Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মেট্রোয় উঠে গেল নির্দিষ্ট ভাড়ার কাউন্টার

মেট্রো সূত্রের খবর, যাত্রীদের সময় বাঁচাতে বেশ কয়েক বছর আগে প্রতিটি স্টেশনে ‘এগজ্যাক্ট ফেয়ার’ বা নির্দিষ্ট ভাড়ার কাউন্টার চালু করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। অধিক মূল্যের নোট নয়, টিকিট বা টোকেনের নির্দিষ্ট মূল্য গুনে দিতে হত বিশেষ ওই কাউন্টারে।

ফিরোজ ইসলাম
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৫১
Share: Save:

নোট বাতিলের পরে সাধারণ নাগরিকদের মতোই খুচরোর প্লাবনে জেরবার কলকাতা মেট্রো রেল! মুখে স্বীকার করতে না চাইলেও সমস্যা যে হচ্ছে, তা ধরা পড়েছে কয়েক মাস আগে মেট্রো কর্তৃপক্ষের করা এক নিঃশব্দ পদক্ষেপে।

মেট্রো সূত্রের খবর, যাত্রীদের সময় বাঁচাতে বেশ কয়েক বছর আগে প্রতিটি স্টেশনে ‘এগজ্যাক্ট ফেয়ার’ বা নির্দিষ্ট ভাড়ার কাউন্টার চালু করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। অধিক মূল্যের নোট নয়, টিকিট বা টোকেনের নির্দিষ্ট মূল্য গুনে দিতে হত বিশেষ ওই কাউন্টারে।

খুচরো ফেরত দেওয়ার ঝক্কি না থাকায় ওই কাউন্টার থেকে এক দিকে যেমন দ্রুত টিকিট পেতেন যাত্রীরা, অন্য দিকে ওই কাউন্টারে জমা হওয়া খুচরো অন্য কাউন্টারগুলিতে কাজে লেগে যেত। কার্যত নিখরচাতেই খুচরোর জোগান পেতেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন স্টেশনে নিত্যযাত্রীদের একটি বড় অংশ দ্রুত টিকিট পেতে ওই কাউন্টারগুলিতে ভিড় জমাতেন।

কিন্তু কয়েক মাস আগে কাউকে কিছু না জানিয়েই মেট্রো কর্তৃপক্ষ আচমকা কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত সব ক’টি স্টেশনের ‘এগজ্যাক্ট ফেয়ার’ লেখা বোর্ড সরিয়ে ফেলেন। বোর্ড সরানোর বিষয়টি স্বীকার করে মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেট্রোয় এখন প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ছ’লক্ষ যাত্রী হয়। ভিড়ের যা চাপ, তাতে আলাদা করে ওই কাউন্টার রাখা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, অনেক যাত্রী না-জেনেই বেশি টাকার নোট নিয়ে ওই কাউন্টারে দাঁড়িয়ে পড়তেন। তাতে সমস্যা হত। তবে খুচরো টাকার আধিক্যের বিষয়টি তিনি স্বীকার করতে চাননি।

মেট্রোর নিত্যযাত্রীদের একাংশের দাবি, নির্দিষ্ট মূল্যের বেশি টাকা দিয়ে টোকেন নিতে এলে কখনওই ওই কাউন্টার থেকে তা মিলত না। তাঁদের প্রশ্ন, যাত্রী-সংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই যদি ওই বিশেষ কাউন্টার তুলে দেওয়া হয়ে থাকে, তবে তা নিঃশব্দে করা হল কেন?

এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশের দাবি, নোটবন্দির পরে খুচরোর প্লাবনে জেরবার হচ্ছিলেন বুকিং কাউন্টারের কর্মীরা। প্রতিদিন বিভিন্ন স্টেশনে কয়েক হাজার কয়েন গুনে তা জমা দিতেই কয়েক ঘণ্টা করে সময় লেগে যাচ্ছিল। পাশাপাশি, রোজ খুচরোতেই কয়েক লক্ষ টাকা করে জমা পড়ছিল। সেই অবস্থা এড়াতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।

মেট্রোয় স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করেন প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী। বাকিরা টোকেন কেনেন। পুরনো ব্যবস্থা উঠে যাওযায় এক যাত্রীর মন্তব্য, “প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা তো ছিলই। এখন আবার বুকিং কাউন্টারেও অপেক্ষা বেড়েছে। পরিষেবা আর স্মার্ট হল কই?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE