হুঁশ নেই: দু’মাস আগের দুর্ঘটনার পরেও চিংড়িঘাটায় সাইকেলের অবাধ গতি।
সেই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে দু’মাসেরও বেশি সময়। এখনও পাল্টায়নি চিংড়িঘাটা মোড়ের চেনা ছবিটা। ওই মোড়ে এখনও বিপজ্জনক ভাবে সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এই ঝুঁকির পারাপারে রাশ টানতে এ বার ওই এলাকায় একটি আন্ডারপাস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। কলকাতা পুলিশের ডি সি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘চিংড়িঘাটা মোড়ে পথচারীদের পাশাপাশি সাইকেল পারাপার কী ভাবে পুরোপুরি বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে আমরা বিধাননগর পুলিশ, কেএমডিএ এবং খড়্গপুর আইআইটি-র ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। ওখানে দু’টি ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল। তবে ফুটব্রিজ তৈরি হলেও সেখান দিয়ে সাইকেল নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। সেই অসুবিধার কথা ভেবে ওই এলাকায় একটি আন্ডারপাস তৈরিরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্ডারপাস দিয়ে সাইকেল নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’
গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে চিংড়িঘাটা মোড়ে বাসের ধাক্কায় বিশ্বজিৎ ভুঁইয়া ও সঞ্জয় বানু নামে দুই সাইকেল-আরোহীর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা পথে নেমে চারটি বাস জ্বালিয়ে দেয়। তার পরেও অবশ্য চিংড়িঘাটা মোড়ে ঘটেছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। প্রশ্ন উঠেছে, ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরেও কেন ওই বিপজ্জনক মোড়ে সাইকেল নিষিদ্ধ করতে পারল না পুলিশ?
পাশাপাশি চলছে জেব্রা ক্রসিং না মেনে যেখান দিয়ে খুশি পারাপারও।
বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের এক পুলিশ অফিসারের মতে, সুকান্তনগর ও শান্তিনগর এলাকার প্রচুর মানুষ ওই মোড় দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এলাকার প্রচুর ছাত্রছাত্রীও বেলেঘাটার দিকে স্কুল-কলেজে পড়তে আসেন। তা ছাড়া, বাজারহাট করতেও আসেন অনেকে। এমনকী, বেলেঘাটার পানীয় জলের উপরেও সুকান্তনগর এলাকার বহু মানুষ নির্ভরশীল। অনেকখানি হেঁটে আসতে হয় বলে অনেকেই সাইকেল ব্যবহার করেন। তাই ওই মোড়ে সাইকেল চালানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছে পুলিশ। বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের দাবি, আন্ডারপাস দিয়ে সাইকেল যাওয়ার ব্যবস্থা থাকলে এই সমস্যা মিটবে।
পুলিশ জানিয়েছে, চিংড়িঘাটা মোড়ে ওই দুর্ঘটনার পরে পুলিশ দু’টি ফুটব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা আগেই করেছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ মানুষই ফুটব্রিজ ব্যবহার করতে চান না। বরং আন্ডারপাস অনেক বেশি মানুষ ব্যবহার করেন। ভিআইপি রোডের যানজট কমাতে কেষ্টপুর, বাগুইআটি, জোড়ামন্দির ও রঘুনাথপুরে যে আন্ডারপাস তৈরি হয়েছে, তা প্রচুর মানুষ ব্যবহার করছেন। ফলে ভিআইপি রোডের ওই এলাকায় যানজট এখন প্রায় নেই বললেই চলে। বিধাননগর পুরসভার কমিশনার পৃথা সরকার বলেন, ‘‘এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু কলকাতা পুরসভার বাসিন্দারাই নন, বিধাননগরের বাসিন্দারাও খুবই উপকৃত হবেন।’’
ছবি: শৌভিক দে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy