Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: শিল্পকর্মে প্রাণের স্পন্দন

ডোকরার নানা আঙ্গিক তাঁর কাজের আড়ালে-আবডালে নতুন ভাষা খুঁজে নিয়েছিল, আর তা সম্ভব হয়েছিল মীরার আপন গুণে। লোকায়তের সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি হওয়া তাঁর নিজস্বতার এই ভাষা সমকালের ভারতীয় ভাস্কর্যের দিশাকে আধুনিকতার পথে চালিত করেছিল।

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩২
Share: Save:

মাধ্যম হিসেবে ভালবাসতেন ব্রোঞ্জে কাজ করতে। নির্মাণের মধ্যে অনবরত খুঁজে নিতেন প্রাণের স্পন্দন। আসলে জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে প্রাণস্পন্দনের অনুসন্ধানে ব্রতী ছিলেন শিল্পী মীরা মুখোপাধ্যায় (১৯২৩-১৯৯৮)। এই অনুসন্ধানের সময় তাঁর নজর থেকেছে ভারতবর্ষের কারুশিল্পের নানা শাখাপ্রশাখার দিকে। বিশেষ করে ধাতুশিল্প ডোকরা ছিল তাঁর পছন্দের বিষয়। ডোকরার নানা আঙ্গিক তাঁর কাজের আড়ালে-আবডালে নতুন ভাষা খুঁজে নিয়েছিল, আর তা সম্ভব হয়েছিল মীরার আপন গুণে। লোকায়তের সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি হওয়া তাঁর নিজস্বতার এই ভাষা সমকালের ভারতীয় ভাস্কর্যের দিশাকে আধুনিকতার পথে চালিত করেছিল। কারুকলার প্রাচীন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে তৈরি করেছিলেন গভীর সম্পর্ক। বাংলা শুধু নয়, দক্ষিণ ভারত এবং মধ্যপ্রদেশ কোথায় না অনুসন্ধান করেছেন ভারতের ব্রোঞ্জ শিল্পের আপন ভাষাকে। দক্ষিণ ভারতে দেখেছেন চোল ব্রোঞ্জের নিদর্শন তো মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত প্রান্তরে বা বাংলার বর্ধমানের গুসকরার গ্রামে অনুসন্ধান করেছিলেন ধাতু ব্যবহারের অন্দরে প্রাণের হদিস খোঁজার সূত্রগুলি। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর কাজের ওপর ছায়া বিস্তার করেছিল লোকায়ত এবং ধ্রুপদীর নানা অঙ্গসূত্র। সেই সঙ্গে মায়ের আলপনার মধ্যে দেখতে পেয়েছিলেন স্বতঃস্ফূর্ততার আড়ালে লুকিয়ে থাকা শিল্পের ভাষাকে। সঙ্গে পাশ্চাত্যের শিল্পকলা দেখার বিপুল অভিজ্ঞতা তো ছিলই। এই সমস্ত কিছু জুড়ে নিয়েই তৈরি হয়েছে মীরা মুখোপাধ্যায়ের আপন শিক্ষার পথ। সেই দীর্ঘ পথের অজস্র দিক, বাঁকবদল রয়েছে, যে দিকগুলির বিপুল পর্যালোচনার প্রয়োজন ছিল। সেই প্রয়োজনের অনেকটাই হয়তো মিটবে এ বার, কারণ আকারপ্রকার আর্ট গ্যালারির সঙ্গে ইমামি আর্টের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি আনন্দপুরের ইমামি আর্ট সেন্টারে প্রকাশ পেল পিয়োরিটি অব ভিসন (মাপিন/ আকারপ্রকার) বইটি। যার কেন্দ্রীয় চরিত্রই হলেন মীরা মুখোপাধ্যায়। বইটিতে লিখেছেন নন্দিনী ঘোষ, মৈত্রেয়ী চট্টোপাধ্যায়, অদীপ দত্ত, প্রণবরঞ্জন রায়-সহ শিল্প বিশেষজ্ঞরা। প্রচুর দুর্লভ চিত্র, নানা সময়ে করা মীরার শিল্পকর্ম ইত্যাদির চমৎকার উপস্থাপনায় বইটি বাংলার শিল্প চর্চার ইতিহাসে এক মূল্যবান সংযোজন। সঙ্গে মীরার ‘বৈষ্ণব সিঙ্গার্স’ ও বইটির প্রচ্ছদ।

দ্বিশতবর্ষে

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯১) জন্মের দ্বিশতবর্ষ পূর্ণ হতে আর মাত্র দু’বছর বাকি। বার্ষিকী উদ্‌যাপনে বাঙালির উদ্যম সুবিদিত। ইতিমধ্যেই হেমেন্দুবিকাশ চৌধুরীর সভাপতিত্বে তৈরি হয়েছে বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটি, তাতে সহযোগ দুই বঙ্গেরই। দু’বছর ব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা বিদ্যাসাগরের আসন্ন জন্মদিন, ২৬ সেপ্টেম্বর। তার প্রাক্কালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছিল নানা আয়োজন, যোগ দিয়েছিলেন এই বাংলার প্রতিনিধিরা। ২৫ সেপ্টেম্বর আসছেন বাংলাদেশের দশ জন প্রতিনিধি, সকাল দশটায় বিদ্যাসাগরের বাসভবনে (৩৬ বিদ্যাসাগর স্ট্রিট) অনুষ্ঠান। ২৬ সেপ্টেম্বর আইসিসিআর-এর সহযোগিতায় তাদেরই সভাকক্ষে দুপুর ২.৩০-এ প্রথম কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। সভাপতি পবিত্র সরকার।

ভারতপথিক

পুলিনবিহারী সেন, যোগানন্দ দাস, দিলীপকুমার বিশ্বাসের উৎসাহে শুরু হয়েছিল কাজটি। চার দশক বাদে তারই পূর্ণাঙ্গ রূপ প্রকাশ পাচ্ছে গৌতম নিয়োগী সম্পাদিত রামমোহন-চর্চা গ্রন্থে। ত্রিশটি রচনার এই সঙ্কলনের শুরুতেই আছে রবীন্দ্রনাথের গদ্য— ১৯৩৩-এ রামমোহনের প্রয়াণ-শতবর্ষে সভাপতির অভিভাষণ যেখানে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘ভারতপথিক’। রামমোহনের জন্মসাল বিতর্ক নিয়ে সুরেশপ্রসাদ নিয়োগীর লেখা কিংবা রামমোহনের বংশপরিচয় নিয়ে দিলীপকুমার বিশ্বাসের তথ্যবহুল লেখার সঙ্গেই আছে নানা দিক নিয়ে প্রমথ চৌধুরী থেকে বহু বিশিষ্ট জনের রচনা। রামমোহনের ১৮৫তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের উপাসনা-গৃহে ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় সুদিন চট্টোপাধ্যায়ের হাতে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। আছে আলোচনাও।

নকশিকাঁথা

নিতান্ত সাংসারিক প্রয়োজনে বাংলার গৃহবধূদের হাতে একদা সূচনা হয়েছিল কাঁথা সেলাইয়ের। ক্রমে তাঁদের হাতেই সামান্য হল অসামান্য— সাধারণ শীতবস্ত্র থেকে নকশিকাঁথা। শিল্পের সঙ্গে সাহিত্যেও নকশিকাঁথার অনুরণন বড় কম নয়। গুরুসদয় দত্ত অবিভক্ত বাংলার গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে সংগ্রহ করেছিলেন অজস্র নকশিকাঁথা। প্রয়াত শীলা বসাকের গবেষণায় উদ্ভাসিত হয়েছে এই কাঁথার নানা দিগন্ত। আজও বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার অসংখ্য মহিলার অন্নসংস্থান হয় নকশিকাঁথার কাজে। এ পর্যন্ত নকশিকাঁথার জন্য বাংলার ১১ জন শিল্পী রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এই পরম্পরাকে তুলে ধরতে রাজ্য তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ২৮-৩০ সেপ্টেম্বর আয়োজন করেছে ‘বাংলার নকশিকাঁথা’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীর (রোজ ২-৮)।

মালদা-উৎসব

এক দিকে ১৯৯৮-এর বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ, অন্য দিকে কলকাতায় বসবাসকারী মালদহের ভূমিপুত্রদের একত্র হওয়ার ইচ্ছা— এই উদ্দেশ্যে ওই বছরেই ২০ সেপ্টেম্বর চব্বিশ জন মিলে তৈরি করেন মালদা সম্মিলনী ক্যালকাটা। আজ যার সদস্য সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক। জন্মলগ্ন থেকেই নানা ধরনের সেবায় ব্রতী এই সংগঠন। মালদহ জেলার বহু মানুষ এগিয়ে এসে এই কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছেন। কুড়ি বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর মৌলালি যুব কেন্দ্রে আয়োজন করা হয়েছে ‘মালদা উৎসব’। মালদহের লোকসংস্কৃতি (গম্ভীরা, মানব পুতুল নাচ), সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জেলার বিখ্যাত খাবারের স্টল, বিশিষ্টদের সংবর্ধনা জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে চলবে উৎসব। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে।

শতবর্ষে

তাঁর প্রথম কবিতার বইয়ের ভূমিকা লেখেন জীবনানন্দ দাশ। সেই ‘স্বপ্নকামনা’র আগে, ১৯৩৮-এ কিরণশঙ্কর সেনগুপ্তের (১৯১৮-৯৮) কবিতাযাত্রার সূচনা। বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় সে বছর প্রকাশিত হয় তাঁর দু’টি কবিতা। দীর্ঘ ছয় দশকের কবিজীবনে একের পরে এক কবিতার বই। প্রায় ত্রিশ বছর সম্পাদনা করেছেন ‘সাহিত্যচিন্তা’ পত্রিকা। কবির জন্মশতবর্ষ পালিত হবে ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায়, বাংলা আকাদেমি সভাঘরে। নির্বাচিত কবিতা, প্রবন্ধ, স্মৃতিচারণ ও তাঁকে নিয়ে লেখার স্মারক সঙ্কলন প্রকাশিত হবে। সূচনাপর্বে বলবেন সুবোধ সরকার। স্মৃতিচারণ ও আলোচনা, কবিতা পাঠ ও আবৃত্তিতে বিশিষ্ট জন। সভাপতি জয় গোস্বামী।

অজিতেশ স্মরণ

‘‘নিজেকে পুরোপুরি উৎসর্গ করেছিলেন নাটকে, কখনও আপস করতেন না। নাট্যকর্মীদের মধ্যে কোনও উঁচুনিচুর ভেদ করতেন না, তাঁর কাছে কায়িক ও মানসিক শ্রমের সমান গুরুত্ব ছিল, তিনি চাইতেন প্রত্যেক নাট্যকর্মীই যেন নাট্যপ্রযোজনার সব বিভাগে দক্ষ হয়ে ওঠেন।’’ অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৩৩-১৯৮৩) সম্পর্কে বলছিলেন পবিত্র সরকার। একদা নান্দীকার-এ অজিতেশের তত্ত্বাবধানে নাটকের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন তিনি, সেই স্মৃতিই বিস্তারিত বলবেন অজিতেশের ৮৫ বছর পূর্তির স্মরণ অনুষ্ঠানে— সাঁঝবেলা নিবেদিত ‘প্রসঙ্গ অজিতেশ’। তপন থিয়েটারে ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়। বলবেন জগন্নাথ ও ঊর্মিমালা বসু, সমর মিত্র। অজিতেশ রচিত কবিতা পাঠ করবেন স্বাতী পাল চৌধুরী। প্রাককথনে সন্ধ্যা দে, সমগ্র অনুষ্ঠান পরিকল্পনাও তাঁরই, সঙ্গে শ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আশি বছরে

তাঁর কবিতার স্পষ্ট বাচনে স্বাভাবিক কথনভঙ্গি। তফাত নাটকীয়তা। অথচ শব্দচিত্রের প্রার্থিত নাট্যরস থেকে বঞ্চিত হন না শ্রোতারা। ১৯৩৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার মন্মথপুরে গৌরী ঘোষের জন্ম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় এমএ, রেডিয়োতে টানা ৩১ বছর চাকরি। বাবা রেলে ছিলেন, অবসরের পর কাটিহারের আমলাটোলায় বসবাস শুরু করেন। ছেলেবেলার শেষ দিকটা বাচিকশিল্পী গৌরীর ওখানেই কেটেছে। তার পর কলকাতায়। এখন অন্যদের দিয়ে কাজ করিয়েই তাঁর আনন্দ। এ বার তাঁরই আশি বছর উপলক্ষে ‘ভাবনা’র উদ্যোগে ৩০ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্রসদনে সন্ধে ৬টায় অনুষ্ঠান। থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী, জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।



স্মারক বক্তৃতা

প্রাণকৃষ্ণ ভট্টাচার্য উনিশ শতকের শেষের সুলেখক, প্রাবন্ধিক,আত্মজীবনীকার। তৎকালীন বড়লাটের প্রেস-সুপারিন্টেন্ডেন্ট। কলকাতা, দিল্লি, সিমলায় বিস্তৃত তাঁর জীবনপ্রবাহ। চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান। ব্রাহ্ম সমাজের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক। পুরনো কলকাতার স্পর্শ খুঁজে পাওয়া যাবে তাঁর আত্মজীবনীর অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির পাতায় পাতায়। তার সামান্য অংশ দেখানো হবে ২৪ সেপ্টেম্বর লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে প্রাণকৃষ্ণ ভট্টাচার্য দ্বিতীয় স্মারক বক্তৃতায়। বক্তা প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদার। সভাপতিত্বে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য গোপা দত্ত।

বাংলার সম্পদ

তিন বছর আগে আমেরিকার এক শহরে বঙ্গসম্মেলনের আবহে জন্ম ‘বেঙ্গলি লিটরেচার গোজ় গ্লোবাল’ (বিএলজিজি) সংস্থার। ওঁরা চেয়েছিলেন, রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে আজকের বাংলা সাহিত্য ইংরেজি অনুবাদে বিশ্বে ছড়িয়ে যাক। এগিয়ে এল কলকাতার প্রকাশনা সংস্থা ‘ইন্ডিক হাউস’, মিলিত আয়াসে জন্ম নিল বই ট্রেজ়ার্স অব বেঙ্গল (সম্পা: সুমিতা বসু ও অর্ণব রায়)। দুই বাংলার ২৪টি ছোটগল্পের ইংরেজি এই অনুবাদ-বইয়ে ১২০ বছরের বাংলা কথাসাহিত্য, রবীন্দ্রনাথ-দাদাঠাকুর-তারাশঙ্কর-আশাপূর্ণা হয়ে মহাশ্বেতা-হাসান আজিজুল হক-হুমায়ুন আহমেদ। ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় আইসিসিআর-এ বইটির উদ্বোধন, প্রধান অতিথি শঙ্খ ঘোষ। অনুবাদ নিয়ে আলোচনার পর আছে রুদ্রপ্রসাদ-স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের গল্পপাঠ।

শতবর্ষ দিবস

১৯১৮-র ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠা। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বাংলা সমেত অন্য কয়েকটি আধুনিক ভারতীয় ভাষায় এমএ পঠনপাঠন ও পরীক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় দীনেশচন্দ্র সেনকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা থেকে প্রয়োজনীয় গ্রন্থাদি রচনায় রত করেন, তাঁকেই করেন বিভাগীয় প্রধান। শিক্ষক হিসাবে জে এন দাস, বিজয় মজুমদার, চারু বন্দ্যোপাধ্যায়, বসন্তরঞ্জন রায়, শশাঙ্কমোহন সেন, রাজেন্দ্র শাস্ত্রী প্রমুখকে বাছেন দীনেশচন্দ্র। প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ দিবসটি বাংলা বিভাগ ও বিভাগের প্রাক্তনী সংস্থা পালন করবে ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ২:৩০-এ আশুতোষ হলে। উদ্বোধনে উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবর্ধিত হবেন প্রাক্তনী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় সুধীর চক্রবর্তী দেবেশ রায় ব্রাত্য বসু। সংবর্ধনা দেবেন প্রবীণতম প্রাক্তনী পূর্ণেন্দুপ্রসাদ ভট্টাচার্য। থাকবেন প্রাক্তনী শঙ্খ ঘোষ।

পঞ্চাশে পা

মিনার্ভা থিয়েটারে ছোট নিমাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, গিরিশচন্দ্র ঘোষের ‘শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য’। ক্লাস সিক্সে পড়েন তখন সীমা মুখোপাধ্যায়। সেই শুরু। পরে সংলাপ-এর ‘ইস্পাত’ নাটকে সীমার অভিনয় দেখে রঙরূপ থেকে ‘কণ্ঠস্বর’ নাটকে অভিনয়ের জন্যে আহ্বান, সেখানে যোগদান আশির দশকের গোড়ায়। পাশাপাশি নির্দেশনারও শুরু, প্রথমে একাঙ্ক, তৃপ্তি মিত্রের ‘বলি’, পরে পূর্ণাঙ্গ, ‘যে জন আছে মাঝখানে’। একের পর এক নাটক... শেষ রক্ষা, জলছবি, মায়ের মতো, অব্যক্ত, তখন বিকেল, ছায়াপথ... গত ত্রিশ বছর ধরে অভিনেত্রী ও নির্দেশক হিসেবে সীমা ও রঙরূপ আজ প্রায় অদ্বয়। রঙরূপ-এর জন্ম ১৯৬৯-এ, আসন্ন জন্মদিন ২ অক্টোবরে তাদের পঞ্চাশে পা। এ পর্যন্ত নিজেদের জন্মদিনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে এসেছে নাট্যগোষ্ঠীটি, কখনও গান, কখনও বা খালেদ চৌধুরীর শিল্পকর্মের প্রদর্শনী, কখনও আবার রবীন্দ্রনাটক নিয়ে তর্কালাপ। এ বার ২-৮ অক্টোবর নাট্যোৎসব। সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। সকাল ১০টায় সেমিনার, বলবেন সতীশ আলেকার, সুধন্য দেশপান্ডে, নীলম মানসিং চৌধুরী, অমিতেশ গ্রোভার, অঞ্জন দত্ত, তৃণা নিলীনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঞ্চালনায় শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরনো প্রযোজনাগুলির সঙ্গে এ উৎসবে রঙরূপ-এর নতুন প্রয়োজনাও— ‘সোনাই বিবি’, ৩ অক্টোবর সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে। ‘‘নাটকই আমায় প্রতিনিয়ত বৃহত্তর ‘আমি’র দিকে এগিয়ে দিচ্ছে। আর থিয়েটারই আমায় শিখিয়েছে কখনও আপস না করতে।’’— স্বীকারোক্তি সীমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE