ডেঙ্গি কর্মশালায় গরহাজির কাউন্সিলর।
প্রায় তিন মাস ধরে ঢ্যাঁড়া পিটিয়েও লাভ হল না। ডেঙ্গি কর্মশালায় ৩০ শতাংশ কাউন্সিলরকেও টানতে পারল না পুর প্রশাসন। বছরভর মশাবাহী রোগ প্রতিরোধে কী কী করণীয় এবং সে ব্যাপারে মানুষকেই বা কী ভাবে সতর্ক করতে হবে— এ সব নিয়ে শনিবার রবীন্দ্র সদনে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল কলকাতা পুরসভা। তাতে উপস্থিত হয়েছিলেন মাত্র ৪১ জন কাউন্সিলর। যার মধ্যে শাসক দলের মাত্র ৩২ জন। বাকি বিরোধীদের। অথচ ডেঙ্গি প্রতিরোধে দলের নেতা, মন্ত্রী থেকে প্রশাসনের কর্তাদের বারংবার করে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও এত অনীহা কেন? শাসক দলের কাউন্সিলরদের উপস্থিতিই বা এত কম কেন? মুখ খুলতে চাননি পুর প্রশাসনের কর্তারা। পুরসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক রত্না শূর এ দিন বলেন, ‘‘দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ কাউন্সিলর ও পদাধিকারী বাপি ঘোষ এবং অনিন্দ্যকিশোর রাউতের পরিবার শোকগ্রস্ত। আজই বাপির স্ত্রী মারা গিয়েছেন। আর অনিন্দ্যের মায়ের শ্রাদ্ধ ছিল। তাই অনেকে সেখানে ছিলেন বলে আসতে পারেননি।’’
‘ডেঙ্গি প্রতিরোধ বছরভর, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর’— এই স্লোগান নিয়েই চলছে পুরসভার মশাবাহী রোগ প্রতিরোধের কাজকর্ম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশেও মশাবাহী রোগ দমনে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা খুব জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই এ বছর শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় কাউন্সিলরদের সপ্তাহে অন্তত দু’দিন করে পুরসভার মশা-দমনকারী দলের সঙ্গে ঘোরার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ থেকে সেই উদ্যোগেও সামিল হননি অনেক কাউন্সিলর। এ দিনের কর্মশালায় ফের কাউন্সিলরদের সেই বার্তা দেওয়ার ইচ্ছে ছিল পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের। কিন্তু উপস্থিতির হার দেখে যারপরনাই হতাশ হতে হয়েছে তাঁদের।
যদিও শহরের অন্তত একশো জন চিকিৎসক হাজির হয়েছিলেন সেখানে। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ-সহ প্রায় ৩৫টি সমাজসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও যোগ দিয়েছিল ওই উদ্যোগে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, ডেঙ্গি প্রতিরোধে শহরের চিকিৎসকদেরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। জাতীয় পতঙ্গবাহী রোগ নিবারণী প্রকল্পের নির্দেশ অনুযায়ী একটি রূপরেখা উপস্থিত সকলকেই এ দিন দেওয়া হয়েছে। সময়ে হাজির থাকতে না পারার কারণ হিসেবে ওই দুই কাউন্সিলরের পারিবারিক শোকের কথা তোলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি দাবি করেন, ডেঙ্গি দমনের কাজে কলকাতা পুরসভা বছরভর সজাগ রয়েছে। মেয়রের কথায়, ‘‘আট বছর আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বেশি ছিল। এখন তা কমেছে।’’ কখনও সখনও আতঙ্ক ছড়ায়। তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy