Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: শতবর্ষে সোমেন চন্দ স্মরণ

স্বাধীনতা ও দেশভাগ একটু একটু করে তাঁকে বিস্মৃতির দিকে নিয়ে গিয়েছিল।

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

সাকুল্যে আঠাশটি ছোটগল্প, দু’টি উপন্যাস (এর মধ্যে একটি উদ্ধার করা যায়নি), দু’টি নাটিকা আর বেশ কিছু কবিতা— কোনও লেখকের একুশ বছর নয় মাসের জীবনে এর অধিক কল্পনাতীত। সোমেন চন্দের (জন্ম ২৪ মে ১৯২০) কলম ও জীবন, দুই থেমে গিয়েছিল ১৯৪২-এ। ফ্যাসিবাদী শক্তির হাতে মৃত্যু ঘটে তাঁর। স্বল্পায়ু জীবনেই বাংলা কথাসাহিত্যে নিজের স্বতন্ত্র আসনটি পাকা করে গিয়েছেন। তবু স্বাধীনতা ও দেশভাগ একটু একটু করে তাঁকে বিস্মৃতির দিকে নিয়ে গিয়েছিল। অমৃতকুমার দত্ত, কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত প্রমুখ সোমেন-সতীর্থ তাঁর স্মৃতিরক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন বরাবর। সত্তর দশকে পশ্চিমবঙ্গে পুনরায় সোমেন-চর্চা শুরু হয় যাঁর সযত্ন শ্রমে, তিনি দিলীপ মজুমদার। ‘দেশ’, ‘প্রতিরোধ’, ‘বালিগঞ্জ’, ‘সবুজবাংলার কথা’ পত্রিকার পুরনো ফাইল থেকে তিনি সোমেনের রচনাগুলি খুঁজে বার করেননি শুধু, ফটোকপির ব্যবস্থাহীন সেই যুগে চিত্রা ধর ও রণজিৎ মাইতির সহযোগিতায় দিনের পর দিন ‘ইঁদুর’, ‘চিহ্ন’, ‘বনস্পতি’র মতো গল্প বা ‘বন্যা’র মতো উপন্যাস হাতে লিখে নিয়েছেন। মুজফ্ফর আহমদের সক্রিয় সহযোগিতায় দুই খণ্ডে সোমেন চন্দ ও তাঁর রচনা সংগ্রহ সম্পাদনা করেন তিনি। সেই শুরু। তার পর থেকে সোমেনকে নিয়ে কাজের গতি বেড়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পাঠ্যও হয়েছে একাধিক গল্প। সাড়ে চার দশকের এই সোমেন-চর্চার একটি ধারাক্রম পাওয়া যাবে ‘ক্র্যাকার’ (সম্পা: গৌরাঙ্গ দাস) পত্রিকার সাম্প্রতিক ‘সোমেন চন্দ জন্মশতবর্ষ স্মরণ সংখ্যা’য়। অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু, সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা, অন্নদাশঙ্কর রায়, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, অশোক মিত্রের গদ্যের পাশাপাশি একাধিক নতুন লেখাও থাকছে। সঙ্গে থাকবে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’, ‘পরিচয়’ ইত্যাদিতে প্রকাশিত সোমেন হত্যার প্রতিবেদন, সোমেনের চিঠি এবং বিস্তারিত পঞ্জি। সংখ্যাটি প্রকাশ করবেন দিলীপ মজুমদার, ‘অহর্নিশ’ আয়োজিত সোমেন-প্রণাম ও পঞ্চম বর্ষ ‘ত্রিপুরা সাহিত্য সন্ধ্যা’য়। ৩০ মে বিকেল সাড়ে ৫টায়, তপন থিয়েটারের দোতলায় এই অনুষ্ঠানে আগরতলার ‘পূর্বমেঘ’ পত্রিকার সোমেন চন্দ সংখ্যাও প্রকাশ পাবে। ওই পত্রিকার দুই সম্পাদক রামেশ্বর ভট্টাচার্য ও মণিকা দাস আলোচনা করবেন সোমেন চন্দের জীবন, রাজনীতি ও সাহিত্য নিয়ে। প্রধান অতিথি বাংলাদেশের বেনজীন খান।

নতুন কবিতা

‘‘অপরাহ্ণে মাঠে এসে চোখ ফেরাতেই/ দেখি ফুল/ পুষ্পে আজও অযুত বছরের স্মৃতি উদ্ভিদের/ হৃৎকম্পন আনে অভ্রান্ত অতুল—/ দুই হাতে ঠেলে সরিয়ে বিস্মৃতি আবিল/ আমি মানব,/ খুঁজে নিতে হবে সেই হরিতের সঙ্গে গাঁথা গূঢ় অন্তমিল!’’— সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নববর্ষে প্রকাশিত নতুন কাব্যগ্রন্থ অন্তমিল-এর (সিগনেট প্রেস) এই কবিতাটির নামও ‘গূঢ় অন্তমিল’। এ-বইয়ের ব্লার্বে বলা হয়েছে, কাব্যগ্রন্থটি ‘বস্তুত এক মায়াবী অপরাহ্ণ’, যেখানে আমাদের ব্যথার মতো নীরবতা সৌমিত্রের কলমে শব্দফুল হয়ে ফুটে ওঠে, ছুঁয়ে ফেলে কবিতার রহস্যময় অস্তিত্ব। বরাবর বলে এসেছেন কবি, ‘প্রেমের আনন্দ বেদনা ব্যর্থতা চরিতার্থতাই’ তাঁর জীবনভর কবিতার দীর্ঘস্থায়ী স্রোত, তাতে একটু একটু করে জুড়ে গিয়েছে ‘প্রকৃতি, সমাজ, বেঁচে থাকার অপরিহার্য অভিজ্ঞতাগুলি’। মুদ্রণ পারিপাট্যে চমৎকার এ-বইটির পদ্যসমূহের সঙ্গে আছে রৌদ্র মিত্রের দৃষ্টিনন্দন অলঙ্করণ।

গানের গল্প

‘ফিরে নাহি এলে প্রিয় ফিরে এল বরষা’— কাজী নজরুল ইসলামের এই গানটি ভারত ও বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন নজরুলগীতির সংগ্রহে মাত্র তিনটি পঙ্‌ক্তি প্রকাশিত। কিন্তু দীপালি নাগের খাতায় নজরুলের হস্তাক্ষরে পাঁচটি পঙ্‌ক্তি পাওয়া যাচ্ছে। আবার ‘হে শ্যাম কল্যাণ দাও অভয় প্রাণ দাও’ এই গানটির উল্লেখ ১৯৩৮ সালে গ্রামোফোন কোম্পানির একটি চুক্তিপত্রে পাওয়া গেলেও এর সম্পূর্ণ বাণী অজ্ঞাত ছিল। এটির কথাও জানা যাবে হিন্দমোটর ফোকাস ও জীবনস্মৃতি ডিজিটাল আর্কাইভের একটি দৃশ্য-শ্রাব্য উপস্থাপনা ‘পাঁচটি গানের গল্প’য় (ভাবনা ও রূপায়ণ অরিন্দম সাহা সরদার), ২৪ মে বিকেল ৫টায় চিত্রবাণীতে। কাকলী সেন রচিত ফৈয়াজী আলোকে নজরুলসংগীত গ্রন্থ থেকে নজরুলের কথায় দীপালি নাগের সুরে চারটি গানের সৃষ্টির পিছনের গল্প ছাড়াও থাকবে ২০০৮-এ অরিন্দম সাহা সরদার গৃহীত দীপালি নাগের একটি সাক্ষাৎকারের অংশ, যেখানে তিনি নিজেই বলেছেন তাঁর প্রথম নজরুলগীতির গল্পটি। অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো হবে কল্যাণী কাজীকে।

কাগজের নাটক

কত কিছু থেকে যে ছোটরা খুঁজে বার করে আনে তাদের নাটকের বিষয়! নিজের দেশ, ভাষা, এমনকি বিশ্বসংসারেরও হরেক রকমকে বুঝে নিতে চায় তারা খবরের কাগজ পড়তে-পড়তে, আর সে কাগজ ‘আনন্দবাজার পত্রিকা স্কুলে’। এই নিয়েই জমজমাট সুখচর পঞ্চম রেপার্টরি থিয়েটারের সারা বছরের নাট্যশিল্পচর্চা: শিশুতীর্থ। কখনও শিবির বসবে শীতে— উইন্টার ক্যাম্প, আবার এমন শিবির যেখানে চলবে প্রকৃতিপাঠ— নেচার ক্যাম্প। সেখানে নানান নাট্যআঙ্গিকের নিরীক্ষা, ছোটদেরই লেখা আর ভাবনা দিয়ে সাজানো ছোট ছোট নাটক, অভিনয়ও করবে ছোটরা। কাগজ থেকে খুঁজে আনা নিউজ় স্টোরি নিয়ে নাটক যে হেতু, এ বারে তাই ‘কাগজের নাটক’। আরম্ভ গরমের ছুটিতে, শিশুতীর্থ-র সামার ক্যাম্প, ২৫-২৯ মে সোদপুর জলসাঘর আর্ট গ্যালারি স্টুডিয়ো থিয়েটারে সকাল থেকে বিকেল। শুরুর দিন আসবেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আদিগঙ্গা

চেতলায় আদিগঙ্গার কোলে সুনীল দাশের আজন্ম বাস। শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রমথনাথ বিশী, আশুতোষ ভট্টাচার্যকে। তীর্থপতি ইনস্টিটিউশনে শিক্ষকতা শুরু করে অবসর নেন হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে। তিনশোরও বেশি ছোটগল্প, দশটি উপন্যাস, সাতটি নাটক, কিশোরদের জন্য গল্প ভ্রমণকথা নিয়ে ২৫ মে তিনি পৌঁছবেন সাতাত্তরে। পাঁচ খণ্ডে আত্মজৈবনিক উপন্যাস ‘আদিগঙ্গা’ শেষ করে হাত দিয়েছেন রাজনারায়ণ বসুকে নিয়ে একটি দীর্ঘ উপন্যাস ‘প্রাণের মানুষ’-এ। ২৬ মে সন্ধে সাড়ে ৬টায় রোটারি সদনে নাট্যদল ‘সংবর্ত’, সেবামূলক সংগঠন ‘আগামী’র সহযোগিতায় তাঁর জীবন ও রচনা নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র ‘আদিগঙ্গা’ (পরি: সঞ্জয় ভট্টাচার্য) দেখাবে। এর ডিভিডি প্রকাশ করবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুনীল দাশের নতুন নাটক ‘আরও ভেতরের দিকে’ মঞ্চস্থ হবে ২৮ মে মুক্তাঙ্গনে।

বহুরূপী

এ বারেও ১ মে প্রকাশিত হয়েছে ‘বহুরূপী’ পত্রিকা। দশ বছর ধরে একক ভাবে এটি সম্পাদনা করছেন প্রভাতকুমার দাস। ১৩১তম সংখ্যায় দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এবং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘বহুরূপী’র জন্যই রচিত একটি প্রবন্ধ ও কবিতা পুনর্মুদ্রিত হয়েছে। দেবীপ্রসাদের সঙ্গে বাংলার নাট্যজগতের পরিচয়ের কথা লিখেছেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। লোকনাথ ভট্টাচার্যের নাট্যচর্চা নিয়ে আলোচনা করেছেন বোধিসত্ত্ব ভট্টাচার্য। ১৯৬৮-’৭৪ সালের মধ্যে লোকনাথ ৬টি নাটক লিখেছিলেন। তার তিনটি প্রকাশিত হয় ‘বহুরূপী’তেই। আছে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, মীনাক্ষী দত্তের নাটকভাষ। বিভাস চক্রবর্তী স্মরণ করেছেন মৃণাল সেনকে, প্রায়-বিস্মৃত অভিনেতা ও পরিচালক অনিল মুখোপাধ্যায়কে স্মরণ করেছেন রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী। দীপেন্দু চক্রবর্তী-সহ চার জনের নাটকও রয়েছে, রয়েছে তার্তুফের নাটক থেকে সুবোধ পট্টনায়ক সম্পাদিত ইংরেজি অনুবাদের অংশুমান ভৌমিক কৃত বঙ্গীকরণ ‘ধাপ্পা’।

তথ্যচিত্রকার

সত্যজিৎ রায়, বিসমিল্লা খান, উৎপল দত্ত, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কে জি সুব্রহ্মণ্যন... কাকে নিয়ে ছবি করেননি গৌতম ঘোষ! এমন শিল্পীদের নিয়ে ছবি করার অভিপ্রায়ও জানিয়েছেন, ‘‘এঁদের কাছ থেকে শিখেছি, প্রেরণাও পেয়েছি অসম্ভব।’’ তথ্যচিত্র নানান কারণে তাঁকে টানে, তার মধ্যে একটি: ‘‘নিজের জ্ঞানের পরিসরটুকু আরও একটু প্রসারিত করে নিই।’’ তবে এ-সমস্ত ছাপিয়ে যা তাঁকে ফিল্মের সঙ্গে লগ্ন করে রাখে তা হল তাঁর ‘প্যাশন’, মনে করেন গৌতম। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মানে ঠাসা তাঁর তথ্যচিত্রের ঝুলি, বৈচিত্রেরও খামতি নেই, এক দিকে যেমন জ্যোতি বসু বিষয় হয়ে ওঠেন, তেমনই অন্য দিকে দলাই লামা। কিছু কাল আগেই গুন্টার গ্রাস-কে নিয়ে ছবি করলেন, তাঁর সঙ্গে শুভাপ্রসন্ন-র সখ্যকে জড়িয়ে। শুরু সত্তর দশকে, তাঁর প্রথম ডকুমেন্টারি ‘হাংরি অটাম’ গুরুত্বপূর্ণ ওবেরহাউজ়েন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সম্মানিত হয় সেরার পুরস্কারে। বঙ্গদেশের ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষের পাশাপাশি উঠে আসে রাজস্থানের বালিয়াড়ি— ‘ল্যান্ড অব স্যান্ড ডিউনস’। আর রেশমপথ নিয়ে তাঁর ‘বিয়ন্ড দ্য হিমালয়াজ়’ তো আজ কিংবদন্তি। নতুন প্রজন্মের কাছে গৌতমের তথ্যচিত্রের শিল্পরূপের পরিচয় প্রগাঢ় করে তুলতেই আয়োজন করা হয়েছে তাঁর নির্বাচিত তেরোটি তথ্যচিত্রের উৎসব: ‘মেমোরিজ় অ্যাবাউন্ড: গৌতম ঘোষ অন দ্য ডকুমেন্টারি ট্রেল’। আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে ২৫-২৭ মে। প্রথম দিন বেলা ৩টেয় উদ্বোধন, থাকবেন অজয় চক্রবর্তী দেবজ্যোতি মিশ্র ও অঞ্জন বসু। উদ্যোগে ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস-এর সঙ্গে আইসিসিআর ও কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন।

নায়ক-নায়িকা

দিনে পনেরো টাকা পেতেন তখন স্টুডিয়োতে, তাঁকে যখন দৈনিক একশো টাকা সাম্মানিকে ‘পরশ পাথর’-এ মূল চরিত্রটি করার অনুরোধ জানান সত্যজিৎ, তুলসী চক্রবর্তী তাঁকে বলেছিলেন, বেতনটা বড্ড বেশি হয়ে যাচ্ছে, পরে কাজ পেতে অসুবিধে হবে। এমন কত সুখ-দুঃখ, ওঠাপড়ার স্মৃতি অমিতাভ নাগের সম্প্রতি প্রকাশিত সত্যজিৎ রায়‌জ় হিরোজ় অ্যান্ড হিরোইনস-এ (রূপা)। কী ভাবে সত্যজিতের একের পর এক ছবি তুলসী চক্রবর্তী ছবি বিশ্বাস উত্তমকুমার থেকে সৌমিত্র, বা করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে মাধবী-শর্মিলার অসামান্য অভিনয়ের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল, তারই ইতিবৃত্ত এ-বই। সত্যজিতের ছবিগুলিকে পুনঃপাঠের জন্যে যেমন কাজে লাগবে বইটি, তেমনই এতে জানা যাবে ছবিগুলির প্রতিটি চরিত্রাভিনয়ে সত্যজিতের হাতযশের সঙ্গে কেমন ভাবে মিশে গিয়েছিল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রতিভা। মুখবন্ধে সে কথাটাই খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

সেতুবন্ধন

মেক্সিকোর গুয়াদালহারা শহরে প্রতি বছর শীতে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বইমেলা, যা স্প্যানিশভাষী দুনিয়ার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যসঙ্গমও বটে। গুয়াদালহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যপত্র ‘লুভিনা’ ২০০৭ থেকে তাদের শীত সংখ্যাটি তৈরি করে এই বইমেলার অতিথি দেশকে ঘিরে। ২০১৯-এ অতিথি দেশ ভারত, তাই সেই সংখ্যার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আঁচ লেগেছে কলকাতাতেও, কারণ এই শহরের ইন্দো-হিসপ্যানিক ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাকাডেমি এই প্রকাশনার সহযোগী। অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর দিব্যজ্যোতি মুখোপাধ্যায় ওই বইমেলায় (৩০ নভেম্বর-৮ ডিসেম্বর) ‘লুভিনা’ পত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন। এ দিকে ‘লুভিনা’র সম্পাদক তথা গুয়াদালহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কবি সিলভিয়া ইউহেনিয়া কাস্তিয়েরো এখন কলকাতায়। আজ, ২০ মে আইসিসিআরে সন্ধে ৬টায় অ্যাকাডেমি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁর কথা শোনা যাবে। প্রকাশিত হবে তাঁর একটি কবিতার বইয়ের স্প্যানিশ-বাংলা দ্বিভাষিক সংস্করণ।

আপসহীন

‘‘তিনি আসলে আপসহীন এবং হয়তো আবেগময় রোমান্টিক। রাজনৈতিক প্যাঁচপয়জার ও সাংগঠনিক মার-প্যাঁচের হিসেবি বুদ্ধি ও সুযোগসন্ধানী মনোভাব তাঁর ধাতে ছিলই না।’’ লিখছেন সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা সংগ্রহ ১ম খণ্ডের (পরম্পরা) দুই সম্পাদক মলয় রক্ষিত ও অমিত দাশ। দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতি সৌম্যেন্দ্রনাথ (১৯০১-’৭৪) বড় হয়েছেন ঠাকুরবাড়ির নান্দনিক পরিবেশে, রবীন্দ্রনাথকে আদর্শ মেনেছেন, আবার অস্থির আবেগে ছুটে বেড়িয়েছেন গাঁধীবাদ থেকে কমিউনিজ়মে, ফ্যাসিবাদ সাম্রাজ্যবাদ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করেছেন। আজীবনই তিনি ছিলেন ক্ষমতাতন্ত্রের চক্ষুশূল। প্রয়াণের পর বড় তাড়াতাড়ি তাঁকে আমরা ভুলেছি। এ বার বৈতানিকের আগ্রহে ও পরম্পরার চেষ্টায় তাঁর লেখাগুলি তিন খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে। ‘সমাজ সাহিত্য সংস্কৃতি’ বিষয়ক প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত।

আলোকরেখা

রম্যাঁ রলাঁ (১৮৬৬-১৯৪৪) যে দু’জন মহান ভারতীয়ের মধ্যে আলোর সন্ধান করেছিলেন, তাঁরা রবীন্দ্রনাথ ও গাঁধী। রলাঁর লেখা গাঁধীর জীবনী প্রকাশিত হয় ১৯২৪-এ। ফরাসি সৃষ্টিশীল এই মানুষটি টলস্টয়, মিকেলাঞ্জেলো, বেঠোফেনেরও জীবনীকার ছিলেন, বন্ধু ছিলেন গোর্কি আর ফ্রয়েডের। ‘‘গাঁধীজিকে ‘মানবতার শেষ প্রহরী’ মানতেন রলাঁ। ‘ভারতবর্ষের জিশু’ বলেও রলাঁ তাঁকে অভিহিত করেছেন। গাঁধীজি যে সত্যিই জিশুর মতোই নিহত হয়েছিলেন আমাদের সদ্য স্বাধীন দেশে, তা অবশ্য দেখে যাননি তিনি। তাঁর গাঁধী-জীবনী কোনও স্তাবকের রচনা নয়, এক যুক্তিবাদী চিন্তকের ইউরোপীয় অন্বেষণ। তিনি লিখেছিলেন, গাঁধীজির ভাবনার সাফল্য বা ব্যর্থতার উপর নির্ভর করছে এক শতাব্দী বা তার বেশি সময় ধরে পৃথিবীর ভবিতব্য।’’— বলছিলেন চিন্ময় গুহ। আলিয়াঁস ফ্রঁাসেজ-এ ২৫ মে সন্ধে ৬:৪৫-এ তিনি বলবেন এ-নিয়ে: ‘গাঁধী অ্যান্ড রলাঁ/ আ কোয়েস্ট ফর লাইট ইন ট্রাবলড টাইমস’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE