Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বেওয়ারিশ দেহ চিনতে পুলিশের হাতে ট্যাব

পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি হোটেল থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা গৌতম জৈন। পরিবারের তরফে ওই থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। তার দিন পাঁচেক পরে গঙ্গার বাজেকদমতলা ঘাট থেকে পচাগলা, দাবিদারহীন এক যুবকের দেহ উদ্ধার করেন উত্তর বন্দর থানার পুলিশকর্মীরা। তবে মৃতদেহটি যে পার্ক স্ট্রিট থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ওই যুবকেরই, তা জানতে আরও পাঁচ দিন লেগে যায় পুলিশের।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১০
Share: Save:

পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার একটি হোটেল থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন দিল্লির বাসিন্দা গৌতম জৈন। পরিবারের তরফে ওই থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। তার দিন পাঁচেক পরে গঙ্গার বাজেকদমতলা ঘাট থেকে পচাগলা, দাবিদারহীন এক যুবকের দেহ উদ্ধার করেন উত্তর বন্দর থানার পুলিশকর্মীরা। তবে মৃতদেহটি যে পার্ক স্ট্রিট থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ওই যুবকেরই, তা জানতে আরও পাঁচ দিন লেগে যায় পুলিশের। অথচ পার্ক স্ট্রিট থানা থেকে উত্তর বন্দর থানার দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার।

শুধু এই একটি ঘটনাই নয়। গঙ্গা বা কোনও জায়গা থেকে দাবিদারহীন দেহ উদ্ধারের পরে তা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে পুলিশকর্মীদের দিকে বার বার গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। তাতে বার বার বিব্রত হতে হয়েছে লালবাজারকেও। কিন্তু এ বার সেই বিড়ম্বনার অবসান ঘটতে চলেছে।

দাবিদারহীন মৃতদেহ শনাক্তকরণের পদ্ধতিতে গতি আনতে এ বার ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের হাতে ট্যাব তুলে দিচ্ছে লালবাজার। এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রিভার ট্রাফিককে দিয়ে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নির্দেশ, গঙ্গা থেকে কোনও দাবিদারহীন দেহ উদ্ধার হলে সঙ্গে সঙ্গেই তার ছবি তুলতে হবে ওই ট্যাবে। সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে তৈরি করতে হবে দেহের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন জিনিসের তালিকাও। আর ওই গোটা বিবরণ সঙ্গে সঙ্গে লালবাজারের ‘মিসিং পার্সন্স পোর্টাল’-এ আপলোড করতে হবে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ‘মিসিং পার্সন্স পোর্টাল’-এ নিখোঁজদের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদেরও বিবরণ থাকে। যা খুব সহজেই যে কোনও পুলিশ আধিকারিক দেখতে পারেন। তাই যে কোনও দাবিদারহীন দেহের সঙ্গে ওই ‘মিসিং পার্সন্স পোর্টাল’-এ থাকা কোনও নিখোঁজ ব্যক্তির মিল রয়েছে কি না, তা খুব সহজেই জানতে পারবেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, রাজ্যের যে কোনও থানা এর ফলে খুব সহজেই দাবিদারহীন দেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারবে।

লালবাজার সূত্রে খবর, এত দিন কোনও দাবিদারহীন দেহ উদ্ধার হলে তার ছবি তুলে ই-মেল করে দেওয়া হত সব থানায়। তবে তা দ্রুততার সঙ্গে হত না বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, থানার আধিকারিকেরা সেই ই-মেল গুরত্ব দিয়ে দেখতেন না বলেও মাঝেমধ্যে অভিযোগ ওঠে। তাই কোনও দাবিদারহীন দেহ শনাক্তের ক্ষেত্রে অনেক সময় লেগে যেত।

কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পার্ক স্ট্রিটের হোটেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া যুবকের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছিল। এটি পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নজরে আসার পরেই তিনি বন্দর এলাকার চারটি থানা এবং রিভার ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন এই ব্যবস্থা কার্যকর করার নির্দেশ দেন। সেই মতো দেহ উদ্ধারের দায়িত্বে থাকা রিভার ট্রাফিক পুলিশের হাতে ট্যাব তুলে দেওয়া হয়েছে।

লালবাজার সূত্রে খবর, গঙ্গা থেকে দেহ উদ্ধারের ক্ষেত্রে ওই ব্যবস্থা চালু হলেও, খুব তাড়াতাড়ি শহরের বাকি জায়গায় উদ্ধার হওয়া দেহের ক্ষেত্রেও ওই একই ব্যবস্থা চালু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata police recognize tab Bewarish Bodies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE