Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: ছবির ডানায় বিশ্বভ্রমণ

উনিশ শতকের শেষ দিক থেকেই উপমহাদেশের বিভিন্ন শহরে উদ্যোগী নানা সংস্থা সচিত্র শুভেচ্ছাপত্র বিক্রি করতে শুরু করে। ছবিওলা পোস্টকার্ডের সংগ্রাহক-গবেষক ওমর খান নির্দিষ্ট তারিখযুক্ত সব থেকে পুরনো যে ভারতীয় নমুনা (গ্রিটিংস ফ্রম সাউথ ইন্ডিয়া) পেয়েছেন সেটি ১৮৯৬ সালের, ছেপেছিল ছোটখাটো কোনও জার্মান সংস্থা।

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

গন্তব্যে পৌঁছতে পৌঁছতে ১৯০০ সালে একটি ছবিওলা পোস্টকার্ড যে কত হাজার মাইল ঘুরে ফেলত তার ঠিক নেই। সে কালের মানুষ সারা জীবনেও এত ঘুরে উঠতে পারত না। ধরা যাক কোনও আঁকা ছবি বা আলোকচিত্র পাঠানো হল ড্রেসডেনে, সেখানে তা থেকে পোস্টকার্ড ছাপা হল। ছাপা পোস্টকার্ড ফিরে এল জয়পুরে, অর্ডার গিয়েছিল সেখান থেকেই। হাওয়া মহলের সামনে বিক্রি হতে লাগল সেই পোস্টকার্ড। তাকে আবার ডাকে ফেলা হল বোম্বাই থেকে, মাত্র কয়েক আনা খরচে দু’সপ্তাহে তা পৌঁছল লন্ডনে! অনেক পরে সিনেমা-টিভি কী আজকের ইন্টারনেট যে ভাবে দুনিয়াটাকে হাতের নাগালে এনে ফেলেছে, এও যেন সেই রকম। উনিশ শতকের শেষ দিক থেকেই উপমহাদেশের বিভিন্ন শহরে উদ্যোগী নানা সংস্থা সচিত্র শুভেচ্ছাপত্র বিক্রি করতে শুরু করে। ছবিওলা পোস্টকার্ডের সংগ্রাহক-গবেষক ওমর খান নির্দিষ্ট তারিখযুক্ত সব থেকে পুরনো যে ভারতীয় নমুনা (গ্রিটিংস ফ্রম সাউথ ইন্ডিয়া) পেয়েছেন সেটি ১৮৯৬ সালের, ছেপেছিল ছোটখাটো কোনও জার্মান সংস্থা। আর ভারতের কোনও সংস্থার পোস্টকার্ড প্রথম দেখা যাচ্ছে ১৮৯৭-তেই, সে গৌরব কলকাতার ডব্লিউ রসলার কোম্পানির। ছাপা হয়েছিল অবশ্য অস্ট্রিয়ায় (সঙ্গে তেমনই একটি কার্ড)। ১৯০০-১৪ পর্যন্ত রসলারের নাম ‘থ্যাকার্স ইন্ডিয়ান ডিরেক্টরি’তে পাওয়া যায়। বস্তুত ১৮৯৮-১৯০৩ পর্বে শতকোটি পোস্টকার্ড বিশ্ব জুড়ে লম্বা লম্বা পাড়ি দিয়েছে। মহিলারা ছিলেন এর সব থেকে বড় সংগ্রাহক। কিন্তু সাধারণ ভাবে কোনও প্রতিষ্ঠান ছবিওলা পোস্টকার্ড সংরক্ষণ করেনি, তাই এ সব থেকে গিয়েছিল পারিবারিক অ্যালবামেই। আজ তা সংগ্রাহকদের আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে পাঁচশোরও বেশি ছবি-সহ ওমর খানের পেপার জুয়েলস/ পোস্টকার্ডস ফ্রম দ্য রাজ (মাপিন ও দি আলকাজ়ি কালেকশন অব ফটোগ্রাফি)। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় ওমর খান ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বলবেন কলকাতার সচিত্র পোস্টকার্ড নিয়েই।

স্মরণীয়

‘‘সাত-আট বছর হয়ে গিয়েছে ‘পথের পাঁচালী’ তৈরি হওয়ার পর... ‘আমেরিকান সিনেমাটোগ্রাফার’ পত্রিকায় একটা লেখা পড়লাম নিকভিস্ট-এর— বার্গম্যানের সিনেমাটোগ্রাফার। ‘থ্রু আ গ্লাস ডার্কলি’ করেছেন তখন, দাবি করছেন যে তাঁরাই ‘বাউন্স লাইটিং’-এর আবিষ্কর্তা। কিন্তু আমরা তো ১৯৫৪ থেকেই এর ব্যবহার শুরু করেছি।’’ বলেছিলেন সত্যজিৎ রায়। আজ কে না জানে, ‘পথের পাঁচালী’ থেকেই তাঁর ছবিতে যে ‘বাউন্স লাইটিং’-এর ব্যবহার শুরু হল, তার আবিষ্কর্তা ছিলেন সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্র (১৯৩০-২০০১)। সিনেমাটোগ্রাফির নতুন ভাষা, নতুন এক আলোর পাঠ শুরু করেছিলেন তিনিই। সত্যজিৎ ছাড়াও কাজ করেছেন জেমস আইভরি, বাসু ভট্টাচার্য, রমেশ শর্মা প্রমুখের সঙ্গে। স্মরণীয় এই মানুষটির প্রতি জীবনস্মৃতি-র শ্রদ্ধার্ঘ্য চিত্রবাণী-তে, ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায়। প্রথম সুব্রত মিত্র স্মারক বক্তৃতা দেবেন সোমেশ্বর ভৌমিক: ‘চলচ্চিত্র ও রবীন্দ্রনাথের দৃশ্য ভাবনা’। সুব্রত মিত্রকে নিয়ে বলবেন আদিনাথ দাস: ‘একরোখা আলো’। আর দেখানো হবে সুব্রত মিত্রকে নিয়ে অরিন্দম সাহা সরদারের তথ্যচিত্রটি।

প্রয়াণ

কলকাতার শিক্ষাজগতের এক অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব শান্তা মহলানবিশ চলে গেলেন। ক্রমবর্ধমান অন্ধকারে ইংরেজি সাহিত্যের এই অধ্যাপিকা ছিলেন উজ্জ্বল প্রদীপশিখার মতো। প্রখর জ্ঞান, আত্মমর্যাদা ও বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল কোমলতা, ছাত্রছাত্রীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ ও সহানুভূতি, যা তাঁকে করে তুলেছিল সকলের প্রিয় ‘শান্তাদি’। তাঁর জন্ম ঝামাপুকুর মিত্র পরিবারে, ১৯৩০ সালে। লোরেটো হাউস থেকে সিনিয়র কেমব্রিজে প্রথম, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ ও এমএ-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন এফআর লিউইস ও এমসি ব্র্যাডব্রুক। ফিরে এসে প্রেসিডেন্সি কলেজে যোগ দেন। রমা চৌধুরী আমন্ত্রণ করেন লেডি ব্রেবোর্নে। ১৯৭৪ থেকে বেথুন কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রধান। একই সঙ্গে ষাটের দশকের শেষ থেকে পড়িয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট বোর্ড অব স্টাডিজ়ের সভানেত্রী ছিলেন এই সে দিন পর্যন্ত। ইংলিশ স্টাডিজ় সেন্টার তাঁর এক বহুসমাদৃত সৃষ্টি। জ্ঞানের ঔদ্ধত্য তাঁর ছিল না, ছিল অসীম এক নম্রতা, যার আজ বড়ই অভাব।

নানা ভাষায়

আশির দশকে কলাক্রান্তি নাট্য সংস্থাটির জন্ম। জন্মলগ্ন থেকেই সংস্থাটি নানান ধরনের নাটক পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে তো বটেই, এমনকী বাংলাদেশেও মঞ্চস্থ করে আসছে। তবে ১৯৯১ সাল থেকে কলাক্রান্তি আয়োজন করে আসছে এক অভিনব উৎসবের— ‘নানা ভাষায় ছোট নাটকের প্রতিযোগিতা’। হিন্দি, উর্দু, মরাঠি, কন্নড়, তামিল, মালয়ালম, ইংরেজি, বাংলা ও ওড়িয়া ভাষার প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতা উৎসবে যোগদান করেন। এ বার এই প্রতিযোগিতার রজত জয়ন্তী বর্ষ। উৎসব শুরু ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় মুক্তাঙ্গন রঙ্গালয়ে। চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

পরিযায়ী

একদা কমিউনিস্ট কবি স্টিফেন স্পেন্ডার নিজের সম্পাদিত ‘এনকাউন্টার’ পত্রিকার জন্যে লিখতে বলেছিলেন তাঁকে, ভারতীয় কবিতার উপর, স্বাধীনতা প্রাপ্তি তত দিনে ঘটে গিয়েছে ভারতের। আর কবি লিউইস টমসন তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে ছিলেন, সন্ধান দিয়েছিলেন নতুন পৃথিবীর। প্রথম জীবনে বারাণসীতেই দিন কাটত দেবেন ভট্টাচার্যের (১৯২১-২০০১), সংস্কৃতে স্নাত মানুষটি তখনও পুরনো রীতিতে ধুতি পরতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নানাবিধ কাজে যুক্ত থাকতে-থাকতে পাড়ি জমান প্রবাসে, ইংল্যান্ডে বিবিসি-তে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন। বড়ই বর্ণময় সে জীবন। রেডিয়ো-প্রযোজক, সঙ্গীতজ্ঞ, রেকর্ড-প্রযোজক, লোকশিল্প-বিশেষজ্ঞ, কবি, লেখক, অনুবাদক, চলচ্চিত্রকার... কত রকমের পরিচয় ছিল পরিযায়ী মানুষটির, গোটা পৃথিবীটাই ছিল তাঁর দেশ। প্যারিসে ১৯৬৯-এ আর এক বাঙালি ঝর্না বসুর সঙ্গে জড়িয়ে যায় তাঁর জীবন, দুই কন্যা শ্রীময়ী ও ঈশ্বরী। তাঁকে নিয়ে একটি ছবি করেছেন স্তেফান জুরদ্যাঁ: ‘মিউজ়িক অ্যাকর্ডিং টু দেবেন ভট্টাচার্য’। দেখানো হবে ১২ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়, আলিয়ঁস ফ্রাঁসেজ়-এ। তাঁকে নিয়ে আলোচনাও হবে সে সন্ধ্যায়, আর প্রকাশিত হবে তাঁর একটি বই: প্যারিস টু ক্যালকাটা: মেন অ্যান্ড মিউজ়িক অন দ্য ডেজ়ার্ট রোড।

নাট্যোৎসব

প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর। সেই দিনই ঋত্বিক সদনে শুরু হচ্ছে কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্রের চব্বিশতম নাট্যোৎসব। উদ্বোধনে থাকছে ঢাকার নাট্যদল প্রাঙ্গণেমোর-এর ‘হাছনজানের রাজা’, সন্ধে সাড়ে ৬টায়। নাটককার শাকুর মজিদ, নির্দেশক অনন্ত হিরা। বাংলা নাটকের এই উৎসবে যোগ দিচ্ছে কলকাতার বিশিষ্ট নাট্যদলগুলি। কেবল কল্যাণীর নয়, আশপাশের এলাকার নাট্যামোদী মানুষের, দর্শককুলের শক্তিকে নির্ভর করেই এ উৎসব নতুন উদ্দীপনায় মেতে ওঠে প্রতি বার। কল্যাণী নাট্যচর্চা’র সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘তোমার কোনও সত্য নেই’ মঞ্চস্থ হবে এ উৎসবে, ২৫ ডিসেম্বর সন্ধে ৬:৪৫-এ (সঙ্গে তারই ছবি)। শেষ দিন ২৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে ‘নাট্যমনন’ পত্রিকা। অন্য দিকে সুখচর পঞ্চম আয়োজিত শিশু কিশোর নাট্যমেলা— ‘অহিংসার খোঁজে টিনের তলোয়ার’। ১৬ ডিসেম্বর সারা দিন বিবেকানন্দ সভাগৃহে, বি টি রোড আগরপাড়ায়। স্কুলের নাটকের সঙ্গে বক্তৃতা, মূকাভিনয়, জাগলিং, ম্যাজিক, কথা বলা পুতুল... আরও কত কী! সব রকম হিংসা, হিংস্রতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতেই এ আয়োজন।

ভৌতিক সন্ধ্যা

বছর পঞ্চাশ আগে হঠাৎই গোয়েন্দা গল্প লিখতে শুরু করেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার মনোজ সেন। টানা দু’দশক ‘রোমাঞ্চ’ পত্রিকার জনপ্রিয় লেখক ছিলেন তিনি। রহস্য কাহিনি ছাড়াও বড়দের জন্য লিখেছেন অনেক ভূতের গল্প। তা থেকেই একুশটি নিয়ে এ বার প্রকাশিত হচ্ছে এবং কালরাত্রি (বুকফার্ম)। বইতে পাতাজোড়া সব ছবি এঁকেছেন শুভ্র চক্রবর্তী। ১৫ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টায় দক্ষিণ কলকাতার রিড বেঙ্গলি বুকস্টোরে আয়োজিত হয়েছে ‘ভৌতিক সন্ধ্যা’, বইটির প্রকাশ সেখানেই। আসরে নিজের লেখা ভূতের গল্প পড়ে শোনাবেন মনোজ সেন।

শতবর্ষে

দুর্লভ বহু গ্রন্থ ও পুঁথি পাঠ করতে পারব, পণ্ডিত মানুষদের মুখে বিভিন্ন শাস্ত্র শুনতে পাব, আর পিতৃপিতামহের ধারায় সংস্কৃতেরও চর্চা হবে। শুধু এই বাসনায় যুক্ত হয়েছিলেন সংস্কৃত সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে, টানা ছ’দশক সেখানে গ্রন্থাগার ও পুঁথিশালা সামলেছেন। তৈরি করেছেন সংস্কৃত পুঁথির তালিকা। এশিয়াটিক সোসাইটির পুঁথিশালাতেও দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। পরিব্রাজকাচার্য মধুসূদন সরস্বতীর বংশধর মহামহোপাধ্যায় মধুসূদন বেদান্তশাস্ত্রীর (১৯১৮-২০১২) জন্ম আজ থেকে ঠিক একশো বছর আগে, পুববাংলার কোটালিপাড়ার ঊনশিয়া গ্রামে। আমৃত্যু নিবিড় পাঠ ও গবেষণায় অসম্ভব স্মৃতিধর মানুষটি হয়ে উঠেছিলেন সংস্কৃত সাহিত্য ও স্মৃতিশাস্ত্রের এক চলন্ত কোষ। জন্মশতবর্ষের সূচনায় আজ তাঁর নামাঙ্কিত স্মারক ভাষণ রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের বিবেকানন্দ হল-এ, সন্ধে ৬টায়। ‘বৃহদারণ্যক উপনিষদ— কিছু সমস্যা’ শীর্ষকে বলবেন প্রবালকুমার সেন।

কলকাতা থেকে

প্রত্যন্ত ওড়িশার ছোট্ট একটি ছেলে তার প্রিয় আইসক্রিম ‘মালাই’ খাবে বলে সে-অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতার ছেলের বিয়েতে গিয়েছিল, বিনিময়ে তার আর তার মায়ের জোটে লাঞ্ছনা আর অপমান। কারণ তারা নিম্নবর্ণের, নিম্নবর্গের। দরিদ্র দুর্বল ‘পিছিয়ে-পড়া’ মানুষকে আজও যে প্রান্তিক করে রাখা হচ্ছে তা নিয়েই ওড়িয়া ভাষায় স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘মালাই’। পরিচালক কলকাতার এসআরএফটিআই-এরই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণী— রাজদীপ পাল ও শর্মিষ্ঠা মাইতি। ঐতিহ্যবাহী অরোরা ফিল্ম কর্পোরেশনের কর্ণধার অঞ্জন বসু প্রযোজিত এ ছবি পেয়েছে দেশি-বিদেশি স্বীকৃতি। অন্য দিকে ‘মিটু’ আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই সে বিষয় নিয়ে তৈরি হয়ে গিয়েছিল একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের হিন্দি ছবি ‘মনিটর’। শতরূপা সান্যাল এ ছবির চিত্রনাট্যকার, অন্যতম প্রযোজকও। মূল চরিত্রের অভিনেত্রী তাঁরই কন্যা চিত্রাঙ্গদা। শুটিংও হয়েছে ছবিটির কলকাতায়। পরিচালক তামিল— হরি বিশ্বনাথ। সদ্য দেখানো হল গোয়ায়, কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ইফি-তে, সেখানে রেড কার্পেটে সংবর্ধিতও করা হল দু’টি ছবিরই নির্মাতাদের।

একক কবিতাপাঠ

‘বিন্দু ক্রমশ সিন্ধু হয়ে যায়।’ ১৯৮৮-তে প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয়— বিজ্ঞাপনের মেয়ে। তিন দশক কেটে গিয়েছে, আরও অনেক কবিতা লিখেছেন চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, বইয়ের সংখ্যা ছাড়িয়েছে উনিশ-কুড়ি। লিখেছেন গল্প-প্রবন্ধ, পেয়েছেন সম্মাননা। এই প্রথম তিনি একক কবিতা পাঠের আসরে— ‘হেমন্ত বসন্ত’। ১২ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায়, পলাশ বর্মনের বইক্যাফে-তে (৩ রমানাথ মজুমদার স্ট্রিট)। চৈতালীর কবিতার সঙ্গে ছবি লিখবেন পলাশ পাল।

নবীনবরণ

কলকাতার কোনও শীত আজ আর মনে পড়ে না যে-শীতে নান্দীকারের নাট্যমেলা নেই। বছরের শেষ মাসটায় যখন সবচেয়ে বেশি সেজেগুজে ওঠে এ শহর, তখনই দুরন্ত একগুচ্ছ থিয়েটার নিয়ে আমাদের মনের দরজা খুলতে থাকে, মানুষের মুখ আর তার বেঁচে থাকার খবরাখবর দিতে থাকে এই নাট্যগোষ্ঠী। তবু যেন নতুন প্রজন্ম ক্রমহ্রাসমান এ উৎসবে। হয়তো তারা অবসরহীন, কর্মব্যস্ত, কিংবা অন্য কোনও কারণে ভাল নাটক সম্পর্কে খোঁজ রাখে না, বা জানতেই পারে না। ‘‘নতুনরা যাতে নতুনদের কাজ দেখতে পারে, নাটক নিয়ে উৎসাহী হয়ে উঠতে পারে, সে রকম একটা চেষ্টা আছে এ বারে।’’ বলছিলেন নান্দীকার-এর অন্যতম কর্ণধার সোহিনী সেনগুপ্ত। নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য তাঁরা এ বারের উৎসবের উদ্বোধক বেছে নিয়েছেন চার কৃতী অল্পবয়সিকে... মোনালিসা চট্টোপাধ্যায় উপাবেলা পাল বুদ্ধদেব দাস সপ্তর্ষি মৌলিক... প্রতি মুহূর্তে এঁদের শ্রম আর মেধা জীবন্ত করে রাখছে থিয়েটারকে। সপ্তর্ষি (সঙ্গের ছবিতে) যেমন নান্দীকার-এ আছেন সাত বছর ধরে, নাট্যগোষ্ঠীটির হেন কোনও কাজ নেই যে করেন না। কবিতা লেখেন, আবার একই সঙ্গে অভিনয়ের পাশাপাশি নাটকের রূপান্তরেও রত। নাচনী, বিপন্নতা-য় অভিনয়ের পর পাঞ্চজন্য নাটকে মুখ্য ভূমিকায়। ‘‘প্রথম যখন এল, প্রতি দিনই ও বাবার (রুদ্রপ্রসাদ) কাছ থেকে কিছু-না-কিছু শিখত। ওর লেখা থেকেই নতুন নাটকের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা এখন।’’ সংযোজন সোহিনীর। ১৬-২৫ ডিসেম্বর অ্যাকাডেমিতে এই ৩৫তম জাতীয় নাট্যোৎসবে বাংলার পাশাপাশি থাকছে হিন্দি নেপালি ও ভোজপুরি নাটক। সংবর্ধিত হবেন অসিত বসু অঞ্জন দত্ত এবং স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE