Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাংসে আতঙ্ক কেন, বুঝছেন না মেয়র

মাস খানেক আগে বজবজ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ভাগাড়ের পচা মাংস। অভিযোগ উঠেছিল, শহরের বিভিন্ন জায়গায় সেই মাংস নিয়মিত বিক্রি করা হত।

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে প্রশ্নের মুখে এই ধরনের মাংস। ফাইল চিত্র

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে প্রশ্নের মুখে এই ধরনের মাংস। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে মাংসে মুখ বেঁকাচ্ছেন শহরবাসী। এমনকি পুরসভার যে কোনও অধিবেশন, বৈঠক এবং সভা থেকেও মাংস এখন ব্রাত্য। অথচ মাংস না খাওয়ার কারণই দেখতে পারছেন না মেয়র স্বয়ং।

মাস খানেক আগে বজবজ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ভাগাড়ের পচা মাংস। অভিযোগ উঠেছিল, শহরের বিভিন্ন জায়গায় সেই মাংস নিয়মিত বিক্রি করা হত। ওই ঘটনার সূত্র ধরেই রাজাবাজার, মানিকতলা এলাকার হিমঘরে হানা দেয় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় পচা মাংস। পরে তা পাঠানো হয় পরী‌ক্ষার জন্য। সেই ঘটনায় ধরপাকড়ও করে পুলিশ। তার পরেই শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাগাড়ের মাংস বিক্রি করা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। নিউ মার্কেট চত্বরেও ওই ধরনের পচা মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে খবর পায় পুলিশ। ভাগাড়-কাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

পরিস্থিতি বুঝে মুখ্যমন্ত্রী ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করেন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ওই কমিটি ভাগাড়ের বিষয়টি দেখবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। এমনকি আলাদা করে তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিআইডি-কে। এমন পরিস্থিতে পুরসভার সোমবারের অধিবেশনে ভাগাড় নিয়ে প্রস্তাব তুলতেই দেয়নি পুর প্রশাসন। যুক্তি দেখানো হয়েছিল, রাজ্য সরকারের কমিটি বিষয়টি দেখছে। আলাদা কিছু করার নেই। অধিবেশনে মাংসের পদ কেন বাতিল, তা নিয়ে সে দিন মুখ খোলেননি মেয়র-সহ কেউই। কিন্তু মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র বলেন, ‘‘মাংস খাওয়ার উপরে কোনও বিধিনিষেধ আছে বলে জানা নেই। ভয় থাকবেই বা কেন? গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়।’’

স্বভাবতই পুর মহলে প্রশ্ন উঠছে, কোনটা গুজব বলছেন মেয়র? পুলিশই তো জানিয়েছে, বজবজ থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস খাওয়ার অযোগ্য। তা যে ভাগাড়ের মাংস সেই অভিযোগও মেনে নিয়েছে প্রশাসনিক মহল। সেই মাংস পরীক্ষা করতে নমুনাও পাঠানো হয়েছে। যদিও প্রায় এক মাস হতে চলল, অথচ সেই রিপোর্ট কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ধন্দ শুরু হয়েছে। মেয়রের অবশ্য দাবি, পুরসভা এ নিয়ে কিছু বলবে না। এ জন্য সরকারের কমিটি রয়েছে। তবে তিনি এটাও জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভা ধাপার চুল্লিতে মৃত পশু দাহ করবে। পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে ধাপায় বেওয়ারিশ শবদাহের জন্য যে চুল্লি রয়েছে, সেখানেই মৃত পশু দাহ করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর বেওয়ারিশ শবদাহের জন্য ধাপাতেই অন্য দু’টি চুল্লি প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে শহরের বিভিন্ন হোটেল, রেস্তরাঁ তো বটেই, এমনকি বাড়িতেও মাংস না খাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যার রেশ পড়েছে নবান্ন থেকে পুরসভায়। মেয়র যতই মাংস না খাওয়ার কারণ দেখতে না চান, পুরসভার ফুড সেফটি অফিসারেরা কিন্তু ভেজাল খাবারের অভিযানে ফ্রিজে রাখা মাংসের মানও যাচাই করছেন। বর্তমানে তাঁদের অভিযানের তালিকায় তাই বিশেষ ভাবে রয়েছে রোল-বিরিয়ানির দোকানও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mayor KMC Sovan Chatterjee Meat Carcass
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE