Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বৌমা ধর্ষিতাই হন, অভিযোগে অনড় শাশুড়ি

গত ১৭ এপ্রিল ঝড়ের রাতে সেই তরুণীর মৃত্যু-রহস্যের কিনারা হয়নি এত দিনেও। তবে মৃতার শাশুড়ি এখনও অনড় তাঁর অভিযোগে। মঙ্গলবার বিকেলেও তিনি বলেন, ‘‘আমার বৌমার শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। ওকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলেই আমার বিশ্বাস।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

গড়িয়া স্টেশনের কাছে পড়ে থাকা সেই নারীদেহ নিছকই দুর্ঘটনার শিকার? না কি ধর্ষণের পরে প্রমাণ লোপাটের মতলবে কেউ ধাবমান লরির নীচে তাঁকে ফেলে দিয়েছিল?

গত ১৭ এপ্রিল ঝড়ের রাতে সেই তরুণীর মৃত্যু-রহস্যের কিনারা হয়নি এত দিনেও। তবে মৃতার শাশুড়ি এখনও অনড় তাঁর অভিযোগে। মঙ্গলবার বিকেলেও তিনি বলেন, ‘‘আমার বৌমার শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। ওকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলেই আমার বিশ্বাস।’’

স্থানীয় সোনারপুর থানার পুলিশ অবশ্য এখনও এই ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করছে। পুলিশ কর্তাদের দাবি, চলন্ত লরির নীচে দেহটি হেঁচড়ে যাওয়ার সময়েই শরীর থেকে পোশাক খুলে গিয়েছিল। ধর্ষণের প্রমাণ এখনও মেলেনি। কিন্তু গড়িয়া স্টেশনের কাছে রেললাইন লাগোয়া রাস্তায় ওই তরুণী নিজের ইচ্ছায় হঠাৎ কেন যাবেন, তা নিয়ে মৃতার শাশুড়ি প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজাবাজারে ব্যাগ কারখানার কাজ সেরে দুর্যোগের মধ্যে শেষ ট্রেন ধরেই ১২ বছরের বড় ছেলের সঙ্গে গড়িয়া স্টেশনে নেমেছিলেন ওই তরুণী। পুলিশের কাছে ছেলের বয়ান, একটি মিষ্টির দোকানের রোয়াকে অসুস্থ অবস্থায় তার মা বসে পড়েন। তখন মিনিট পনেরো হেঁটে কন্দর্পপুরের কাছে বাড়িতে ঠাকুমাকে ডাকতে গিয়েছিল সে। মৃতার শাশুড়ির কথায়, ‘‘বৌমা অসুস্থ শুনে ওখানে যাই। কিন্তু ওকে আমরা খুঁজে পাইনি। সারা রাত খুঁজেও হদিস মেলেনি।’’ তিনি এ দিনও বলেন, ‘‘বৌমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পরে প্রমাণ লোপাট করতেই পিচ রাস্তায় লরির নীচে ফেলে দেওয়া হয় বলে মনে হচ্ছে। আমি সকালে খবর পেয়ে দেখি, ওর পোশাক পাশে পড়ে আছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।

এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব কয়েকটি গণ সংগঠন। সমাজকর্মীদের অনেকের অভিযোগ, পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে অন্য রকম পারিপার্শ্বিক প্রমাণ জোগাড়ে তৎপর নয়। এ বিষয়ে তাঁরা পথে নামছেন। মৃতার শান্তিকামনায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এ দিন সম্পন্ন হয়েছে। তবে পরিবারটি এখনও ঘোর সঙ্কটে। মৃতার স্বামী আগেই মারা গিয়েছেন। তাঁর শাশুড়ি ক্যানসারে কাহিল। মৃতার চারটি ছোট ছেলেমেয়ের মধ্যে বড়টি এই ঘটনার ধাক্কায় মানসিক ভাবে আতঙ্কগ্রস্ত। একটি হোমে রেখে তার শুশ্রূষা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE