Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: মেডিক্যাল মিশনের আশি বছর

চিনা অষ্টম রুট বাহিনীর কমান্ডার চু তে কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহরুকে চিঠি দিয়ে মেডিক্যাল সাহায্যের আবেদন জানান। কংগ্রেসের হরিপুরা অধিবেশনে এই সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়।

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

সময়টা ১৯৩৭-৩৮। জাপানের আক্রমণে বিপর্যস্ত চিন। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস জাপানি জিনিস বয়কটের আহ্বান জানায়, ধিক্কার জানান রবীন্দ্রনাথও। চিনা অষ্টম রুট বাহিনীর কমান্ডার চু তে কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহরুকে চিঠি দিয়ে মেডিক্যাল সাহায্যের আবেদন জানান। কংগ্রেসের হরিপুরা অধিবেশনে এই সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। পাঁচ জন চিকিৎসককে নিয়ে টিম তৈরি হল। ছবিতে (বাঁ দিক থেকে) সামনে এম আর চোলকার, মদনমোহনলাল অটল, বিজয়কুমার বসু। পিছনে দেবেশ মুখোপাধ্যায় ও দ্বারকানাথ কোটনিস। ১৯৩৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বোম্বাই থেকে চিন রওনা হল মেডিক্যাল টিম। চিনের রণাঙ্গনে এই ভারতীয় চিকিৎসকরা প্রভূত কাজ করেন। ডা. অটল, চোলকার এবং মুখোপাধ্যায় নানা কারণে দু’আড়াই বছরের মধ্যে ফিরে আসেন। কোটনিস ১৯৪২ সালের ৯ ডিসেম্বর মাত্র ৩২ বছর বয়সে চিনেই মারা যান। সেখানে তিনি আজও সম্মানিত। তিনি চিনা সহকর্মী নার্সিং শিক্ষিকা কুয়ো চিন লাং-কে বিয়ে করেছিলেন, তাঁদের সন্তানের নাম রাখা হয় ইন হুয়া, অর্থাৎ ভারত-চিন। ডা. বসু পাঁচ বছর চিনে কাটিয়ে ফিরে আসেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ডা. দ্বারকানাথ কোটনিস স্মৃতিরক্ষা কমিটি পশ্চিমবঙ্গে গত ৪৫ বছর ধরে সমাজসেবার কাজ করে চলেছে। তাদেরই উদ্যোগে মেডিক্যাল মিশনের ৮০ বছর উপলক্ষে ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টেয় মহাজাতি সদন অ্যানেক্স ভবনে অনুষ্ঠান, থাকবেন কৃষ্ণা বসু, সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী, সুগত বসু ও নরেন চট্টোপাধ্যায়।

শক্তির উৎস

‘‘দিব্যদর্শন আনন্দময়ী শক্তির উৎস শ্রীদুর্গা চৈতন্যময়ী বিশ্বজননী...’’, স্বামী আত্মস্থানন্দ-র আলোচনা ‘শক্তির উৎস দুর্গা’ সম্পর্কে। এ ভাবেই দেবীপূজা, আনন্দময়ীর আগমন বা মাতৃশক্তি বিষয়ে আলোচনা করেছেন স্বামী রমানন্দ, স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দ, স্বামী সারদানন্দ, স্বামী জগদীশ্বরানন্দ, কুমুদবন্ধু সেন ও চিন্তাহরণ চক্রবর্তী। এই সঙ্কলনগ্রন্থ মাতৃশক্তি-সমীপে (সম্পা: সুমন ভৌমিক ও সায়ক চক্রবর্তী, সূত্রধর) প্রকাশ পাবে ৪ সেপ্টেম্বর গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার-এ। বিকেল ৪টেয় প্রারম্ভিক কথনে স্বামী সুপর্ণানন্দ। ‘সনাতন শাস্ত্র ও দেবী দুর্গা’ নিয়ে আলোচনায় স্বামী অচ্যুতানন্দ, আর ‘বাঙালির দুর্গোৎসব’ নিয়ে বলবেন জহর সরকার। তিমিরবরণ ঘোষের আগমনী গান, স্বপন দাস ও সম্প্রদায়ের ঢাকবাদন। আসন্ন দুর্গোৎসবকে ঘিরে এই শুভ উদ্যোগে রামকৃষ্ণ মিশন ও সূত্রধর।

পেম্বা-স্মরণে

পাহাড়েই যাপন ছিল পেম্বা শেরপার। অথচ, সেই পাহাড়ই একেবারে টেনে নিল তাঁকে! জীবনের শেষ অভিযানেও সফল হয়ে ফেরার রাস্তা ধরেছিলেন, কিন্তু সে রাস্তা ফেরার পথ না দেখিয়ে টেনে নিয়ে গেল বরফের অতলান্ত গহ্বরে। পর্বতপ্রেমীদের প্রাণের মানুষ ছিলেন দার্জিলিঙের বাসিন্দা সদাহাস্যময় পেম্বা। আট বারের এভারেস্টজয়ী পেম্বা ছুঁয়েছেন কত না পর্বতশীর্ষ! কাঞ্চনজঙ্ঘা, অন্নপূর্ণা, ধৌলাগিরি, মানাসলু, মাকালু... দীর্ঘ তালিকা, যার সর্বশেষ নাম লাদাখের কারাকোরাম পর্বতের সাসের কাংরি ফোর। মাউন্টেনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কৃষ্ণনগর (ম্যাক), পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস প্রমুখের উদ্যোগে ২০ অগস্ট মৌলালি যুব কেন্দ্রে ছিল পেম্বার স্মরণসভা। সেখানেই তাঁর পরিবারের হাতে ১১ লক্ষেরও বেশি টাকা তুলে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারও এক লক্ষ টাকা সাহায্য করেছে। কিন্তু পর্বতশীর্ষে এগোনোর সময় আর শোনা যাবে না সেই কণ্ঠ: ‘‘সেফটি লাগাকে চলনা।’’

সেই থেকে

সালটা ছিল ১৯৮২। সেই থেকে এক সঙ্গে অনুষ্ঠান শুরু। আবৃত্তি, শ্রুতিনাটক-সহ নানা কাজে পেরিয়েছেন অনেকটা পথ। এখন তাঁরা নিজেদের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বলে পরিচয় দেন। তবে কাজ তো অনেক বাকি। মঞ্চে হাজির হয়ে সে কথাই মনে করান ‘বুড়ো-বুড়ি দু’জনাতে’। তাঁরা বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসু এবং ঊর্মিমালা বসু। সম্প্রতি বর্ষা উদ্‌যাপনে তেমনই এক অনুষ্ঠান করলেন এই দুই প্রবীণ শিল্পী। তাঁদের অভিনয়ে রবীন্দ্রসদন ভরে উঠল রবীন্দ্রনাথের নাটক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রচনায়। জগন্নাথবাবু জানান, আগামীতে আরও এমন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা আছে তাঁদের।

দু’শো বছরে

কার্ল মার্ক্সের জন্মের দেড়শো বছরে, ১৯৬৮ সালে এক্ষণ পত্রিকা তাঁকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছিল। সেটির পুনর্মুদ্রণ হয়েছে এ বছর, মার্ক্সের জন্মের দু’শো বছর পূর্তি উপলক্ষে। বাঙালির কার্ল মার্ক্স চর্চা কি তবে শুধুই স্মৃতিরোমন্থন? তার সঙ্গে বড়জোর কিছু পত্রিকার এক বা একাধিক প্রচ্ছদনিবন্ধ? তেমনটা বলা যাবে না— জানাল দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক সম্পাদিত স্বরান্তর পত্রিকা। সতেরোটি প্রবন্ধ এবং জীবনপঞ্জি নিয়ে তৈরি প্রায় আড়াইশো পৃষ্ঠার ‘কার্ল মার্কস জন্মদ্বিশতবর্ষ সংখ্যা’র কোনও একটি লেখাকেও অসার বা চর্বিতচর্বণ বলা চলবে না। শোভনলাল দত্তগুপ্ত, রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, দেবেশ রায়, রতন খাসনবিশ প্রমুখ প্রাবন্ধিক নানা দিক থেকে মার্ক্সের চিন্তা এবং আজকের দুনিয়ায় তার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এরিক হবসবম থেকে অ্যাল্যাঁ ব্যাজ্যূ (বাদিয়ু?), কয়েক জন বিদেশি লেখকের প্রবন্ধের অনুবাদ এই সঙ্কলনকে বৃহত্তর তাৎপর্য দিয়েছে, একুশ শতকের কূপমণ্ডূক পশ্চিমবঙ্গে যার দাম অনেক। বিস্তর চিন্তা এবং বিস্তরতর তর্কের খোরাক আছে এই সঙ্কলনে। তাতে অবশ্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের রুচি হবে বলে ভরসা নেই, তাঁদের মগজে কারফিউ চলছে, চলবে।

কবিতা-আর্কাইভ

পাঁচ বছরের হাড়ভাঙা পরিশ্রম ২৮ অগস্ট, সন্ধে ৬টায় রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে পূর্ণ মর্যাদা পেতে চলেছে। হ্যাঁ, এ দিনেই হবে রবীন্দ্রনাথের সমস্ত কবিতা নিয়ে তৈরি ডিজিটাল আর্কাইভের পেন ড্রাইভ উদ্বোধন। সৌজন্যে, চিকিৎসক পূর্ণেন্দু বিকাশ সরকার। অনুষ্ঠানে থাকবেন শঙ্খ ঘোষ, সবুজকলি সেন, সুবোধ সরকার প্রমুখ। ২০০৬ সালে পূর্ণেন্দুবাবু ‘গীতবিতান’-এর ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরি করেছিলেন। এ বারের কবিতা-আর্কাইভে ধরা আছে রবীন্দ্রনাথের ৩৫০০ কবিতা। যা বিভিন্ন দেশের ২৪৫ জন শিল্পী রেকর্ড করেছেন। শোনা যাবে ‘সং অফারিংস’-এর ১০৩টি কবিতা ইংরেজি ও বাংলায়। এ ছাড়া আছে রবীন্দ্রনাথের গানে রূপান্তরিত কবিতাগুলি, কবির স্বকণ্ঠে ১৫টি আবৃত্তি। সহজেই পছন্দের কবিতা খোঁজার জন্য আছে বিভিন্ন বিভাগ। একই সঙ্গে পছন্দের কবিতাটির বিষয়ে জানা যাবে সমস্ত তথ্যও।

ডোভার লেন

দ্য ডোভার লেন মিউজ়িক কনফারেন্স’-এর আয়োজকরা আগামী জানুয়ারির সঙ্গীত সম্মেলনের আগে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সন্ধ্যা ও ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যকলা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছেন। ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর বিড়লা অ্যাকাডেমিতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। যোগ দেবেন সংস্থার বার্ষিক মেধাসন্ধান প্রতিযোগিতার প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন নবীন শিল্পীরা। ৭, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর আইসিসিআর-এর সহযোগিতায় সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যের উৎসবে কলকাতার নবীন ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের পাশাপাশি থাকবেন ওড়িশি নৃত্যশিল্পী ইলিয়ানা সিতারিস্তি, কত্থক শিল্পী বিশাল কৃষ্ণ, কুচিপুড়িতে বৈজয়ন্তী কাশি, প্রতীক্ষা কাশি এবং মাধুরী মজুমদার, মোহিনীআট্যমে নীনা প্রসাদ ও মণিপুরি নৃত্যে অঞ্জিকা গোষ্ঠী। মেধাসন্ধান প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থানাধিকারীরা এই অনুষ্ঠানে নাচবেন। প্রবেশপত্র পাওয়া যাবে সংস্থার দফতরে।

নতুন নাটক

একেবারেই মফস্‌সলের এক উদ্বাস্তু নগরীতে জন্ম অশোকনগর নাট্যমুখ-এর, প্রায় উনিশ বছর আগে, অভি চক্রবর্তী সঙ্গীতা চক্রবর্তী অসীম দাস-সহ ক’জন বন্ধুর উদ্যোগে। হাতেগোনা মৌলিক নাটককারদের অন্যতম ব্রাত্য বসুর সদ্যলিখিত নতুন নাটক ‘আমি, অনুকূলদা আর ওরা’ এই বছর নাট্যমুখ-এর নতুন নাটক। জন্মদিনে, ১ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় প্রথম অভিনয় মিনার্ভা থিয়েটারে। ‘‘মাত্র পাঁচটি চরিত্রের এই নাটকে বাতিল কিছু জীবন, থমকে যাওয়া সময়, কোমায় চলে যাওয়া সম্পর্ককে নাটকীয় ভাষা ও সংলাপের কাব্যে জাগিয়ে তুলেছেন ব্রাত্যদা। ফলত উত্তেজনাই আলাদা।’’ জানালেন নির্দেশক অভি চক্রবর্তী। সৌমিক চক্রবর্তীর সেট ডিজ়াইন, সুদীপ সান্যালের ছায়াবাজি, দিশারীর সঙ্গীত এই নাটকের মঞ্চভাষা খুঁজে পেতে প্রভূত সাহায্য করেছে অভিকে।

বাদ্যযন্ত্রী

বাদ্যযন্ত্রীদের যথাযোগ্য সম্মান ও ন্যায্য সাম্মানিক প্রাপ্তির সুবন্দোবস্ত করার প্রয়াসে ভি বালসারা, সলিল চৌধুরী, ভূপেন হাজরিকা প্রমুখের উদ্যোগে ১৯৬২ সালে গঠিত হয় ‘ক্যালকাটা সিনে মিউজ়িশিয়ানস্ অ্যাসোসিয়েশন’। সিনেমার গান-সহ অন্য গান নির্মাণে সংস্থার বহু বাদ্যযন্ত্রী এ পর্যন্ত সঙ্গতকারীর ভূমিকায় ব্রতী হয়েছেন। তাঁরা এই প্রথম এলেন নাট্যাভিনয়ে। মনোজ মিত্রের ‘শিবের অসাধ্যি’ নাটকে তবলিয়া দীপঙ্কর আচার্যের পরিচালনায় মঞ্চে নামছেন তাঁরা। এ ছাড়া মঞ্চচিত্রণ, প্রত্যক্ষ শব্দ সংযোজনা-সহ হরেক কাজে নিযুক্ত থাকবেন বাদ্যযন্ত্রীরাই। ৩১ অগস্ট পাঁচটায় রবীন্দ্র সদনে হৈমন্তী শুক্ল ও সৌরভ চাকীর গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু, শেষে তাঁদের অভিনয়।

প্রতিবেশীকে চিনুন

ছেচল্লিশ আর সাতচল্লিশে বিস্তর ফারাক; হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন সেলিমপুরের বাসিন্দারা। দেশভাগের আগেই বেশ কিছু পরিবার আপাত নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাড়া ছাড়ে, আর ১৯৫০-এ হাওড়ার সাম্প্রদায়িক হানাহানির ফলে বেশির ভাগই অন্যত্র চলে যায়। হাতে গোনা কয়েক জন থেকে যান, আজও আছেন। আর আছে এক অজানা পিরের আস্তানা, কবরস্থান ও মসজিদ। একটা আস্ত জনপদের জনবিন্যাস আমূল বদলে গেল। এই সেলিমপুরেই অ্যাসোসিয়েশন স্ন্যাপ ও ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ়, কলকাতার যৌথ উদ্যোগে ‘প্রতিবেশীকে চিনুন’ হেরিটেজ ওয়াক ও আলোচনা ২ সেপ্টেম্বর। আলোচনায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহম্মদ রেয়াজ, ওয়াকফ বোর্ডের সিইও মুফতি শামিম শওকত, অন্বেষা সেনগুপ্ত, সাবির আহমেদ, ঈপ্সিতা হালদার। থাকবেন মহঃ আনোয়ার।

জীবনধারা

অনুপ গিরি কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজের পেন্টিংয়ের প্রথম শ্রেণির স্নাতক। ভারতীয় মানব বিজ্ঞান বিভাগের কর্মী অনুপের কাজ এ দেশের জনজাতিগুলির জীবনধারার চিত্রায়ন— কখনও তুলি-পেনসিলে কখনও ক্যামেরায়। রং-তুলির যুগলবন্দিই তাঁর সব চেয়ে প্রিয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক বার তাঁর ছবি প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। দেশবিদেশের বহু প্রদর্শশালায় এবং ব্যক্তিগত ভাবে সংগৃহীত হয়েছে তাঁর ছবি। একুশটি ছবির ডালি নিয়ে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের নর্থ গ্যালারিতে তাঁর নবম একক প্রদর্শনী ‘রিদম অব ট্রাইবাল অ্যান্ড ফোক লাইফ’। ২৮ অগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর, ৩-৮টা।

ভাষাশিক্ষিকা

সেন্ট মার্গারেটস স্কুল, লোরেটো হাউস, প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষালাভ করে তিনি যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী, তখন এক দিন দার্শনিক ও জার্মান ভাষাবিদ রাসবিহারী দাস শঙ্করাচার্যের ‘বেদান্ত ভাষ্য’-এর একটি জটিল সূত্র জার্মান ভাষায় একটি শব্দের মাধ্যমে এমন ভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তা শুনে তিনি ভাষাটির প্রতি অনুরাগী হয়ে পড়েন। ভেবে অবাক হন, কোনও ভাষার একটি শব্দের মধ্যে এত গভীর দার্শনিক চিন্তা নিহিত থাকতে পারে! এ ছাড়াও তাঁকে গভীর ভাবে আকর্ষণ করত জার্মান সংস্কৃতি, ধ্রুপদী সঙ্গীত, সাহিত্য ও বিশেষত নাটক। এই ভালবাসার টানেই গণিতজ্ঞ কে পি বসুর পৌত্রী সুনন্দা বসু ষাটের দশকের মাঝামাঝি পুণের গ্যোটে ইনস্টিটিউটে জার্মান ভাষার ছাত্রী হিসেবে মনোনিবেশ করেন। ১৯৬৮ সালে পুণের ওই প্রতিষ্ঠানেই তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে কলকাতার গ্যোটে ইনস্টিটিউটে জার্মান ভাষার শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন। অবসর নেন ২০০৬-এর জানুয়ারিতে। তার পরেও তিনি গত ১২ বছর ধরে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থায় জার্মান ভাষা পড়িয়ে চলেছেন। এখন প্রেসিডেন্সিতে ‘অতিথি অধ্যাপক’ হিসেবে জার্মান ভাষা পড়াচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর যাবৎ আরও একটি ভাষাশিক্ষিকার ভূমিকা পালন করছেন— মাতৃভাষা বাংলাও শেখাচ্ছেন জার্মান ভাষাভাষীদের, জার্মান ভাষার মাধ্যমে। জার্মান ভাষা থেকে নিয়মিত অনুবাদ করে থাকেন। ৫০ বছর ধরে জার্মান-শিক্ষিকা সুনন্দা বলছিলেন, ‘‘আমি শুধু এই শহরটার প্রবল পরিবর্তনেরই সাক্ষী নই, জার্মান ভাষা শিক্ষার্থীদের বিশাল পরিবর্তনের প্রত্যক্ষদর্শী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE