Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: ফিরে দেখা: আচার্য দীনেশচন্দ্র

দীনেশচন্দ্রকে ফিরে দেখার কাজ করলেন সত্যবতী গিরি ও সনৎকুমার নস্কর, তাঁদের সম্পাদনায় তৈরি হল সার্ধশতবর্ষে আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন/ পুনর্বীক্ষণ (পারুল) বইটি। ১৬ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ ভবনের দ্বিতলে দীনেশচন্দ্রেরই নামাঙ্কিত সভাকক্ষে এটি প্রকাশ করবেন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।    

আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন।

আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন।

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

জন্মের সার্ধশতবর্ষ কিছু দিন আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। উদ্‌যাপনের তেমন কোনও ঘনঘটা হয়নি। এমন বিস্মরণ কি সত্যিই প্রাপ্য ছিল তাঁর? আচার্য দীনেশচন্দ্র সেনের (১৮৬৬-১৯৩৯) কাছে বাঙালি কতটা ঋণী সেটা বোধ হয় আবার মনে করিয়ে দেওয়ার সময় হয়েছে। যখন সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র, তখন একটা নোটবুকে লিখেছিলেন, ‘‘বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি হইব, যদি না পারি ঐতিহাসিক হইব। যদি কবি হওয়া প্রতিভায় না কুলায়, তবে ঐতিহাসিকের পরিশ্রমলব্ধ প্রতিষ্ঠা হইতে আমায় বঞ্চিত করে, কার সাধ্য?’’ কবি তিনি হতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু পথিকৃৎ সাহিত্য-ইতিহাসবিদের যে ভূমিকা তিনি নিয়েছিলেন তা চিরস্থায়ী স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৮৯৬ সালে প্রকাশ পায় তাঁর বঙ্গভাষা ও সাহিত্য। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চাই তখনও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়নি, প্রাক-মুদ্রণ যুগের অধিকাংশ গ্রন্থ ও গ্রন্থকার সম্বন্ধে জ্ঞান ছিল খুবই কম। মুদ্রিত সূত্রের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে প্রাচীন পুঁথির সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে আলোচনাকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন দীনেশচন্দ্র। বাংলায় এমএ পড়ানোর প্রস্তুতি হিসেবে উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় দীনেশচন্দ্রকে দিয়ে অনেকগুলি বক্তৃতা দেওয়ান, যা পরে ইংরেজিতে গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায়। হিস্টরি অব বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার, দ্য বৈষ্ণব লিটারেচার অব মিডিয়াভ্যাল বেঙ্গল, চৈতন্য অ্যান্ড হিজ় কমপ্যানিয়নস, দ্য ফোক লিটারেচার অব বেঙ্গল, দ্য বেঙ্গলি রামায়নাজ়, বেঙ্গলি প্রোজ় স্টাইল ইত্যাদি বই বাংলা পঠনপাঠনের ভিত তৈরি করে দিয়েছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দীনেশচন্দ্র ১৯১৯-৩২ দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়েই তিনি নাথ সাহিত্য, মৈমনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা উদ্ধার ও সম্পাদনা করেন। সমগ্রত দীনেশচন্দ্রকে ফিরে দেখার কাজ করলেন সত্যবতী গিরি ও সনৎকুমার নস্কর, তাঁদের সম্পাদনায় তৈরি হল সার্ধশতবর্ষে আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন/ পুনর্বীক্ষণ (পারুল) বইটি। ১৬ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ ভবনের দ্বিতলে দীনেশচন্দ্রেরই নামাঙ্কিত সভাকক্ষে এটি প্রকাশ করবেন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়।

বিজ্ঞাপনী

পুঁথি থেকে ছাপার হরফে বাংলা পাঁজির আত্মপ্রকাশ ঘটে দু’শো বছর আগে। ১৮১৮ সালে জোড়াসাঁকোর দুর্গাপ্রসাদ বিদ্যাভূষণ সেই পাঁজির প্রকাশক। ১৮৬৭ সালেই রেভারেন্ড লং অনুমান করছেন, মোট লাখ আড়াই পাঁজি বিক্রি হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই সময়ই পাঁজি বিজ্ঞাপনদাতাদের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যমে পরিণত হয়। তার সঙ্গে ছিল নানা তথ্যের সমারোহ— ‘ডাইরেক্টরি’। আগের মতো না হলেও, আজও পঞ্জিকায় বিজ্ঞাপন অব্যাহত। প্রথম পর্বে ‘বিজ্ঞাপন’ শীর্ষকে নানা প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান থেকে শুরু করে উনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকেই হরেক কিসিমের পণ্য বিক্রির যে বিপুল জগৎ পাঁজির মাধ্যমে খুলে গিয়েছিল, নিলয়কুমার সাহা তা খুঁটিয়ে দেখেছেন তাঁর পঞ্জিকা বিজ্ঞাপনে বিস্মৃত বাংলা (দীপ প্রকাশন) বইয়ে। পাঁজি থেকে সঙ্কলন করেছেন বহু উদাহরণ। ১৮ অগস্ট বিকেল ৫টায় কলেজ স্ট্রিটের বই-চিত্রে এটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ বারিদবরণ ঘোষের হাতে।

বিপ্লবী

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় গোপন চিঠি আর অস্ত্রশস্ত্র চালাচালি করতেন। ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর গ্রামের দশ বছরের ছাত্র তখন পূর্ণেন্দুপ্রসাদ ভট্টাচার্য (জ. ১৯২০), ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সূত্রে সুরেন্দ্রমোহন ঘোষের নেতৃত্বে জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনে। কারাবরণও করেন একাধিক বার। বাবা বিশিষ্ট কবি যতীন্দ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্য। স্বাধীনতার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে এমএ করেন, সাংবাদিকতা ‘লোকসেবক’ ও ‘বসুমতী’ পত্রিকায়। কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যসঙ্গী ও বহুবিধ বইয়ের লেখক এই মানুষটির সৃষ্টির নিদর্শন বিভিন্ন পত্রিকায় ছড়ানো। এখনও সম্পাদনা করেন তাঁর চার দশকের ত্রৈমাসিক ‘সাহিত্যমেলা’। ‘বঙ্গ সাহিত্য সম্মিলন’ সংস্থারও তিনি সভাপতি। মানবেন্দ্রনাথ রায়, জয়প্রকাশ নারায়ণ, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ প্রমুেখর সান্নিধ্যে ছিলেন। তাম্রপত্র-সহ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। গত ৯ অগস্ট সংবর্ধিত হলেন রাষ্ট্রপতি ভবনে। ১০ অক্টোবর, জন্মদিনে তিনি পা দেবেন ৯৯-এ।

সত্তর উপলক্ষে

চালাক লোক নিরীহ লোককে বোকা বানায়। কিন্তু তা বলে কি সারা সংসারকেই চালাক হতে হবে? না কি, সারা সংসারকেই সেই নিরীহের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে? সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি প্যারিসে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন ফরাসি নাটককার মলিয়ের, তাঁর ‘তার্তুফ’ নাটকে। সেই নাটকটিকেই মূল সূত্র ধরে বহুরূপী তৈরি করেছে ‘ধাপ্পা’। নির্দেশনা ও সম্পাদনা সুবোধ পট্টনায়েকের। সমকালের বাংলায় তা অনুবাদ করেছেন অংশুমান ভৌমিক। সুবোধ নাটকটিকে নিয়ে গিয়েছেন ভারতের গ্রামীণ নাট্য ঐতিহ্যের পথে। তাই তা মঞ্চে যেমন অভিনয় করা যায়, মঞ্চ ছাড়াও করা যায়। সংলাপের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় শরীরের ভাষা। বহুরূপী-র সত্তর বছরেই উপলক্ষেই এই নির্মাণ। ১৯ অগস্ট সন্ধ্যায় পদাতিক-এ
প্রথম অভিনয়।

দুই ধারা

বাংলাদেশের নেত্রকোনার লোকশিল্পী উকিল মুন্সি বায়না করতে গিয়েছিলেন কাছাকাছি গ্রামে। স্ত্রীর কালাজ্বর। শুনলেন স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ। বাড়ি ফিরে কবর দেওয়ার আগে স্ত্রীর মাথা নিজের কোলে রাখার সময় মনে এল গানের কলি, ‘‘শোয়া চান্দপাখি, আমি ডাকিতাছি, তুমি ঘুমাইছ নাকি...’’। স্ত্রীকে উকিল মুন্সি চাঁদপাখি বলে ডাকতেন। পরে, কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর পরে সেই আধারে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন, ‘‘আমার প্রাণের ’পরে চলে গেল কে/বসন্তের বাতাসটুকুর মতো।’’ লোকগান ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গেই এই দুই ধারার আনাগোনা নিয়ে এ রকমই নানা আখ্যান শোনা যাবে ‘রবিঠাকুরের গানে লোকসুরের টানে’ অনুষ্ঠানে। ১৮ অগস্ট পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। রবীন্দ্রসঙ্গীতে সোমালি মুখোপাধ্যায়, লোকসঙ্গীতে জয় শঙ্কর। শোনা যাবে দুরবিন শাহ, জালালুদ্দিন, রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থ, শাহ আবদুল করিমের মতো লোকশিল্পী ও পদকর্তার কথাও।

বিপ্লবী নিকেতন

স্বাধীন ভারতের যুবকদের কাছে বিপ্লবীদের বক্তব্য তুলে ধরা এবং দেশ স্বাধীন করার নানান প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাকে জাগ্রত রাখার অভিপ্রায়ে ১৯৬৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভক্তকুমার ঘোষ, শান্তিময় গঙ্গোপাধ্যায়, অখিল নন্দী, শৈলেন নিয়োগী প্রমুখ বিপ্লবী কলকাতা পুরসভার দেওয়া জমিতে পার্ক সার্কাস ৪নং পুলের নিকটে গড়ে তুলেছিলেন ‘বিপ্লবী নিকেতন’। এখানেই গড়ে উঠল জীবিত বিপ্লবী ও তাঁদের পরিবারবর্গের চিকিৎসার জন্য নিজস্ব কেন্দ্র ‘আই কেয়ার সেন্টার’। শুধু বিপ্লবী বা তাঁদের পরিবারই নয়, এখন এখান থেকে সর্ব স্তরের মানুষজনও আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই ‘হিস্টরি অব ইন্ডিয়ান ফ্রিডম মুভমেন্ট’ গ্রন্থটি প্রকাশ পায়। এ বার এই প্রতিষ্ঠান পঞ্চাশ পূর্ণ করল। এই উপলক্ষে ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধে থেকে বছরভর বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়িত হবে।

চিত্র-প্রদর্শনী

ছবি আঁকার প্রতি নিষ্ঠা দেখে, তাঁর বাবা অশোককুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বিড়লা অ্যাকাডেমির অঙ্কন বিভাগে তাঁকে ভর্তি করে দেন। পরে যোগমায়া দেবী কলেজ থেকে শিক্ষা শেষে গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে ভর্তি হন রুনু মিশ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সময়ই তিনি শিল্পী অশেষ মিত্র, বিকাশ ভট্টাচার্য, ধীরেন্দ্রনাথ ব্রহ্ম, গণেশ হালুই প্রমুখের সান্নিধ্য লাভ করেন। জল রং ও ‘ওয়াশ’ পদ্ধতির বিশেষ তালিম নেন মৃণালকান্তি দাসের কাছে। ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট এবং অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস, অমৃতসর থেকে পুরস্কৃত শিল্পীর আঁকা সাতাশটি ছবি নিয়ে এ বার অ্যাকাডেমিতে তাঁর ষষ্ঠ একক প্রদর্শনী। ১৪-২০ অগস্ট, ৩-৮টা।

মানুষী কথা

‘মানুষী কথা’ মাসিক পত্রিকা হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল ২০১৭ সালের ৯ অগস্ট। গত এক বছরে প্রতি মাসেই নিয়ম করে পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে, বইমেলায় ছিল যুগ্মসংখ্যা। বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ১৮ অগস্ট আয়োজিত হয়েছে একটি আলোচনাসভা। বিষয়: ‘নারীবাদ লিঙ্গভিত্তিক নয়, একটি দর্শন’। থাকবেন শাশ্বতী ঘোষ, নন্দিতা ধবন, মেরুনা মুর্মু ও পার্থসারথি। সঞ্চালনায় সোমা ঘটক। ‘একত্রে’ ভবন, ১৮৬এ কালিকাপুর খালপাড় রোড, ৪-৭টা।

হে সখা

আকাশবাণীতে বৃন্দগানের রেকর্ডিং চলছিল শৈলজারঞ্জন মজুমদারের তত্ত্বাবধানে। হঠাৎ খুব রেগে উঠে তিনি বেরিয়ে গেলেন। ভয়ে সবাই দিশেহারা, ঠেলে পাঠানো হল প্রিয় ছাত্র দুর্গাকে। দুর্গার অনুনয়ে তাঁর গুরু ফিরলেন। এই স্নেহের ছাত্রের পুরনো দিনের গায়কিতে রবীন্দ্রনাথের টপ্পাঙ্গিক গানগুলি শৈলজারঞ্জন খুব পছন্দ করতেন। অথচ দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও নিজের প্রচার পছন্দ করেননি; চিরকাল অন্তরালে রবীন্দ্রসাধনা করে গিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে, পরের বার এসে তাঁকে একটি কোট উপহার দিয়েছিলেন। ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বী দুর্গাদাসের জন্মভূমি ঢাকা, কর্মভূমি কলকাতা, প্রাণভূমি শান্তিনিকেতন। ৭৮ বছর বয়সি দুর্গাদাস ২১ মে চলে গেলেন। মৃত্যুর কিছু দিন আগে অনুজপ্রতিমদের অনুরোধ উপেক্ষা করতে না পেরে রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের কিছু গান রেকর্ডিং করেন। ‘হে সখা’ নামে সেই সিডি ১৮ অগস্ট উইভার্স স্টুডিয়োতে প্রকাশ করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

দেশভক্তের চিঠি

১৯৩৩ সালে জন্ম সন্দীপ সেনগুপ্তের। পরাধীন ভারতের জাতক হলেও স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেওয়ার সুযোগ হয়নি। সুপ্ত ইচ্ছে ছিল, সুযোগ পেলে স্বাধীনতা-সংগ্রামীদের লেখা এ কালের পাঠকের কাছে তুলে ধরবেন। নানা পত্রপত্রিকায় কাজ, লালবাজারের জনসংযোগ বিভাগের চাকরি থেকে অবসরের পর সুযোগ এল। গত দু’দশক ধরে সম্পূর্ণ নিজের খরচে, বিজ্ঞাপন ছাড়া নিয়মিত প্রকাশ করছেন ত্রৈমাসিক পত্রিকা ‘দেশভক্তের চিঠি’। স্বাধীনতা আন্দোলন, বিপ্লবীদের নিয়ে কি সাম্প্রতিক রাজনীতি বিষয়ে লেখার সঙ্গে ক্রোড়পত্রে থাকে এ সংক্রান্ত দুর্লভ বই-প্রবন্ধের পুনর্মুদ্রণ— যেমন কালীচরণ ঘোষের ‘জাগরণ ও বিস্ফোরণ’ বা সখারাম গণেশ দেউস্করের ‘দেশের কথা’। অন্তরালে থেকে ৮৫ বছরের সম্পাদককে সাহায্য করে চলেছেন মনিকা সেনগুপ্ত।

সম্মোহন-চিত্র

শিল্পী ভবানীচরণ লাহা নিজের ছবি আঁকার প্রয়োজনে বিভিন্ন ভাবে কয়েক জন মহিলা মডেলের আলোকচিত্র তুলেছিলেন। মাসিকবসুমতীর প্রতিষ্ঠাতা সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সেগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশ করতে ওঁকে উৎসাহিত করেন। পরে বসুমতী সাহিত্য মন্দির থেকে ১৯২৬-এ সেই বই প্রকাশ পায় শোভা নামে। একে বলা হয়েছিলসম্মোহন চিত্র-এলবাম। ভবানীচরণের বন্ধু নরেন্দ্রনাথ দেব ছবিগুলির সঙ্গে রবীন্দ্র-কবিতার অংশ নির্বাচন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ এই অ্যালবাম দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশকে লেখেন, ‘‘ভবানীচরণ লাহা আমার রচিত পদগুলিকে তার তুলির পঙ্কে কলঙ্কিত করেচে এটা আমার পক্ষে লজ্জার কারণ।’’ উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি-তে সেই ছবিগুলি নিয়ে আয়োজিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী। অরিন্দম সাহা সরদারের পরিকল্পনায় প্রদর্শনী চলবে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত, .৩০ থেকে ৯টা।

যোগগুরু

খুদে বয়স থেকেই খেলাধুলোর প্রতি তাঁর অমোঘ আকর্ষণ। টান ছিল কবিতাপাঠ ও নাটকেও। স্কুলের স্পোর্টসে তো পুরস্কার ছিল অবধারিত। তিনি যখন সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্রী, তখন স্বাধীনতা সংগ্রামী-অধ্যাপক-যোগানুরক্ত বাবা আশুতোষ দাস তাঁকে এবং তাঁর তিন ভাইকে প্রখ্যাত ব্যায়ামাচার্য বিষ্ণুচরণ ঘোষের যোগব্যায়ামের আখড়ায় ভর্তি করে দেন। ১৯৬৩ সালে থেকে বাবার উৎসাহ আর মা কনকলতা দাসের সহযোগিতায় চলতে থাকে ব্যাপটিস্ট মিশনের ছাত্রী ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স কুশলা দাসের যোগব্যায়াম চর্চা। চার বছর পর, ১৯৬৭ সালের ১৪ অগস্ট জন্মাষ্টমী তিথিতে গুরু বিষ্ণুচরণ ঘোষকে সামনে রেখে মেয়েদের মধ্যে যোগ প্রচারে মনোনিবেশ করেন। সুস্থ মাতৃজাতি গঠনের উদ্দেশ্যে সূচনা করেন ‘মহিলা যোগব্যায়াম কেন্দ্র’। দীর্ঘ দিন ধরে এই সমাজকল্যাণমূলক সেবাকে তিনি সামাজিক কর্তব্যরূপে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন। নিত্য যোগাভ্যাস করলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও। ছিয়াত্তর বছর বয়সি মহিলা যোগব্যায়াম কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা কুশলা দাস বলেন, ‘‘আমরা যে সময় যাত্রা শুরু করেছিলাম তখন ঘর থেকে মেয়েদের বার করে আনা খুব কঠিন কাজ ছিল। অভিভাবকরা বাড়ি থেকে মেয়েদের ছাড়ার আগে দেখে নিতেন সত্যিই মেয়েদের দ্বারা পরিচালিত সংস্থা কি না।’’ ক্রমে চতুর্দিকে এই মহিলা যোগব্যায়াম কেন্দ্রের কর্মকাণ্ড ও সুনাম ছড়িয়ে পড়তে থাকল। পঞ্চাশ বছর আগের সেই বীজই এখন ছ’টি শাখা-সহ মহীরুহে পরিণত। সম্প্রতি যোগ দিবসে কুশলা ভূষিত হয়েছেন ‘যোগগুরু’ সম্মানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE