Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মাঝরাতের ট্রমা কেয়ারে অমিল জরুরি পরিষেবা

স্থানীয় সূত্রে খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহিমা মান্নার শুক্রবার দুপুর থেকে তীব্র জ্বর, বমি ও প্রচণ্ড পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে না কমায় রাতে এলাকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয় মহিমা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০২:৩৩
Share: Save:

জ্বর, বমি সঙ্গে অসহ্য পেটের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ষোলো বছরের মেয়েটি। কী কারণে যন্ত্রণা, তা জানতে প্রয়োজন ইউএসজি বা সিটি স্ক্যান। কিন্তু বেশি রাতে কোথাও সেই সুযোগ না পেয়ে শেষে পরিচিত এক চিকিৎসকের পরামর্শে মেয়েটিকে নিয়ে পরিজনেরা ছুটলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার বিভাগে। কারণ তাঁরা জেনেছিলেন, সেখানে সারা রাত ওই পরিষেবা মেলে। কিন্তু বাস্তবে তা তাঁরা পাননি বলেই অভিযোগ।

কিশোরীর পরিজনেদের অভিযোগ, প্রথমে কেউ কথাই শুনতে চাননি। পরে পরিচিত চিকিৎসক নিজে ফোনে সিটি স্ক্যানের বিষয়ে ওই ট্রমা কেয়ার সেন্টারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে তাঁদের জানানো হয় সিটি স্ক্যান করার টেকনিশিয়ান নেই। এর পরে ফের ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ট্রমা কেয়ার বিভাগে কিশোরীর পেটের ডিজিট্যাল এক্স-রে করা হয়।

ট্রমা কেয়ার বিভাগে ২৪ ঘণ্টা এমন পরীক্ষা চালু থাকার কথা থাকলেও বেলুড়ের বাসিন্দা ওই কিশোরী সেই সুবিধা পেল না কেন? আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যাল বলেন, ‘‘পিপিপি মডেলে চলা ওই সংস্থার তো ২৪ ঘণ্টাই পরিষেবা দেওয়ার কথা। কেন এমন হল জানি না। অভিযোগ পেলে নিশ্চয় খতিয়ে দেখব।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহিমা মান্নার শুক্রবার দুপুর থেকে তীব্র জ্বর, বমি ও প্রচণ্ড পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে না কমায় রাতে এলাকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয় মহিমা। তখন তার শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। রক্ত পরীক্ষা করে দেখা যায় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৬। রাতে ওই হাসপাতালে ইউএসজি বা সিটি স্ক্যান করার ব্যবস্থা না থাকায় এবং রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় চিকিৎসকেরা তাকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করে দেন।

কিশোরীর বাবা বাপি মান্না বলেন, ‘‘এক পরিচিতের মাধ্যমে কলকাতার একটি বেসরকরি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব জানাই। তিনিও ইউএসজি বা সিটি স্ক্যান করতে বলেন।’’ কিন্তু রাত ১২ নাগাদ বালি-বেলুড়ে কোথাও সেই সুযোগ না পাওয়ায় আর জি করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাপি জানান, তাঁর এক বন্ধু আর জি কর হাসপাতালের ওই সংস্থায় ফোন করে সিটি স্ক্যানের বিষয়ে নিশ্চিতও হয়েছিলেন। ‘‘কিন্তু পৌঁছনোর পরে সেই পরিষেবা মিলল না। মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক তার পরে অভিযোগ করব।’’

পরিবার সূত্রে খবর, ওই রাতেই মহিমাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা জানান, প্রাথমিকভাবে তার জরায়ুতে সিস্ট, শরীরে আয়রনের মাত্রা কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midnight Trauma care Belur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE