীর প্রতীক্ষা-সহ বহু পালায় কতশত নারী চরিত্রাভিনয়ে তিনি ‘চপল ভাদুড়ি’ থেকে ‘চপলরানি’। ষাটের দশকের শেষ থেকেই যাত্রায় মহিলা শিল্পী আসায় ভাটা পড়ে তাঁর কাজে। পাড়ায় পাড়ায় শীতলা পুজোয় শীতলা-সহ অন্য চরিত্রে একক অভিনয়ও করতে হয়েছে তাঁকে। নবীন কিশোর ‘পারফর্মিং দ্য গডেস— দ্য চপল ভাদুড়ি স্টোরি’ তথ্যচিত্রে তাঁকে ধরেছেন। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের টেলিফিল্ম ‘উষ্ণতার জন্য’ ও ‘আরেকটি প্রেমের গল্প’ ছবিতে অভিনয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। তবে ‘নান্দীপট’-এর ‘রমণীমোহন’ নাটকে অভিনয় সব থেকে বেশি আনন্দ দিয়েছে। সম্প্রতি আশিতে পা দেওয়া চপল ভাদুড়ি ৯ অগস্ট সন্ধে সাড়ে ৬টায় ‘আভাষ দক্ষিণ কলকাতা’ নাট্য সংস্থার উদ্যোগে মধুসূদন মঞ্চে ‘সুন্দরবিবির পালা’ নাটকে অভিনয় করবেন। লালমাটি ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে সুন্দরবিবির পালা বইটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE