হাতের আঘাত দেখাচ্ছেন ওই মহিলা। রবিবার, নারকেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র
কথা মতো কাজ না করলে ‘রেপ করে দেওয়া হবে’। মাসখানেক ধরে তাঁদের এমনই হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন নারকেলডাঙা মেন রোডের বাসিন্দা এক মহিলা।
এর পরেই শনিবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ওই যুবকেরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। মারধরের পরে মহিলার হাতে ব্লেড চালিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর ননদও। আহতদের এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই ফুলবাগান থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তের পরেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেছে।
ঘটনাটি প্রসঙ্গে এলাকার বিধায়ক সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, সে এলাকায় তৃণমূল করে। আমি ওকে ডেকে কথা বলেছি। দু’পক্ষের বক্তব্যও শুনেছি। পুলিশকে বলেছি তদন্ত করতে। তারাই যা করার করবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারী মহিলা তাঁদের জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ নারকেলডাঙা মেন রোডে তাঁর বাড়িতে দলবল নিয়ে হামলা চালায় ছোটন মণ্ডল নামে ওই যুবক। ঘরের আলমারি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি, ওই মহিলাকে মারধর করা হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর ননদ। ঘটনায় সময়ে পাশের ঘরে ছিলেন মহিলার শাশুড়ি। ক্যানসারে আক্রান্ত ওই বৃদ্ধাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। মহিলা দাবি করেছেন, হামলাকারীরা তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দিয়েছে। গায়ে হাত দেওয়ার পাশাপাশি বলেছে, ‘ধর্ষণ করে ফেলে দিলেও কেউ আটকাতে পারবে না’।
রবিবার ওই মহিলার ননদ বলেন, ‘‘আমরা পাশাপাশি থাকি। শনিবার বিকেলে ভাইয়ের বাড়ি গিয়েছিলাম। ভাইয়ের দু’বছরের মেয়েকে ওর মা দুধ খাওয়াচ্ছিল। তখনই ঘরে ঢুকে হামলা চালায় ছোটনরা। আমাদের পোশাক ছিঁড়ে দিয়েছে। চিৎকার শুনেও আশপাশের কেউ আসেননি।’’ অভিযোগকারী মহিলা বলেন, ‘‘এর পরে বাড়িতে থাকতে ভয় করছে। পুলিশ তো এখনও কিছুই করল না। ওরা আবার হামলা করতে পারে।’’
সেই সঙ্গে ওই মহিলার দাবি, ‘‘কিছু দিন ধরেই ছোটন ও তার লোকজন হুমকি দিচ্ছিল, ওদের ক্লাবে গিয়ে রাজনীতি করতে হবে। আমরা রাজনীতি করতে চাই না। কথা মতো কাজ না করলে রেপ করে দেবে বলেছে।’’ বিষয়টি তিনি সাধনকে জানিয়েছেন বলেও দাবি মহিলার।
যদিও অভিযুক্ত ছোটনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। কেউ দেখল না, অথচ আমরা এত কিছু করে ফেললাম?’’ পুলিশ অবশ্য বলছে, এর পিছনে পুরনো হুমকির ঘটনাও থাকতে পারে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তার পরেই পুরো ঘটনা স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy