প্রতীকী ছবি।
ফ্ল্যাট-বাড়ি-জমির মিউটেশনই হোক বা সম্পত্তিকরে কোনও গলদ, কলকাতা পুরসভায় কোনও প্রয়োজনে গিয়ে অযথা হয়রানির অভিযোগ নতুন নয়। যে কারণে পুরভবনের আনাচে-কানাচে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালাল-চক্র। পুরকর্তারাও সে কথা জানেন। কিন্তু স্বীকার করেন না। তবে ক্রেতা-সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে সম্প্রতি এ কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘‘পুরসভায় ঠিক সময়ে পরিষেবা মেলে না। অযথা দেরি করা হয়।’’ এক শ্রেণির দালাল-চক্র যে এর পিছনে আছে, তা জানাতেও দ্বিধা করেননি তিনি। এ বার কাজে সময় বেঁধে দিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করল পুর প্রশাসন।
পুরকর্মীদের একাংশই জানাচ্ছেন, বিল্ডিং, কর মূল্যায়ন থেকে স্বাস্থ্য, লাইসেন্স, বস্তি, বিনোদন— প্রায় সব বিভাগেই দৌরাত্ম্য দালালদের। ঠিক সময়ে কাজ হয় না বলেই দালালদের চক্করে পড়তে হয় অনেককে। সম্প্রতি কলকাতায় এলাকা-ভিত্তিক কর ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে নতুন এই পদ্ধতিতে আবেদনপত্র পূরণ করতেও অনেককেই আলাদা করে পয়সা দিতে হয়েছে দালালদের। মেয়র, পুর কমিশনার থেকে পুরকর্তারা যে এ সব জানেন না, তা নয়। তবে দীর্ঘকালের ওই ‘ব্যবস্থা’ কেউ ভাঙতে পারেননি। এ বার সমস্ত কাজের ক্ষেত্রেই একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিচ্ছে পুর প্রশাসন। সম্প্রতি পুরবোর্ড এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
কলকাতা পুর প্রশাসন এ বার রাজ্যের জনপরিষেবা অধিকার আইন মেনে কাজ করতে চায়। ওই দফতর দেখেন সাধনবাবুই। মন্ত্রী বলেন, ‘‘কলকাতা পুর প্রশাসন আমাদের চিঠি দিয়ে কাজের নির্ঘণ্ট জানিয়েছে। সেই নির্ঘণ্ট মেনে কাজ হচ্ছে কি না, তা দেখা হবে। প্রয়োজনে দফতরের অফিসারেরা পুর কমিশনারের সঙ্গে বিশদে আলোচনা করবেন।’’ সময়ে পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই আইন জরুরি বলে জানান তিনি।
মেয়র ও পুর কমিশনারের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের জনপরিষেবা আইন মেনে পুর পরিষেবার নির্ঘণ্ট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে যে কোনও বাড়ির মিউটেশনই সাত দিনের মধ্যে করতে হবে। ঠিকা, ওয়াকফ সম্পত্তি বা কলোনির মিউটেশন করাতে গেলে সময় ৬০ থেকে ১২০ দিন। পানীয় জলের বড় সংযোগ নিতে হলে ২৩ দিন। রাস্তায় আলো না থাকলে বা বৈদ্যুতিক সংযোগ খারাপ হয়ে গিয়ে থাকলে আট দিনের মধ্যে সারাতে হবে। বাড়িতে নিকাশির সংযোগ দিতে হবে ১৫ দিনে। কেউ গাড়ি পার্ক করার অনুমতি চাইলে ২৩ দিনের মধ্যে আবেদন মঞ্জুর করতে হবে।
পুরসভার এক আমলা বলেন, ‘‘আগেও আমাদের কাজের সময়-তালিকা ছিল। তা হল সিটিজেন্স চার্টার। তবে এ বার ওই চার্টারে থাকা সময় আরও কমানো হয়েছে।’’ পুর প্রশাসন তাদের বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করেছে, পরিষেবার অনেক কাজ সময়ে হওয়া উচিত। নির্ঘণ্ট সকলের কাছে পৌঁছলেই তা চালু করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো এবং জরিমানার কথাও বলা রয়েছে জনপরিষেবা অধিকার আইনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy