দরাদরি: ম্যাচের টিকিটের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপে।
সি ব্লক টিকিটস্। (এসআরকে স্ট্যান্ডের নীচে) মূল্য- ২৩০০।
ডি ব্লক— ইডেন গার্ডেন্স। কিউ-২ টিকিটস্। মূল্য -১০০০!
ক্লাব হাউস টিকিট চাই? দাম ৪০০০।
শুক্রবার ইডেন গার্ডেন্সে ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ভাবেই চড়া দামে দেদার ‘ব্ল্যাক’ হল সেই খেলার টিকিট।
একটি গ্রুপে সংক্ষিপ্ত বিবরণ। তা ঘিরেই জমিয়ে দরাদরি। ডি ব্লকের ৫০০ টাকার টিকিটের দাম কখনও চড়েছে ১০০০ টাকায়, সি ব্লকের ১৩০০ টাকার টিকিটের দর উঠেছে ২৩০০ টাকাতেও। সাধারণ ব্লকের টিকিটের পাশাপাশি, এ ভাবেই চড়া দামে দেদার বিক্রি হয়েছে ক্লাব হাউসের টিকিটও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট পড়ছে প্রতি মিনিটে। সেখানেই ম্যাচের গুরুত্ব বুঝে টিকিটের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। দিনের শেষে একই ব্লকে পাশাপাশি সিটে কেউ বসলেন ১০০০ টাকা দিয়ে, কেউ বা ১৬০০-এ!
নির্দিষ্ট কোনও ওয়েবসাইটও নয়। যেমন ইচ্ছে, খোলাখুলি সোশ্যাল মিডিয়াতেই ১৪০০-রটি ২৩০০, ১২০০-রটি ২০০০— হাঁকাহাঁকি চলল দিনভর। যে গ্রুপে রোজ জামাকাপড়, গয়নাগাঁটি বিকোয় অথবা থাকে ফ্ল্যাট-বাড়ি ভাড়ার পোস্ট, সেখানেই আইপিএল মরসুমে চলছে এই টিকিট-দরাদরি। কটা টিকিট লাগবে, জানালেই চলে আসছে ফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করে ‘ব্ল্যাকার’-এর পছন্দমতো জায়গায় পৌঁছলেই হল। ওই ব্ল্যাকারদের মধ্যে এক জন জানালেন, আগের ম্যাচগুলিতে মাঠের আশপাশেই থাকছিলেন তাঁরা। খেলা দেখতে ঢোকার আগে টাকা দিয়ে হাতে টিকিট পেয়ে যাচ্ছিলেন সকলে। কিন্তু শুক্রবার মাঠের চারপাশে পুলিশের নজরদারির কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে তাঁদেরও অন্য জায়গা দেখে নিতে হয়েছে।
শুধু চড়া দামের টিকিটের বিজ্ঞাপনই নয়, সেই গ্রুপে যখন-তখন পড়ছে টিকিটের দাবিও। যেমন এ দিনের ম্যাচের ছ’টি টিকিট চাই এক যুবকের। পরপর সিটের টিকিট মিলবে কি না, তা জানতে চেয়ে পোস্ট করে দিয়েছেন তিনি। সেই পোস্টের উত্তরও এসেছে সঙ্গে সঙ্গে। ৫০০ টাকার টিকিটের দাম কেউ হেঁকেছেন ১৫০০, আবার কেউ কম দামে দিচ্ছেন দাবি করে, এক-একটির দাম চেয়েছেন ১০০০ করে।
‘ব্ল্যাকার’-এর সঙ্গে কথোপকথনের স্ক্রিনশট। নিজস্ব চিত্র
কিন্তু এত খোলাখুলি ইন্টারনেটে টিকিট ব্ল্যাকের খবর কি পৌঁছয়নি কলকাতা পুলিশের কানে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। এর আগে মাঠের বাইরে কম দামে টিকিট কিনে ম্যাচের দিন চড়া দামে টিকিট বিক্রির ছবি ধরা পড়েছে। পুলিশের নাকের ডগাতেই লোকজনকে ডেকে নিয়ে গিয়ে টিকিট ‘ব্ল্যাক’ করতেও দেখা গিয়েছে বেশ কয়েক জনকে। সে সব কানে আসতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন খোলাখুলি টিকিট ‘ব্ল্যাকের’ ব্যবসা চলছে কী ভাবে, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
তবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অভ্যস্ত অনেকেরই পাল্টা যুক্তি, এই চক্র ধরা সহজ নয়। তাঁদের বক্তব্য, এক-একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে হাজার হাজার গ্রুপ থাকে, সবের উপরে নজর রাখা কার্যত অসম্ভব। পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, কোনও অভিযোগ জমা না পড়ায় এ নিয়ে কোনও তদন্ত শুরু করা হয়নি। যুগ্ম-কমিশনার (অপরাধদমন) প্রবীণ ত্রিপাঠিকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। মেলেনি মেসেজের উত্তরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy