Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বৈশাখী পার্বণে ফুলের ঘায়ে মূর্ছা গেল পকেট

গাঁদা, রজনী, জুঁই-সহ সব ফুলেরই দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়ল। এই দাম আরও বেশ কিছু দিন চলবে বলেই জানাচ্ছেন ফুল ব্যবসায়ীদের একাংশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৯
Share: Save:

কয়েক দিন আগেই রজনীগন্ধার দাম ছিল কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা। ২০ পিস গাঁদার দাম ছিল সেখানে ৮০ টাকার মতো। কিন্তু বৈশাখী-পার্বণে সেই ফুলের বাজারেই অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি হল। গাঁদা, রজনী, জুঁই-সহ সব ফুলেরই দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়ল। এই দাম আরও বেশ কিছু দিন চলবে বলেই জানাচ্ছেন ফুল ব্যবসায়ীদের একাংশ। কারণ, সামনেই বিয়ের মরসুম। ফলে ফুলের ঘায়ে মধ্যবিত্তের পকেটে ব্যথা লাগার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

ফুল ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, একেই চৈত্র মাসে ফুলের ব্যবসা ভাল হয়নি। বাজারে এনেও ফুল বিক্রি না হওয়ায় তা ফেলে রেখে যেতে হয়েছে অনেক ব্যবসায়ীকে। অনেক ফুল নষ্ট হয়েছে। আবার জেলার অনেক জায়গায় ফুলের উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বৈশাখে সে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাতেই ফুলের বাজারে চড়া দাম।
নিউ মার্কেটের ফুলপট্টির এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ফুলের দাম অন্য বারের থেকে অনেকটাই চড়া। এই দাম আরও কিছু দিন থাকবে।’’

ফুল ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পয়লা বৈশাখের বাজারে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ২০ পিস গাঁদা বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৬০-২০০ টাকায়। রজনীগন্ধা কেজ প্রতি ১৬০-১৮০ টাকায়, ২০ পিস জুঁইয়ের দাম প্রায় ৩৫০-৪০০ টাকা, ২০ পিস বেলফুল বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩৫০ টাকায়! রজনীগন্ধা ফুলের ১০০টি মালা বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। অথচ কিছু দিন আগেও ফুলগুলির দাম প্রায় অর্ধেক ছিল। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘একমাত্র ঝুরো ফুলের দাম একটু কম ছিল। বাকি সব ফুলের দামই বেশি এ বার।’’

ফুল ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরে ভিন্‌ রাজ্য থেকে যেমন ফুল আসে, তেমনই ফুল আসে শহর সংলগ্ন বিভিন্ন জেলা থেকে। কোলাঘাট, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, রানাঘাট-সহ একাধিক জায়গা থেকে ফুল সরবরাহ করেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু এ বছরের পয়লা বৈশাখে সেই সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। মল্লিকঘাট ফুল বাজার পরিচালন সমিতির সভাপতি স্বপন বর্মণ বলেন, ‘‘এখন প্রতিটি জেলার স্থানীয় বাজারেই ফুলের নিজস্ব চাহিদা থাকে। পয়লা বৈশাখ বা বিশেষ দিনে স্থানীয় বাজারেই ফুল বিক্রি হয়ে যায়। ফলে আগে যে পরিমাণ ফুল বিভিন্ন জেলা থেকে মল্লিকঘাটে আসত, এখন তার থেকে তুলনামূলক ভাবে কিছুটা কম আসছে। তাই পয়লা বৈশাখের আগের দিন এ বার ফুলের দাম একটু বেশি ছিল।’’

প্রসঙ্গত, আনাজে অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধি হলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্স আছে। কিন্তু ফুলের দামবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সে রকমটি সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মল্লিকঘাট ফুল বাজার পরিচালন সমিতির কোষাধ্যক্ষ গৌতম সমাদ্দার বলেন, ‘‘ফুলচাষিরা বাজারে নিজেরাই এসে ফুল বিক্রি করেন। কেউ হয়তো সকালে এক দামে একটি ফুল বিক্রি করছেন, যখন সেই ফুল বিকেলে পাওয়া যাচ্ছে না, তখন আর এক ব্যবসায়ী বেশি দামে সেই ফুলই বিক্রি করছেন। ফলে ফুলের বাজারে প্রতিনিয়তই দাম এ ভাবে ওঠা-নামা করে। এখানে সার্বিক দাম নিয়ন্ত্রণ কখনওই সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE