Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মহিলাদের দিয়ে মাদক বিক্রির চক্র, মাথারা আড়ালেই

লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ নারকোটিক্স বিভাগের এক তদন্তকারী দল সাব-ইনস্পেক্টর অভীককুমার দাসের নেতৃত্বে ১৬২, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে অভিযান চালিয়ে ১১২ গ্রাম হেরোইন–সহ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে।

শ্যামলী শিকারি ও মমতা শেখ।

শ্যামলী শিকারি ও মমতা শেখ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ০২:৫৫
Share: Save:

সন্ধ্যার পরে ব্যস্ত রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তাঁদের। কোলে বাচ্চা। কেন তাঁরা ওই ভাবে ঘুরছেন, আপাতদৃষ্টিতে দেখলে বোঝা মুশকিল। কিন্তু, তাঁদের কাছেই মিলছে নেশার বস্তু। আইনের ফাঁকফোকর জেনে বাচ্চা-সহ মহিলাদের সন্ধ্যার পরে রাস্তায় নামিয়ে এ ভাবেই মাদক বিক্রি করছে একটি চক্র।

সোমবার মুচিপাড়া থানা এলাকা থেকে মাদক পাচার চক্রের দুই মহিলাকে গ্রেফতার করার পরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা অফিসারদের হাতে। তদন্তকারী এক কর্তা জানান, তাঁদের অনুমান, এই চক্রের পিছনে বড় মাথা রয়েছে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তারা মহিলাদের দিয়ে মাদক বিক্রির কারবার চালাচ্ছে। নিজেরা থাকছে আড়ালে।

লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ নারকোটিক্স বিভাগের এক তদন্তকারী দল সাব-ইনস্পেক্টর অভীককুমার দাসের নেতৃত্বে ১৬২, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে অভিযান চালিয়ে ১১২ গ্রাম হেরোইন–সহ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে। তাদের নাম মমতা শেখ এবং শ্যামলী শিকারি ওরফে বিউটি। দু’জনেরই বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারি শরিফের আশপাশে। তবে তাঁরা সাধারণত থাকেন শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে। পুলিশ জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া হেরোইনের বাজার দর আনুমানিক এক লক্ষ টাকা।

তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, মমতা এবং শ্যামলী ওই মাদক মুর্শিদাবাদের লালগোলা-পলাশী থেকে এনে বিক্রি করছিলেন। সাধারণ লোকজন ছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা ছিলেন ক্রেতা। এক পুরিয়া মাদকের দাম ১০০ টাকা থেকে শুরু করে চাহিদা অনুযায়ী বাড়াতেন তাঁরা।

তদন্তকারী এক অফিসার জানান, মহিলাদের দিয়ে এই ব্যবসা চালানোর ফলে মাদক পাচার চক্রের চাঁইদের ধরতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। চক্রের মাথারা মাদক বিক্রির কাজে ওই মহিলাদের রাস্তায় নামাচ্ছে সন্ধ্যার পরে। কারণ তারা জানে, সূর্যাস্তের পরে পুলিশ ওই মহিলাদের গ্রেফতার করতে পারবে না। আর দিনে এই মহিলারা কোনও ব্যবসাই করেন না।

পুলিশ সূত্রের আরও খবর, আগে পাচারকারীরা কলকাতায় এসে মাদক সরবরাহ করলেও ইদানীং তারা পুলিশের ভয়ে কলকাতায় আসছে না। বরং চক্রের লোকজনকে লালগোলা এবং কলকাতার মাঝামাঝি কোথাও ডেকে মাদক লেনদেন সারছে। এমনকি তদন্তকারীরা আরও জানাচ্ছেন, পাছে পুলিশের লোক পিছু নিয়ে তাদের ঠিকানা জেনে যায়, তাই পাচারকারীরা নিজেদের ডেরার ঠিকানাও আর দিতে রাজি হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women Arrest Drug Trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE