প্রতীকী ছবি।
এ যেন চুনোপুঁটির জালে ধরা পড়ল রাঘব বোয়াল।
রাতের শহরে প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া-ইউনিভার্স ঊষসী সেনগুপ্তের নিগ্রহের ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছিল কলকাতা পুলিশ। বেপরোয়া গাড়ি রুখতে তাই প্রতিদিন রাতেই কলকাতার প্রায় সর্বত্র চলছে গাড়ি ও বাইক তল্লাশি। সেই তল্লাশির জালেই শনিবার রাতে ধরা পড়ল হাওলার টাকা। বড়বাজার এলাকা থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে পাচার হওয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়া প্রায় ৩৭ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার হল শহরের রাস্তা থেকে। দুই যুবকের থেকে ওই টাকা আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সব মিলিয়ে মোট ৫৩ লক্ষেরও বেশি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে লালবাজার জানাচ্ছে। পুলিশকর্তারা জানান, ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
লালবাজারের খবর, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নির্দেশে রাতের শহরে বেপরোয়া গাড়ি রুখতে শনিবার রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ‘ব্লক রেড’ চলেছে। বড়বাজার এলাকাতেও রাস্তা আটকে গাড়ি তল্লাশির তোড়জোড় করছিলেন পুলিশকর্মীরা। আচমকাই তাঁদের নজরে পড়ে দুই যুবকের গতিবিধি। তদন্তকারীরা জানান, দুই যুবক কাঁধে ভারী ব্যাগ ঝুলিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের চেহারা অনুযায়ী ওই ভারী ব্যাগ বয়ে নিয়ে যাওয়া কিংবা ওই রাতে ওই জায়গায় তাঁদের উপস্থিতি— পুলিশের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করে। তার পরেই দুই যুবককে থামিয়ে তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। পুলিশ জানায়, ওই দুই যুবকের নাম মনোজ ঝা এবং সুমন মণ্ডল। তাঁদের থেকে প্রথমে ৩৭ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা আটক করা হয়। হাওয়ালার টাকা পাচারের অভিযোগ তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এর পরে তাঁদের জেরা করে শনিবার রাতেই পুলিশ হানা দেয় নন্দরাম মার্কেটে। সেখান থেকে লালচাঁদ ভান্ডু নামে ওই চক্রের আরও এক জনকে সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকা-সহ গ্রেফতার করা হয়।
এক পুলিশকর্তা জানান, বেপরোয়া মোটরবাইক ধরতে এ ভাবে বিভিন্ন মোড়ে রাস্তা আটকে ‘ব্লক রেড’ আগে হয়নি। দু’চাকা, চার চাকা— সব গাড়িকেই তল্লাশি করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার নিজেই বাসভবনে বসে তল্লাশি অভিযানের তদারকি করেছেন। রাস্তায় ছিলেন ডেপুটি কমিশনার ও যুগ্ম কমিশনার পদের পুলিশকর্তারাও।
এই অভিযান ছাড়াও শনিবার রাতে বিভিন্ন থানা, ট্র্যাফিক গার্ড ও গোয়েন্দা বিভাগের তল্লাশি অভিযানেও প্রচুর গ্রেফতার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় ৩২৬ লিটার বেআইনি মদও। রবিবার গভীর রাতেও বিভিন্ন মোড়ে অভিযান চলে বলেই খবর।
লালবাজারের খবর, বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানো, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর মতো নানান অভিযোগে শুধু ট্র্যাফিক বিভাগের হাতেই ২১৭৮ জন ধরা পড়েছেন। ৭৭টি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর বাইরে থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের হাতেও আরও লোক ধরা পড়েছে। মোটরবাইক ধরার সময়ে এজেসি বসু রোড এবং লি রোডে গোলমালও হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, গোলমাল থামাতে লাঠিও চালিয়েছেন পুলিশকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy