ভেঙে গিয়েছে সুভাষচন্দ্র বসুর এই মূর্তি। বৃহস্পতিবার, নারকেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র
নারকেলডাঙার একটি উদ্যানে সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করা করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
নারকেলডাঙার ক্যানাল ইস্ট রোডে খালের ধারে ওই নেতাজি উদ্যান। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় উদ্যানের ভিতর থেকে বিকট আওয়াজ পান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ফাইবারের তৈরি সুভাষ বসুর আবক্ষমূর্তির বেশ খানিকটা অংশ উড়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে রাতে গিয়ে পুলিশ পার্ক থেকে বোমার খোল উদ্ধার করে। তা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, কেউ বা কারা সন্ধ্যায় ওই উদ্যানে ঢুকে বোমা ছোড়ে। যার ফলে মূর্তিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার রাতেই ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগকারী রূপলাল দাস বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে বাম আমলে এই উদ্যানটি তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণে যে বিন্দুমাত্র নজর দেয়নি, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।’’
২০০৭ সালে কলকাতা পুরসভায় ক্ষমতাসীন বাম বোর্ডের আমলে ক্যানাল ইস্ট রোডে খালের ধারে এই উদ্যান তৈরি হয়। অভিযোগ, পুরবোর্ডে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূলের তরফে উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, পার্কের একাধিক জায়গায় রেলিং উধাও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালপাড় এখন দুষ্কৃতীদের আস্তানা হয়ে উঠেছে। তারাই রেলিং ভেঙে পার্কে ঢুকে আলো চুরি করছে। সন্ধ্যার পরে বসছে মদ ও জুয়ার আসর। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি।
বেহাল পার্কে পড়ে রয়েছে বাচ্চাদের রাইড।
উদ্যানের ভিতরে প্রায় পঞ্চাশটি বাতিস্তম্ভ রয়েছে। এ দিন পার্কে গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশ বাতিস্তম্ভেই বাতি উধাও! পার্কের ভিতরের রাস্তাও ভাঙাচোরা। ভেঙে পড়ে রয়েছে বাচ্চাদের দোলনা। সেগুলি এক পাশে ডাঁই করে রাখা। এলাকাবাসীরা জানালেন, পার্ক উদ্বোধন হওয়ার পরে ফোয়ারা চালু ছিল। তা-ও বহু দিন বন্ধ।
স্থানীয় কাউন্সিলর, কংগ্রেসের প্রকাশ উপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে উদ্যানে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের দাবিতে একাধিক বার কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাঁরা নজর না দেওয়াতেই পার্কের এমন অবস্থা।’’ প্রকাশবাবুর অভিযোগ পরোক্ষে মেনে নিয়ে মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার অধীনে প্রায় সাড়ে সাতশো উদ্যান রয়েছে। সব উদ্যানে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা অসম্ভব। তবে কাউন্সিলর যখন বলছেন, আমরা অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনা করব। পুরসভার তরফে ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি ঠিক করে দেওয়া হবে। উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজও শীঘ্রই শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy