Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: ‘ঈশ্বর, এদের ক্ষমা কোরো’

দামি জ্যাকেট লড়িয়ে তৈরি, আলোজ্বলা শিং মাথায় টাইট ইলাস্টিকে বেঁধে (গরুর নয়, বল্গা হরিণের, তবে স্বভাবে শয়তানের সম্পত্তি) সহবৎ ও ভদ্রতাকে গুঁতিয়ে ময়দান পার করে পার্ক স্ট্রিটে ঝাঁপিয়ে পড়ো।

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৫
Share: Save:

প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিটি দেখলে মনে হবে, শিশু জিশু এই ভারতেরই, বা এই বাংলারই কোনও আস্তাবলে (নাকি গোয়ালে?) জন্মেছেন। অপেক্ষমাণ ষণ্ড এখানে যেন শ্যামলী গাই, বা ধবলীও হতে পারে, শিশুটিকে নিরবধি নিরীক্ষণ করছে, সুযোগ পেলে সস্নেহ লেহনে অভিনন্দন জানাবে। এ সব মনে হলে ক্ষতি নেই, কারণ বড়দিন কি বাঙালিরও পবিত্র পরব নয়, এবং তার চেয়ে বড় কথা, তাবৎ পবিত্র দিনকে ইদানীং পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে ভাবে দাবড়ে উদ্‌যাপন করে, ক্রিসমাসকেও কি হুবহু সে ভাবেই উদ্‌যাপন করছে না? দিবাভাগে আলসেমি ও হোয়াটসঅ্যাপ প্রেরণ, প্রদোষে দোষের স্টেশনে ল্যান্ডিং। দামি জ্যাকেট লড়িয়ে তৈরি, আলোজ্বলা শিং মাথায় টাইট ইলাস্টিকে বেঁধে (গরুর নয়, বল্গা হরিণের, তবে স্বভাবে শয়তানের সম্পত্তি) সহবৎ ও ভদ্রতাকে গুঁতিয়ে ময়দান পার করে পার্ক স্ট্রিটে ঝাঁপিয়ে পড়ো। উজ্জ্বল যুবকদের মুখে অনর্গল লোফারের হাসি, অশ্লীল খেউড়, দৃষ্টিতে রমণীর রূপ চর্বণেচ্ছা, রূপসিদের আঙ্গিক ও বাচিক অপমান করে সপ্রতিভতার হাই-ফাইভ মানাতে হৃদি সুড়সুড়। যুবতীরাও পিলপিল ও হাস্যময়ী, কিন্তু ত্রাস চেপেচুপে সতর্ক ডজ-এ ধাবমান, আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা এড়িয়ে পেরিয়ে আজ ফুর্তি নিষ্কাশন করতে হবে। দমঠাস ভিড়, গাড়িঘোড়া আইন করে বন্ধ (আমোদ আগে, নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য পরে), চতুর্দিকে আলোকসজ্জায় সান্তা ক্লজ় থেকে ভোঁদড় টিয়াপাখি ডলফিন সরসর নাচছে, যে গেরস্ত সপরিবার পার্ক স্ট্রিট দেখতে এসেছিল সে তামাশায় পিষে শিশু সামলে বৌকে খিঁচিয়ে পালাবার পথ পাচ্ছে না, মোচ্ছবের তালে তালে এন্তার খেলনা ভেঁপু কাকে ব্যঙ্গ করে ককিয়ে উঠছে কে জানে, সারা রাত মদের ফোয়ারা ছোটাবার আনন্দে আকাশেরও চোখ চকচক করছে। ইদানীং বাংলার সব আনন্দের অচ্ছেদ্য দোসর গাঁকগাঁক গান ও ঢকঢক লিকার, ৯-কারের ডিগবাজি খাওয়ার উল্লাস তো শাস্ত্রেই লেখা। প্রহর ও খানকয় মাতাল গড়াবার পর হুক্কাহুয়া অন্য স্তরে, রাখঢাকহীন তীব্র তামসিক, কোণে কোণে বেলেল্লাপনা ও মস্তানি রুখতে পুলিশ দৌড়ে হন্যে, তার মধ্যে আবার কেউ নেতার ভাগ্নে আমলার ভায়রা বেরিয়ে গেলে সেলাম ঠুকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। জিশু বলেছিলেন, ‘‘ঈশ্বর, এদের ক্ষমা কোরো, এরা জানে না এরা কী করছে।’’ জেনেশুনে মানুষের নষ্টামি কোথায় যেতে পারে, বুঝতে পারলে হয়তো অন্য বাক্য খুঁজতেন। আধুনিক বাংলায় জন্মালে তাঁর ক্ষমাসুন্দর চোখ দু’টিকে ক্রোধরহিত রাখাও হয়তো কঠিন হত। ছবি পরিমল রায়ের সৌজন্যে।

গানের ভাণ্ডারি

রবীন্দ্রনাথ ‘‘সুর দিয়ে ভুলে যেতেন নিজে, তাই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দরকার হতো তাঁর স্নেহের দিনুর স্বর আর স্বরলিপির সহায়তা। তা না হলে কত গানই যে চলে যেত বিস্মরণে।’’ লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ, তার সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন দিনেন্দ্রনাথ নিজেও ছিলেন কবিতা বা গানের রচয়িতা, ছিলেন সুরকারও। এ বার মনে করার চেষ্টা সেই বিস্মৃত দিনেন্দ্রনাথকে। তাঁর ১৩৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩টেয় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির বিচিত্রা ভবনে তাঁর সাঙ্গীতিক জীবন ও কর্ম নিয়ে ‘বলা যদি না হয় শেষ’ শীর্ষকে একটি গীতিআলেখ্য পরিবেশিত হবে। দিনেন্দ্রনাথ সম্পর্কে বলবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী। গীতিআলেখ্যে দ্বৈতকণ্ঠে অভিজিৎ মজুমদার ও সুকান্ত চক্রবর্তী, ভাষ্যে বাচিক শিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়।

শিল্পীর চোখে

‘‘মা যখনই দেখা দিয়েছেন তখনই দেখেছি সারা শরীর ঢেকে পা দুটি বার করে বসতেন আর সেই চরণেই প্রণাম করে ধন্য হয়েছি। তাই যখন পূজনীয় সত্যেন মহারাজ মায়ের বিষয়ে বইয়ের ছবি আঁকতে আদেশ দিলেন তখন কেবলই তাঁর পা দুটিই পদ্মের উপর এঁকে শেষ করেছি।’’ শ্রীমা সারদাদেবীর ছবি আঁকার প্রসঙ্গে নন্দলাল বসুকে প্রশ্ন করেছিলেন নন্দলাল-শিষ্য রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। রামানন্দ তাঁর সাম্প্রতিক নন্দলালের জীবনে শ্রীরামকৃষ্ণ (দেবভাষা) বইতে লিখছেন, ‘‘নন্দলালের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের আত্মযোগের সম্পর্ক ছাড়াও সেই পরিমণ্ডল ও সংঘের (রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন) সঙ্গে সম্পর্ক ছিল গভীর।’’ এরই পরিচয় বইটিতে। রামানন্দের একক চিত্রপ্রদর্শনীও (‘দিন প্রতিদিনের কাজ’) চলছে দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাসে, ২৮ ডিসেম্বর অবধি (১-৯টা)। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

মার্ক্সের খোঁজে

শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটা সত্যি। কাদম্বিনীর মতো সোভিয়েত সমাজতন্ত্রও মরে প্রমাণ করেছে মার্ক্সবাদ ‘মরে নাই’। দুনিয়া জুড়ে চলছে মার্ক্সবাদকে নতুন করে আবিষ্কার করবার প্রক্রিয়া। তাতে শামিল ডা. ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে-গড়া কলকাতার পাভলভ ইনস্টিটিউট ও মানবমন পত্রিকা, যা পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে আজও সমান সক্রিয়। এ বারেও আয়োজন করা হয়েছে ডা. ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা। বিষয় ‘মার্ক্সের বিচ্ছিন্নতা তত্ত্ব’, বলবেন অর্থশাস্ত্রের সুপরিচিত অধ্যাপক অজিত রায়। আজ, ২৪ ডিসেম্বর, বিকেল ৫টায় জীবনানন্দ সভাঘরে। বিচ্ছিন্নতা তত্ত্ব ছিল ডা. গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশেষ চর্চার বিষয়। মানবমন পত্রিকায় ছড়িয়ে আছে এ বিষয়ে তাঁর চিন্তারাজি। মার্ক্সবাদ, পাভলভীয় তত্ত্ব আর মনোরোগ-চিকিৎসাকে এক বৃন্তে গাঁথতে চেয়েছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এ বারের আলোচনা।

বালাম চাল

টাঙ্গাইল থেকে ধলেশ্বরী নদী বেয়ে বালাম নৌকা পাড়ি দিত দূর-দূরান্তরের নদীপথে। এই নৌকায় ঘাটে ঘাটে পৌঁছে যেত ময়মনসিংহের চালের পসরা। সরু চিকন সেই চালের যেমন গন্ধ তেমন স্বাদ। কলকাতা থেকে সেই চাল চালান যেত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বালাম নৌকায় আসত বলে সেই চালের নামও হয়ে গেল বালাম চাল। এক সময় কোথায় কী ভাবে সেই চাল গেল হারিয়ে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে নদিয়া জেলায় আবার বালাম ধানের চাষ শুরু হয়েছে। এ বার তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে ২৪-৩১ ডিসেম্বর মোহরকুঞ্জ ও হেদুয়া পার্কে অনুষ্ঠিত হবে ‘পৌষ উৎসব’। মোহরকুঞ্জে পাওয়া যাবে বালাম চাল। সঙ্গে থাকছে বর্ধমানের গোবিন্দভোগ, উত্তর দিনাজপুরের তুলাইপাঞ্জি, কোচবিহারের কালো নুনিয়া, নদিয়ার রাঁধুনিপাগল-এর মতো বাংলার ঐতিহ্যবাহী চাল। উপরি পাওনা পালকের চেয়ে হালকা, তুলোর চেয়ে নরম ‘বিন্নিধানের খই’। শীতলপাটি ও নানা হস্তশিল্প তো আছেই।

স্মরণসন্ধ্যা

বুদ্ধদেব-প্রতিভা বসুর কন্যা দময়ন্তী বসু সিংহ (১৯৪০-২০১৮) নব্বই দশকের শেষ দিকে কলকাতায় ফিরে তৈরি করেন ‘বিকল্প’ প্রকাশনী। প্রথম বই প্রতিভা বসুর মহাভারতের মহারণ্যে হইহই ফেলেছিল। বেরলো স্বর্ণকুমারী দেবীর সঙ্কলিত প্রবন্ধ, সমীর সেনগুপ্তর বুদ্ধদেব বসুর জীবন, ‘কবিতা’ পত্রিকার রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ সংখ্যার ফ্যাক্সিমিলি, দময়ন্তীকে লেখা বুদ্ধদেবের চিঠির সঙ্কলন। এবং প্রসঙ্গ শক্তি চট্টোপাধ্যায়, কবিকে নিয়ে নিবন্ধের বিরল একটি বই। ১৯৯৮-এর ৩০ নভেম্বর থেকে টানা পনেরো দিন বিকল্প-র বুদ্ধদেব বসুর নব্বই বছর পূর্তির উৎসব পালন রীতিমতো সাড়া ফেলে। আর ২০০২-এ স্বভূমি-তে শুরু হল বিকল্প আর্টশপ— যা তখন এ-বঙ্গে প্রায় অভিনবই বলা যেতে পারে। ২৬ ডিসেম্বর দময়ন্তী বসু সিংহের জীবন ও কৃতির স্মরণসন্ধ্যা সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে, সাড়ে ৫টায়।

সম্প্রীতি-যাত্রা

১৯৬০ সাল। এক ভ্রাতৃঘাতী ভাষাদাঙ্গায় কলঙ্কিত হয়েছিল অসমের মাটি। সে সময় শিলং পাহাড়ে অসম গণনাট্য সঙ্ঘের শিল্পী-সংগঠক হেমাঙ্গ বিশ্বাস এবং ভূপেন হাজরিকা (সঙ্গের ছবি)শান্তি ও মৈত্রীর উদ্দেশ্যে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে ‘লেট আস মিট কালচারাল ট্রুপ’ গঠন করে প্রায় এক মাস ধরে দাঙ্গাপীড়িত অঞ্চল ঘুরে বেশ কিছু অনুষ্ঠান করেন। এ নিয়ে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ফর দি আর্টস-এর আর্থিক সহায়তায় গত বছর একটি বড় কাজ করেন রঙিলী বিশ্বাস। বই, সিডি এবং তথ্যচিত্র— তিনটি মাধ্যমেই। ১৪ ডিসেম্বর হেমাঙ্গ বিশ্বাসের জন্মদিনে সিডিটি (আশা অডিয়ো) প্রকাশিত হল। তাতে এই যাত্রাপথের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গান ছাড়াও আছে এই প্রয়াসকে মনে রেখে শঙ্খ ঘোষের নিজের কবিতা ‘সকলের গান’ পাঠ। জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়াল, কেশব মহন্ত প্রমুখের নির্বাচিত কিছু গান গেয়েছেন রঙিলী বিশ্বাস এবং ধ্রুপদ দাস। হেমাঙ্গ বিশ্বাসের লেখা এই সম্প্রীতি যাত্রার বর্ণনা ‘চলুন আবার মিলি’ থেকে পাঠ করেছেন শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যাত্রায় জড়িত এবং ‘অসমীয়া ঢোলের জাদুকর’ মঘাই ওঝার বাজনার দুষ্প্রাপ্য রেকর্ডিং মূল্যবান সংযোজন।

নাট্যস্বপ্নকল্প

‘‘থিয়েটারের সঙ্গে এত কাল বসবাস করতে করতে এখন বড় বেশি করে মনে হয় সেই সব মানুষকে সম্মানিত করার কথা, যাঁরা দীর্ঘ কাল ধরে নাটকের সঙ্গে ওতপ্রোত থেকেও সংস্কৃতি জগতে সে ভাবে স্বীকৃতি পাননি। এ বারের নাট্যস্বপ্নকল্প-এর অনুষ্ঠানমালায় তাঁদের সংবর্ধনা জানানো কর্তব্য মনে করছি।’’ বলছিলেন অন্য থিয়েটার-এর কর্ণধার বিভাস চক্রবর্তী। যেমন দিল্লির বামপন্থী বাপী বসু, ভারতীয় থিয়েটারে রাজনৈতিক নাটকের অন্যতম প্রবক্তা তিনি, একই সঙ্গে আবার শেক্সপিয়র বা ব্রেখটও মঞ্চস্থ করেন, অসাধারণ নৈপুণ্য সিনোগ্রাফি বা দৃশ্যচিত্রণে। সম্মানিত হবেন বহুরূপী-র প্রবীণতম শিল্পী ও সংগঠক সমীর চক্রবর্তী, পাপেট-শিল্পী সুদীপ্ত গুপ্ত। ‘‘ব্যতিক্রমী বিষয়ভাবনা ও নির্মাণসৌকর্যের জন্য এ বছরের শ্রেষ্ঠ নাট্যনির্মাণের সম্মান দিচ্ছি ‘তারায় তারায়’-এর নির্দেশক কৌশিক সেনকে।’’ জানালেন বিভাসবাবু। অ্যাকাডেমিতে ৩০-৩১ ডিসেম্বর অন্য থিয়েটার আয়োজিত এই ‘নাট্যস্বপ্নকল্প’-এর সঙ্গীত ও নাট্যাদির সমাহারের সঙ্গে ৩১-এর সন্ধ্যায় বাংলা আকাদেমিতে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা ‘বিজ্ঞান ও থিয়েটার’ এবং বিভাস চক্রবর্তীর গদ্যগ্রন্থ ‘স্বকলমে’র প্রকাশ, শঙ্খ ঘোষের হাতে।

প্রাণের প্রহরী

আশুতোষ কলেজে বাংলা বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌম্যকান্তি দত্ত। ইতিমধ্যে ‘সন্দেশ’ পত্রিকার শতবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি পরিচালনা করেছেন ‘সন্দেশ ১০০’ তথ্যচিত্রটি। আগামী বইমেলায় এই তথ্যচিত্রটির বিষয়বস্তু বই আকারে বেরোচ্ছে— সন্দেশ ১০০: চিত্রনাট্য ও অন্যান্য (সম্পা: সৌরদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌম্যকান্তি দত্ত, নীলাঞ্জনা এন্টারপ্রাইজ়)। সন্দেশের সব সম্পাদকের সে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম লেখাগুলিও এই বইয়ে সঙ্কলিত হয়েছে। সৌম্যকান্তি তাঁর দ্বিতীয় তথ্যচিত্রের কাজ শুরু করেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে। নাম ‘প্রাণের প্রহরী’। ‘‘যাঁকে দেখে আমি শিখছি, সেই সন্দীপকাকুর (সন্দীপ রায়) সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করে দিলাম ‘প্রাণের প্রহরী’র,’’ বললেন পরিচালক। ২১ ডিসেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনের ফুলডাঙায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘একা এবং কয়েকজন’-এ আউটডোর শুটিং শুরু হয়েছে। তার পর কলকাতা ও তার আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় শুটিং হবে। এতে সুনীলবাবুর স্ত্রী-পুত্র ছাড়াও থাকবে বেশ কয়েক জন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীর সাক্ষাৎকার। এ ছবির সহপরিচালক সৌরদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সঙ্গীতে অয়ন চট্টোপাধ্যায়।

শিল্পী-স্মরণ

লন্ডনের রয়্যাল স্কুলের কৃতী সঙ্গীত-ব্যক্তিত্ব, কলকাতা এবং দেশবিদেশের বহু শহরের মঞ্চ মাতিয়েছেন তিন দশকেরও বেশি। কলকাতার আদি ফিউশন ব্যান্ড ‘কর্ম’য় ছিলেন দীর্ঘ দিন। ১৯৯৯ সালে যুক্ত হন বাংলা ব্যান্ড ‘ভূমি’র সঙ্গে। অতি পরিচিত সাধারণ বস্তুও তাঁর হাতে অনায়াসে বাদ্যযন্ত্র হয়ে উঠত। তিনি সঙ্গীতমহলে সকলের বন্ধুস্থানীয় সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি তাঁর আকস্মিক প্রয়াণ ঘটল। লেক অ্যাভিনিউয়ে শুভেন চট্টোপাধ্যায় ও ‘ভূমি’র সুরজিতের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় গানে-বাজনায়-স্মৃতিচারণে স্মরণ করা হল প্রয়াত শিল্পীকে।

গানসন্ধ্যা

কলেজ-জীবনে ডাক্তারি পড়ার পাশাপাশি সিধু-র প্রধান ঝোঁক ছিল গানবাজনায় এবং এ ভাবেই এগোতে এগোতে ১৯৯৯-এ তাঁদের ক্যাকটাস থেকে প্রথম অ্যালবাম পেল এই শহর— ‘হলুদ পাখি’। ১৯৯২-এ জন্মানো ক্যাকটাস অদ্ভুত ভাবে বাংলা গানের জগতে এমন জায়গা করে নিল যে তরুণ প্রজন্ম মেতে উঠল এই নতুন ধারার গানে, তাঁদের ‘বাংলা রক’ শব্দটির সঙ্গে হয়ে উঠল ওতপ্রোত। ২০০৩-এ সিধু সিদ্ধান্ত নিলেন, ডাক্তারি আর নয়, মাইক্রোফোন-ই তাঁর বেঁচে থাকার একমাত্র রসদ হবে। পুরোপুরি মন দিলেন গানে, সে যাত্রা আজও অব্যাহত। সিধুর মধ্যেকার ডাক্তার সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়কে ভুলেই গিয়েছে এ শহর, সে শুধু রকস্টার সিধুকেই চেনে। সিধুও বিশ্বাস করেন যে তিনি এক জন ‘এন্টারটেনার’, মানুষকে গানে মুগ্ধ করে রাখাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। তিনি একাধারে যেমন সুবক্তা, তেমন এক জন সফল উপস্থাপকও। এক জন জনপ্রিয় কুইজ় মাস্টার হিসেবেও সিধু পরিচিত এখানে। তাঁকে ঘিরে যে গানপাগল গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, ‘লাভ ইউ সিধুদা’, তারা তাঁর পঞ্চাশতম জন্মদিন উদ্‌যাপন করবে আইসিসিআর-এ ২৮ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টায়। সিধুকে শুভেচ্ছা জানাতে সে দিন উপস্থিত থাকবেন ও গান গেয়ে শোনাবেন তাঁর গায়ক বন্ধুরা... উপল সেনগুপ্ত, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, অনুপম রায়, অনিন্দ্য বসু... আরও অনেকে। থাকবেন হৈমন্তী শুক্ল ও বাংলা ছবির বিশিষ্ট জনেরা। প্রকাশিত হবে সিধুর দু’টি নতুন গান। ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ সংস্থার শিশুরাও সঙ্গীত পরিবেশন করবে সিধুর ব্যান্ডের সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE