Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

স্বামীর মৃত্যুর তদন্তের দাবি কাউন্সিলরের

অনিতাদেবীর অভিযোগ, ৫ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে চিকিৎসকেরা জানান, রঞ্জনবাবুর বুকে জল জমেছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।

রঞ্জন শীল

রঞ্জন শীল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৮
Share: Save:

সাড়ে চার বছর আগে চিকিৎসা চলাকালীন একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল এক কাউন্সিলরের স্বামীর। চিকিৎসায় গাফিলতিতেই এই মৃত্যু, এমন অভিযোগ তুলে এ বার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন তাঁর স্ত্রী, ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদার। গত সপ্তাহে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রঞ্জন শীল (৫১)। ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর মুকুন্দপুরের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার রাইফেল ক্লাবের বাসিন্দা রঞ্জনবাবুর। পায়ে ব্যথা নিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রায় ১৮ দিন ভর্তি থাকার পরে মারা যান তিনি।

কিন্তু এত দিন পরে কেন ওই হাসপাতাল-সহ চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন অনিতাদেবী?

শুক্রবার কাউন্সিলর জানান, স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুতে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং রঞ্জনবাবুর চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ জানান। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে। অনিতাদেবী আরও জানিয়েছেন, শুনানি চলাকালীন চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিতে প্রচুর গরমিল তাঁর চোখে পড়ে। এর পরেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতাল থেকে রঞ্জনবাবুর চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃতের পরিবারের কাছেও নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে কাউন্সিলরের কাছে। সব তথ্য রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে ময়না-তদন্ত না হওয়ায় মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ কী ভাবে সম্ভব হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে তাঁদের।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতালে ২০১০ সালে প্রথম বাইপাস অস্ত্রোপচার হয় রঞ্জনবাবুর। তার পরে তিনি সেখানকারই এক হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি ছিলেন। ২০১৩-র নভেম্বরে রঞ্জনবাবু নিয়মমাফিক শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই হাসপাতালে যান। তখন ওই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় অন্য এক চিকিৎসক পরীক্ষা করে রঞ্জনবাবুকে জানান, তাঁর পায়ে ফোলা রয়েছে। সে জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

অনিতাদেবীর অভিযোগ, ৫ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে চিকিৎসকেরা জানান, রঞ্জনবাবুর বুকে জল জমেছে। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কাউন্সিলর পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত চিকিৎসকেরা দাবি করেছিলেন, অস্ত্রোপচারটি খুব গুরুতর কিছু নয়। বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু আধ ঘণ্টার কথা বলেও ওই অস্ত্রোপচার হয় চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। এত সময় লাগার কারণ হিসেবে ডাক্তারেরা জানান, রোগীর বুক থেকে জল বার করতে সময় লেগেছে। অনিতাদেবী জানান, এর পরেই ভেন্টিলেশনে চলে যান তাঁর স্বামী। কিন্তু চিকিৎসকরা তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। পরে ১১ নভেম্বর রঞ্জনবাবুর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE