Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এক দিকে টিকিট কাউন্টার, অন্য দিকে হাসপাতাল

উত্তর জানা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, রাস্তা পারাপারের ঝুঁকি এড়াতে এক সময়ে সাবওয়ে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তা দ্রুত হিমঘরে চলে যায়।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৭
Share: Save:

টিকিট কাটতে রোগীকে যেতে হয় নতুন ভবনে। চিকিৎসার জন্য রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় পুরনো ভবনে। শিয়ালদহের আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে আসা রোগীদের এ ভাবেই আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের মতো রাস্তা ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বদলাতে তিন তিনবার প্রস্তাব হয়েছে আর তা খারিজ হয়েছে।

কিন্তু কেন?

উত্তর জানা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের তরফে জানা গিয়েছে, রাস্তা পারাপারের ঝুঁকি এড়াতে এক সময়ে সাবওয়ে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তা দ্রুত হিমঘরে চলে যায়। এর পরেই সিদ্ধান্ত হয় স্কাইওয়াক তৈরির। সেটিও এক সময়ে বাতিল হয়ে যায়। তৃতীয় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ফুটব্রিজ তৈরি করার। শেষ পরিকল্পনাটির ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের মত ছিল, হাসপাতালে যাঁরা আসেন, তাঁদের পক্ষে সিঁড়ি ভেঙে ফুটব্রিজ পেরোনো কষ্টকর। সে জন্য সিঁড়ির পরিবর্তে যান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকুক। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

মৌলালি মোড়ের কাছেই এ জে সি বসু রোডের এক ধারে রয়েছে হাসপাতালের পুরনো ভবনটি। রাস্তার বিপরীতে রয়েছে নতুন ভবন। দাঁত সংক্রান্ত অস্ত্রোপচার, রুট ক্যানাল, ফিলিং, দাঁত বাঁধানো এবং জরুরি বিভাগ রয়েছে এই ভবনে। পুরনো ভবনে রয়েছে বাচ্চাদের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা, এক্স-রে, স্কেলিং এবং নায্যমূল্যের ওষুধের দোকান। অথচ টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে শুধুমাত্র নতুন ভবনে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, ২০১২ সালের শুরু থেকে এই ব্যবস্থা চলছে। এর ফলে রোগীদের যে হয়রানি হচ্ছে, তা মানছেন কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকদের অভিযোগ, রোগীদের তো সমস্যা হয়ই, পাশাপাশি তাঁদের সমস্যাও কিছু কম নয়। ব্যস্ত রাস্তা পার হওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এর ফলে সময় নষ্ট হয়। চিকিৎসা করাতে আসা সত্তরোর্ধ্ব সরিৎকুমার দে জানান, নতুন এই ব্যবস্থার কথা তিনি জানতেন না। তাই রাস্তা পার করে প্রথমে পুরোনো ভবনে যান। সেখান থেকে সব শুনে ফের টিকিট কাটতে রাস্তা পেরিয়ে যান নতুন ভবনে। এর পরে আবারও তিনি পুরনো বিল্ডিং-এ যান চিকিৎসা করাতে। কারণ স্কেলিং করার ব্যবস্থা রয়েছে ওই বিল্ডিংয়েই। রোগীদের অভিযোগ, সরিৎবাবুর মতোই প্রতি দিন অসংখ্য রোগীকে এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বড় সমস্যা ছোটদের নিয়েও। তাদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা এক বিল্ডিং-এ। অথচ সেখানে টিকিট কাটার উপায় নেই। ফলে চূড়ান্ত হয়রানি হচ্ছেন রোগীরা।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক আলোচনায় এখন উঠে আসছে ক্যাপসুল লিফট-সহ ফুটব্রিজের প্রস্তাব। যা শুধু হাসপাতালের দু’টি ভবনকে জুড়বে। কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ তপন গিরির বক্তব্য, ‘‘দ্রুত সমস্যা মেটাতে চাইছি। পূর্ত বিভাগ এবং ট্র্যাফিকের সঙ্গে পরিদর্শন করা হয়েছে।’’ সূত্রের খবর, এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজ এবং হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE