Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Madhyamik Examination

বাবা পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাননি, অটো করে পরীক্ষা দেওয়ানোর ভার নিল পুলিশকাকুরা

এ দিন পরীক্ষার্থীদের পাশে সারাদিনই ছিল কলকাতা পুলিশ।

পরীক্ষার্থীকে অটো করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সিঁথি থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

পরীক্ষার্থীকে অটো করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সিঁথি থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

সোমনাথ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:৩৭
Share: Save:

মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় কোনও পরীক্ষার্থী সমস্যায় পড়লে, সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও তেমনই আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেটা যে শুধু কথার কথা নয়, তা এ দিন বুঝিয়ে দিলেন পুলিশ আধিকারিকেরা।

পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে কেউ অ্যাডমিট আনতে ভুলে গিয়েছে, কারও রাস্তা চিনতে অসুবিধা হচ্ছিল, এমনকি বাবা-মায়ের সম্পর্কের টানাপড়েনের জন্য কারও পরীক্ষা দেওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে— এমন নানা সমস্যায় ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গেল কলকাতা পুলিশকে।

অ্যাডমিট কার্ড ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিল ফুলবাগানের নিউ ন্যাশনাল হাইস্কুলের ছাত্রী অনীষা সিংহ। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়। কী হবে? কিছুক্ষণ পরই তো পরীক্ষা? চিন্তায় কান্নাকাটি জুড়ে দেয় ওই পরীক্ষার্থী।বাড়িতে কোথায় অ্যাডমিট রেখেছিল, তা মনে করতে পারছিল না অনীষা। সময় নষ্ট না করে, বেলেঘাটা থানার ওসি-র গাড়িতে ছাত্রী এবং অভিভাবককে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন আধিকারিকেরা। শেষ পর্যন্ত মুখে হাসি ফুটল অনীষার। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সে বাণী বিদ্যামন্দির গার্লস হাইস্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্রেও পৌঁছে যায়।

ত্রাতার ভূমিকায় দেখা গেল কলকাতা পুলিশকে। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: এ বারও মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁস? খতিয়ে দেখছে পর্ষদ​

সিঁথিতে অমিয়বালা বালিকা বিদ্যালয়ে সিট পড়েছিল অনামিকা পালের। কিন্তু বাবা-মায়ের সম্পর্কের টানাপড়েন, আদৌ পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল অনামিকা। বাবা চাইছিলেন না, মেয়েকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে আগে থেকেই জানিয়েছিল। সিঁথি থানার পুলিশ তার জন্য একটি অটো ঠিক করে দেয়। এক মহিলা পুলিশ অফিসার তাকে অটো করে পরীক্ষা কেন্দ্রেই শুধু পৌঁছে দেননি, পরীক্ষা শেষে ওই অটো করেই বাড়িতে পৌঁছে দেন তিনি।

আরও পড়ুন: শুরু হল মাধ্যমিক, কলকাতার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখলেন নগরপাল​

বাগবাজারের মাল্টিপারপাসের ছাত্রীর পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছিল হোলি চাইল্ড স্কুলে। শ্যামবাজারে এসে ওই ছাত্রী এবং তার অভিভাবক রাস্তা গুলিয়ে ফেলেন। এদিক ওদিক ঘুরতে গিয়ে সময় নষ্টও হয়ে যায়। অগত্যা পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে সমস্যা সমাধান। ত্রাতা সেই কলকাতা পুলিশ।

বেহালা থেকে টালা। খিদিরপুর থেকে কালীকাপুর— এ দিন পরীক্ষার্থীদের পাশে সারাদিনই ছিল কলকাতা পুলিশ। ছোট-বড় যে কোনও সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। দিনের শেষে মুখে চওড়া হাসি ফুটেছে সমস্যায় পড়া পড়ুয়াদেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE