Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: পুঁথি থেকে বই হল ‘ডালি’

কয়েক সপ্তাহ হাঁটাহাঁটি করার পর প্রেমেন্দ্র মিত্র দেন ‘পুরাতন’ কবিতাটি: ‘‘অনেক আকাশ গেছে মরে,/ খোলসের মত গেছে খসে,/ ডুবে গেছে অনেক পৃথিবী/ বার বার প্রলয়-প্লাবনে।...’’ নিজের হাতে লেখেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও— ‘‘...সকল কলহ ও বিদ্বেষ ভুলিয়া বাঙ্গালী আবার একতা-বদ্ধ হউক, বাঙ্গালী আবার মানুষ হইবে, বাঙ্গালা জাগিয়া উঠিবে।’’

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১১
Share: Save:

চিত্রকলা সাথে করো/ সাহিত্যের মিলনসাধনা/ লেখনীর লীলারঙ্গে/ সুন্দর লভুক অভ্যর্থনা।’’ আশি বছর আগে, ১১ অক্টোবর ১৯৩৮, রবীন্দ্রনাথ স্বহস্তে এই আশীর্বাণী লিখে দেন ‘ডালি’র পাতায়। সে আখর আজও অমলিন। শুধু কি বিশ্বকবি? সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় লিখে দিয়েছিলেন প্রাচীন বিদিশায় খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে স্থাপিত বিষ্ণুভক্ত গ্রিক হেলিয়োদোর-এর গরুড়স্তম্ভলিপির একাংশ। কয়েক সপ্তাহ হাঁটাহাঁটি করার পর প্রেমেন্দ্র মিত্র দেন ‘পুরাতন’ কবিতাটি: ‘‘অনেক আকাশ গেছে মরে,/ খোলসের মত গেছে খসে,/ ডুবে গেছে অনেক পৃথিবী/ বার বার প্রলয়-প্লাবনে।...’’ নিজের হাতে লেখেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও— ‘‘...সকল কলহ ও বিদ্বেষ ভুলিয়া বাঙ্গালী আবার একতা-বদ্ধ হউক, বাঙ্গালী আবার মানুষ হইবে, বাঙ্গালা জাগিয়া উঠিবে।’’ প্রমথেশ বড়ুয়ার লেখাটি ছিল ‘আমাদের দেশের সিনেমা’। শুধু লেখা নয়, ছবিও এঁকে দিয়েছিলেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ঈশ্বরীপ্রসাদ বর্মা, মাখন দত্তগুপ্ত প্রমুখ বিশিষ্ট শিল্পী। কেমন করে সম্ভব হল এমন সঙ্কলন? তা ছাড়া, এ পর্যন্ত এ সব রচনা-চিত্র পাঠকের দরবারে পৌঁছয়নি কেন? কী করে পৌঁছবে, আশি বছরে এ তো ছাপাই হয়নি কখনও। ‘ডালি’ তো হাতে-লেখা পত্রিকা, রচনা করেছিলেন বাইশ বছরের তরুণ সমর সরকার, সম্পাদনাও তাঁর। সম্পূর্ণ অলঙ্করণ করেছিলেন শিল্পী রবীন ভট্টাচার্য, তাঁরও তখন একই বয়স। ম্যাট্রিক পাশ করেই সমরবাবু প্রথম হাতে-লেখা পত্রিকা ‘ডালি’ তৈরি করেন, দু’বছর পর পর রচনা করেন আরও তিনটি ‘ডালি’। সময়ের ঝড় কাটিয়ে টিকে আছে শেষ দু’টি, শেষতমটি রচনা ও চিত্রগুণে, হাতের লেখায়, অলঙ্করণে সব সেরা। এ বার সেই চতুর্থ সংস্করণের ‘ডালি’র নির্বাচিত অংশ অবিকল প্রতিলিপি আকারে প্রকাশ করল লালমাটি, সম্পাদনায় সৌভিক গুহসরকার। অবতরণিকায় সম্পাদক খুঁজেছেন বাংলায় হাতে-লেখা পত্রিকার ইতিহাস, দেখিয়েছেন ১৮৪০-৪২ নাগাদ কৈলাসচন্দ্র বসু, ১৮৪১-এ মাইকেল মধুসূদন দত্ত হাতে-লেখা পত্রিকা তৈরি করেন। ১৯০১-এ শরৎচন্দ্রের ‘ছায়া’, সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের ‘তরণী’, ১৯০৫-৬’এ সুকুমার রায়ের ‘সাড়ে বত্রিশ ভাজা’ আর ১৯১০-১৭’র মধ্যে শান্তিনিকেতন থেকে প্রস্তুত ‘বাগান’, ‘আশ্রম’, ‘শান্ত’ ও ‘প্রভাত’ নামে আরও এমন পত্রিকার হদিশ পাওয়া যায়। এই ধারাতেই এল ‘ডালি’। পিতামহের এই অবিস্মরণীয় উদ্যোগের কথা সবিস্তারে লিখেছেন সৌভিক। সে ইতিবৃত্তে লুকিয়ে আছে বাঙালির এক অনন্য উদ্যমের পরিচয়। সঙ্গে ‘ডালি’ থেকে রবীন ভট্টাচার্যের একটি চিত্র।

প্রাচীন চিত্র

বাংলার শিল্পীদের সঙ্গে ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশের শিল্পীদের কাজের পরিচয় ঘটে অষ্টাদশ শতকে। এখানকার কিছু শিল্পী সেই সব কাজের ধরন-প্রকরণ আয়ত্ত করতে থাকেন। এর মধ্যে জলরং ছাড়াও উল্লেখযোগ্য ছিল তেলরং। তবে ভারতীয় শিল্পীদের কাজে প্রাধান্য পায় পৌরাণিক বিষয়গুলি। এই নব্য শিল্পধারাটি পরিচিতি লাভ করে ‘আর্লি বেঙ্গল’ বা ‘ডাচ বেঙ্গল’ স্কুল নামে। চুঁচুড়া বা সন্নিহিত ডাচ অধ্যুষিত অঞ্চলে এই ধরনের চিত্রচর্চার সন্ধান মেলে। স্থানীয় জমিদার, ব্যবসায়ী এবং অভিজাতদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই ছবির নির্মাণ চলেছে প্রায় বিশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সব ছবিতে শিল্পীর কোনও স্বাক্ষর থাকত না, ফলে তাঁদের পরিচয় পাওয়া দুষ্কর। যে কয়েক জনের নাম পাওয়া যায় তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বামাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মতিলাল পাল। এই ধারায় দুর্গা, কালী, শিব, রাধাকৃষ্ণ, অবতার এবং রাগমালা ভিত্তিক ছবির সঙ্গে পাওয়া যায় রাজা নবকৃষ্ণ দেব বা অন্য সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির ছবিও। যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে সে কালের বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ হারিয়ে গিয়েছে। তবে এমনই বেশ কিছু ছবি সংরক্ষিত হয়েছে চিত্রকূট আর্ট গ্যালারিতে। তা থেকেই ২৯টি ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বেঙ্গল ডিভাইন’ শীর্ষক প্রদর্শনী, চলবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত, ৩-৮ টা। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

দুই তারকা

‘সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল’। তিরিশ থেকে ষাটের দশক ছিল বাংলা গানের সোনার দিন, প্রাণভরে আধুনিক বাংলা গান শোনার দিনও। আর বাংলা গানের সেই সোনার দিনের নির্মাণ যাঁদের হাতে হয়েছিল, তাঁদের এক জন ছিলেন শচীন দেববর্মণ। আধুনিক বাংলা গানের গায়কির অনেকটাই তৈরি করে দিয়েছিলেন শচীনকত্তা। সাদার্ন অ্যাভিনিউ ও কেয়াতলার সংযোগস্থলে, কলকাতা পুরসভার দেওয়া জমিতে এ বার ‘অমিতকুমার অফিশিয়াল ফ্যান ক্লাব’ তাদের চোদ্দো বছর পূর্তি উপলক্ষে শচীনদেব ও কিশোরকুমারের দু’টি পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপন করছে আজ, ২২ অক্টোবর, বেলা ১২টায়। ভাস্কর সঞ্জীব নারায়ণ দত্তের বানানো মূর্তি দু’টির উন্মোচন-অনুষ্ঠানে থাকবেন স্বয়ং অমিতকুমার, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, ৮ নং বরোর চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। ছবিতে শচীন দেববর্মণ ও কিশোরকুমার।

মঞ্চগান

গানগুলির কখনও প্রত্যক্ষ, কখনও পরোক্ষ সঙ্গী কিন্তু থিয়েটারি প্রযোজনা। ফলে অনায়াসেই বলা যেতে পারে এগুলি মঞ্চগান, আবার সে মঞ্চগানগুলি পঞ্চকবির। যেমন নজরুলের ‘আয় আয় মোর ময়ূর বিমান’, অতুলপ্রসাদের ‘চাঁদিনী রাতে কে গো আসিলে’, দ্বিজেন্দ্রলালের ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’, রজনীকান্তের ‘কত ভাবে বিরাজিছ’, এবং রবীন্দ্রনাথের ‘আঁধার রাতে একলা পাগল’। বাংলার এই সব মঞ্চগান আর পঞ্চকবির গান গেয়ে আমেরিকার ডালাস-নিউইয়র্ক-ওয়াশিংটনের শ্রোতা-দর্শকদের মন জয় করে দেশে ফিরলেন শিল্পীদম্পতি দেবজিত্‌ ও ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। শারদোৎসবের আবহে এই শিল্পীযুগলের সিডি-অ্যালবাম প্রকাশ করল বাংলা নাটক ডট কম: ‘পঞ্চকবির মঞ্চগান’। গানগুলির কোনওটি গেয়েছেন দেবজিত্‌, কোনওটি ঋদ্ধি, কোনওটি আবার যুগলে। সঙ্গে ভাষ্য, তাতে মঞ্চগানগুলির প্রাসঙ্গিক তথ্য ও প্রেক্ষাপট। রসাস্বাদনে বৈচিত্রের দীপ্তি পাবেন শ্রোতারা।

পাঞ্জু শাহের গান

লালনের গান শুনেই তাঁর মনে সঙ্গীত রচনার প্রেরণা জন্মায়। লালন সম্প্রদায়ের মানুষ পাঞ্জু শাহের (১৮৫১-১৯১৪) জন্ম পূর্ব বাংলার ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা গ্রামে। বাউল-সহজিয়া-সুফি-যোগী ধারার মধ্যেই নিজের অবস্থান বেছে নেন তিনি, হিন্দু-মুসলিম বিভাজন, জাতিভেদের নিন্দনীয় প্রথা, নারীর প্রতি সামাজিক অবিচার হয়ে ওঠে তাঁর গানের অবলম্বন। তাঁকে দীক্ষা দিয়েছিলেন যে সুফি গুরু, হিরাজতুল্লাহ্ (হিরুচাঁদ), তাঁকে নিজের গানে বারে বারে স্মরণ করেছেন পাঞ্জু শাহ্। তবে লালনের মতো জনপ্রিয়তা তো তিনি পাননি, ফলে তাঁর প্রতিভার মূল্যায়নও হয়নি। ঢাকায় বাংলা একাডেমি থেকে খোন্দকার রিয়াজুল হকের সম্পাদনায় তাঁর গীতিসঙ্কলন না বেরোলে তিনি অগোচরেই থেকে যেতেন। সেই গানের সম্ভার থেকে বেশ কিছু গানের সুর করেছিলেন প্রয়াত লোকসঙ্গীত শিল্পী দিনেন্দ্র চৌধুরী, তাঁর উত্তরাধিকারী তপন রায় এ বার গেয়েছেন সেই সব গান। এই প্রথম পাঞ্জু শাহের গানের পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম (অ্যাঞ্জেল ডিজিটাল) বেরোল, বিস্মৃত এই শিল্পীকে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছনোয় উদ্যোগী হওয়ায় সাধুবাদ প্রাপ্য লোকশিল্পী তপন রায়ের।

বিদেশিনী

পেশায় তিনি দর্শনের অধ্যাপিকা, পাশাপাশি লেখিকা ও আলোকচিত্রীও। কয়েক দশক ধরেই ভারত তাঁর ঘরবাড়ি হয়ে গিয়েছে, বছরের অনেকটা সময় কাটান এখানেই। ভারতীয় সংস্কৃতির গভীর আকর্ষণে দেশটাকে চষে ফেলেছেন। আপাতত আছেন কলকাতাতেই, গবেষণা করছেন দুর্গোৎসব ও দেবীপূজার ঐতিহ্য নিয়ে। অর্থাৎ তাঁর চিন্তাবলয়ে রয়েছেন মা দুর্গা ছাড়াও মা কালী ও অন্যান্য শক্তি-আরাধনা— পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের নানা রাজ্যে। এ জন্য পেয়েছেন আইসিসিআর-এর সিনিয়র ফেলোশিপও। মিরেই জোসেফিন গিজ়েনেক-হিমবিন্দু বইও লিখেছেন গঙ্গা ও কাশী নিয়ে। এ বার তাঁরই তোলা আলোকচিত্র নিয়ে ভারতীয় সংগ্রহশালায় চলছে প্রদর্শনী (১২ নভেম্বর পর্যন্ত), সেখানে দুর্গাপ্রতিমা গড়েছেন কুমোরটুলির শিল্পী পরিবারের সন্তান সৌমেন পাল।

চণ্ডী-স্মরণ

‘‘কার্টুনিস্ট হিসাবে আমার কাজ হল দেশের নাগরিকদের সংবিধান যে সব অধিকার দিয়েছে সেগুলি লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখা।’’ মনে করতেন চণ্ডী লাহিড়ী (১৯৩১-২০১৮)। ফলে তাঁর মতে, কল্যাণকামী রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে কার্টুনিস্টদের সামনেও উন্মোচিত হয় তাঁদের সৃষ্টির বিপুল সম্ভাবনা। ‘‘সেক্ষেত্রে কার্টুন একটু আক্রমণাত্মক হবেই।... যাঁদের প্রতি ব্যঙ্গ করে এই সব ছবি আঁকা হয়— তাঁরাও অনেক সময় নিজেদের ভুলত্রুটি সংশোধন করে নেন এমন নজীর আছে।’’ লিখেছেন চণ্ডী লাহিড়ী। তাঁরই বিভিন্ন স্বাদের বেশ কিছু লেখায় ভরে উঠেছে বিষয় কার্টুন-এর (সম্পা: বিশ্বদেব গঙ্গোপাধ্যায়) ‘চণ্ডী লাহিড়ী স্মরণ সংখ্যা’। সংখ্যাটির অনেকটা জুড়ে তাঁর সাদাকালো কার্টুনাদি, রঙিন কার্টুনের সিরিজ়, এবং তাঁর করা দুর্লভ কিছু গ্রন্থপ্রচ্ছদ। আবার তাঁকে নিয়েও আনন্দগোপাল সেনগুপ্ত নারায়ণ সান্যাল সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় শংকর-এর মতো মানুষজনের রচনা। চলচ্চিত্রকার অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘যতগুলো হাসির ছবি করেছি, মৌচাক, মন্ত্রমুগ্ধ, পাকাদেখা, হুলুস্থূল সব ছবিরই টাইটেল উনি করেছেন।’’ লিখেছেন দেবাশীষ দেবও— ‘ফাদার ফিগার চণ্ডীদা’। প্রয়োজনীয় ভূমিকা লিখেছেন ঋতুপর্ণ বসু।

একক নাট্য

‘কসবা অর্ঘ্য’-র উদ্যোগে ৩০ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে একক অভিনয়ের আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব। প্রায় ১৮টি মোনোলগের এই উৎসবে থাকছে পোল্যান্ডের তিনটি নাটক— ‘হেলেন অব ট্রয়’, ‘মাল্টিটুড’ (সঙ্গের ছবি), ‘ময়াপদ্রাসদো ভেদা প্রকৃতি’। তৃতীয়টির পরিচালক ‘কসবা অর্ঘ্য’-র কর্ণধার মণীশ মিত্র। ‘লোকরঙ্গ ২০১৮’ উৎসবে আসছে বাংলাদেশের নাটক ‘আমার আমি’: বিনোদিনী দাসীর জীবন নিয়ে। আসছে বাংলাদেশেরই ‘গহনযাত্রা’। থাকছে তিজন বাঈ-এর ‘পাণ্ডবানী’, সঙ্গে তিজন-শিষ্যা সীমা ঘোষ। রয়েছে ‘ম্যাকবেথ বাদ্য’। কলকাতার ‘বহুস্বর’-এর ‘ভাঙা ভাঙা ছবি’: তুলিকা দাসের নির্দেশনায় এ নাটকে অভিনয় করেছেন সুকৃতি লহরী। থাকছে শহরের আরও ছ’টি দলের প্রযোজনা। দিল্লির ‘অলগোমরা— আ ট্রান্সমাইগ্রেশন’, মুম্বইয়ের ‘অন্তরধারা’, পুনের ‘মনসা কি শাদি’, হায়দরাবাদের ‘ম্যায় রাহি মাসুম’, জয়পুরের ‘হাম গুঙ্গে হ্যায়’, বিহারের লোকনাট্য ‘ভিখারিনামা’, কর্ণাটকের ‘প্রীতি সাম্ভ্রমাদা কানাসু’-র মতো নাটক। আসছে হুগলি ও মালদহের দল। দেখা যাবে ‘পূর্ব পশ্চিম’ নাট্যগোষ্ঠীর ‘একলা সম্রাট’, অভিনয়ে সৌমিত্র মিত্র। থাকছে ‘আমেরিকান ফুটবল’। তৃপ্তি মিত্র নাট্যগৃহ ও অ্যাকাডেমি মঞ্চ জুড়ে চলবে উৎসব।

কথাকার

তোমার উপন্যাস পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিল বাংলা ভাষায় এমন লেখা পড়িনি কখনও।... দীন-দরিদ্রের জীবনাতিপাতের সংখ্যাহীন খুঁটিনাটি পাতার পর পাতা জুড়ে আর কবার বাংলা কথাসাহিত্যে এভাবে দেখা গেছে জানি না।’’— একটি চিঠিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন কথাকার আনসারউদ্দিনকে। অথচ নদিয়ার নাকাশিপাড়ার স্নাতক-কৃষক আনসারউদ্দিন কবিতা রচনাতেই প্রথমে মনোযোগী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বেথুয়াডহরির ‘বনামি’ পত্রিকার সম্পাদক দিলীপ মজুমদার কবিতার বদলে ছেপে দিলেন ‘আবাদ’ গল্পটি, চোখে পড়ে গেলেন সুধীজনের। ১৯৯৪-এ সুধীর চক্রবর্তী তাঁর ধ্রুবপদ থেকে প্রকাশ করলেন প্রথম বই আনসারউদ্দিনের গল্প। সুধীরবাবুর পরামর্শেই উপন্যাস লেখা শুরু, লিখেছেন বেশ কিছু আখ্যানকথন। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত গৈ-গেরামের পাঁচালি, শোকতাপের কথামালা, গো-রাখালের কথকতা, জন মুনিষ ইত্যাদি নয়টি বইয়ে উঠে এসেছে মানুষ-জমি-ফসলের কথা, গো-রাখালদের স্তরভেদ, মুসলমান সমাজের খুঁটিনাটি এবং হালফিলের গ্রামপতনের হাজারো লক্ষণ। পেয়েছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার। ২৭ অক্টোবর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কলেজ স্ট্রিট বই-চিত্র সভাঘরে অহর্নিশ এবং ক্র্যাকার সাহিত্যপত্রের বিজয়া-উদ্‌যাপন সন্ধ্যার মধ্যমণি গ্রামজীবনের এই বিচিত্র কথক আনসারউদ্দিন। তাঁর হাতে ‘অহর্নিশ সম্মাননা’ তুলে দেবেন সুধীর চক্রবর্তী এবং লেখকের নতুন বই গ্রামজীবনের সাতকাহন (ধ্রুবপদ) উদ্বোধন করবেন গৌর বৈরাগী। প্রকাশ পাবে আনসারউদ্দিনকে নিয়ে তৈরি একটি প্রণতি-পুস্তিকা যেখানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিঠি, সুধীর চক্রবর্তীর লেখা ছাড়াও আছে আনসারউদ্দিনের সাক্ষাৎকার। অনুষ্ঠানে তাঁর লেখালিখি নিয়ে আলোচনা করবেন নাসিম-এ-আলম, সম্বিত চক্রবর্তী ও রাজীব কুমার ঘোষ। ছবি: সপ্তর্ষি লোধ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE