জরিপ: এখানেই হবে নতুন সেতু। নিজস্ব চিত্র
দাবি ছিল বহু দিনের। সেই দাবি পূরণ করতে আগামী এক বছর চরম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন দমদম ও তার সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কারণ বাগজোলা খালের উপরে নতুন সেতু তৈরি হবে। সে জন্য প্রায় এক বছর দমদম রোড বন্ধ রেখে সেতু নির্মাণের কাজ করবে পূর্ত দফতর!
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রের খবর, এখন বাগজোলা খালের মাঝে যে সেতু রয়েছে, তার নীচ দিয়ে খালের জল যাওয়ার দু’টি গর্ত রয়েছে। সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেতুটি বহু পুরনো। পুর এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দমদমের নিকাশির ক্ষেত্রে বাগজোলা খালই হয়ে উঠেছে ভরসা। কিন্তু দমদম রোডের কাছে এসে জলের গতি রুদ্ধ হচ্ছে। কারণ জলের সঙ্গে ভেসে আসা আবর্জনা মাত্র দু’টি গর্ত দিয়ে বেরোতে সময় লাগছে। বস্তুত বেশির ভাগ সময়েই আবর্জনা জমছে খালের দু’ধারে। ফলে বাড়ছে মশাবাহিত রোগ, সমস্যায় পড়ছে পুর প্রশাসন।
খালের জল যাতে অনায়াসে বেরিয়ে যেতে পারে সে জন্য পুরনো সেতুটি ভেঙে নতুন একটি সেতুর পরিকল্পনা হয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত সেতুর নকশাও তৈরি হয়েছে। সেটি ৫৫ মিটার লম্বা, এবং ফুটপাত-সহ ১৩.৮ মিটার চওড়া। পুরসভার বর্তমান কম্প্যাক্টর ঘরের একটু আগে থেকে শুরু হয়ে জপুর রোডের মুখ পর্যন্ত হবে সেতুটি। সেতুর জন্য ভেঙে ফেলতে হবে কম্প্যাক্টর ঘরটিও। বর্তমান সেতুর এক ধারের ফুটব্রিজ এবং কেএমডিএ-র জলের পাইপলাইনের অবস্থানও বদলাবে। নতুন সেতুর পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় পাঁচ মিটার চওড়া সার্ভিস রোড তৈরিরও প্রস্তাব রয়েছে।
আগামী সোমবার দক্ষিণ দমদমের পুর প্রতিনিধিদের এলাকা পরিদর্শনের কথা। পূর্ত ও সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও উপস্থিত থাকবেন। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে পুলিশ, পূর্ত, সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান।
তবে কাজ চলাকালীন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে প্রশাসন বিকল্প কী ভাবছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা। কারণ দমদম, দক্ষিণ দমদম, বাগুইআটি, বিমানবন্দর এলাকার অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন মেট্রো ধরতে দমদম রোড ব্যবহার করেন। এ ছাড়া নাগেরবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়া বাস, অটো-সহ অন্য রুটগুলোর বিকল্প গন্তব্য কী হবে, প্রশ্ন রয়েছে সে সব নিয়েও। দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান জানান, নাগেরবাজার থেকে ছাড়া বাসগুলো প্রকল্প এলাকা ছাড়িয়ে ঘুঘুডাঙা ফাঁড়ির আশপাশে দাঁড়ানোর সুযোগ করা যায় কি না, তার চিন্তাভাবনা চলছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর, অটো পরিষেবা দু’ভাগে চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। নাগেরবাজার থেকে নতুন সেতুর আগে পর্যন্ত, আবার হনুমান মন্দিরের পর থেকে দমদম রেলস্টেশন পর্যন্ত অটো চালু থাকবে।
যদিও প্রশ্ন উঠছে, এ ভাবে দমদম রোডের চাপ সামলানো আদৌ সম্ভব? তা ছাড়া দমদম রোড বন্ধ থাকলে যশোর রোডই ভরসা। কিন্তু যশোর রোড কি এত চাপ নিতে প্রস্তুত?
এক স্থানীয় কাউন্সিলর বলেন, ‘‘বাগজোলা খালের উপরে মধুগড় এবং জ্যোতিনগরের মধ্যে যে কাঠের পোল ছিল সেটি ভেঙে কংক্রিটের সেতু হওয়ার কথা। অজয়নগরের ঐকতান আবাসন এবং জপুরের মধ্যেও একটি কংক্রিটের সেতু তৈরির কথা সেচ দফতরের। এখনও সেগুলো হয়নি। হলে ভিতরের রাস্তা দিয়ে অটো, ছোট গাড়ি চালিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যেত।”
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে যৌথ ভাবে সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy