প্রতিবন্ধী-বিক্ষোভ: হাওড়ার জিআরপি থানায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
বিকেল পাঁচটা। হাওড়া স্টেশনের জিআরপি থানার সামনে কালো চশমা পরে, হাতে লাঠি নিয়ে জড়ো হলেন জনা আট-দশ যুবক। ‘হায় হায় জিআরপি’ স্লোগান দিতে শুরু করলেন তাঁরা। প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে সেই বিক্ষোভ চলার পরে এক রকম জোর করেই কোল্যাপসিবল গেটে পাহারায় থাকা পুলিশকর্মীদের ঠেলে থানার ভিতরে ঢুকে পড়লেন ওই যুবকেরা। তাঁদের দাবি মেনে তদন্তে নামল রেলপুলিশ।
শনিবার এমনই এক অভূতপূর্ব বিক্ষোভের সাক্ষী রইল হাওড়া স্টেশন চত্বর। বিক্ষোভকারী যুবকেরা প্রত্যেকেই দৃষ্টিহীন। আর এক দৃষ্টিহীন ছাত্রকে মেরে অজ্ঞান করে তাঁর ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই বিক্ষোভ দেখাতে নামেন ওই যুবকেরা।
রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ বাঁকুড়া থেকে শিরোমণি এক্সপ্রেসে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন জীবন রক্ষিত নামে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। হাওড়া থেকে বাস ধরে বিশ্বভারতীতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ওই ছাত্রের অভিযোগ, তিনি যখন স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন স্টেশনের ভিতরেই এক ব্যক্তি তাঁর কাছে জানতে চায়, তিনি কোথায় যাবেন। ওই ছাত্র বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছেন শুনে সেই ব্যক্তি সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।
ওই ছাত্র বলেন, ‘‘স্টেশন থেকে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরে ওই লোকটি আমার মাথায় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করে। আর নাকে একটা গন্ধমাখা রুমাল চেপে ধরে। তার পরে আমার কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরতে বুঝি, এক মহিলা সামনে বসে রয়েছেন। জানতে পারি, আমার সব কিছু খোয়া গিয়েছে। ওই মহিলাই আমাকে বাসে তুলে দেন।’’
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এর আগেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার ব্যাগ ও মোবাইল চুরি গিয়েছিল হাওড়া স্টেশন থেকে। এ দিনের ঘটনার কথা জানাজানি হতেই জীবনের বন্ধুরা দল বেঁধে চলে আসেন হাওড়া স্টেশনে। কিন্তু জিআরপি থানার গেট না খোলায় থানার সামনেই বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। ওই দৃশ্য দেখতে লোকজনের ভিড় জমে যায়।
রেলপুলিশ জানিয়েছে, এ দিন রাতেই ওই ছাত্রদের নিয়ে হাওড়া স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার কাজ শুরু হয়েছে। রেলপুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy