Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: স্কুল বাঁচুক, সঙ্গে ঐতিহ্য

পুরসভার ঐতিহ্যবাহী ভবনের তালিকায় গ্রেড-২বি হিসেবে চিহ্নিত ১০ প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিটের দোতলা প্রাসাদোপম বাড়িটি এখন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (বড়বাজার শাখা) স্কুলের সম্পত্তি।

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আঠারো শতকের শেষ পর্বের বাড়ি। ভিতরে তিন খিলানের ঠাকুরদালান, তার সামনে আবার প্রাচীন ভারতীয় স্থাপত্যরীতিতে তিনটি চমৎকার অলঙ্কৃত খিলান সংযোজিত (সঙ্গের ছবি)। পুরসভার ঐতিহ্যবাহী ভবনের তালিকায় গ্রেড-২বি হিসেবে চিহ্নিত ১০ প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিটের দোতলা প্রাসাদোপম বাড়িটি এখন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (বড়বাজার শাখা) স্কুলের সম্পত্তি। গত এপ্রিলে হঠাৎ স্কুল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে পুরসভা বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলে। প্রতিবাদে মুখর হয় কলকাতার ঐতিহ্য রক্ষায় সক্রিয় ‘পুরনো কলকাতার গল্প’ সংগঠন, সঙ্গে স্থানীয় ক্লাব ও বিশিষ্টজন। সংগঠনের উদ্যোগে বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট ট্রাস্ট, মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (বড়বাজার)-এর সম্পাদক প্রমথনাথ পালিত-সহ কর্মীবৃন্দ, রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশন, কলকাতা পুরসভা, স্থানীয় পুর প্রতিনিধি-সহ বিভিন্ন পক্ষের পারস্পরিক আলোচনায় ভবনটি বাঁচানোর উদ্যোগে ১৬ জুন নতুন হেরিটেজ ফলক প্রতিষ্ঠা হয়। মধ্য কলকাতার শঙ্কর ঘোষ লেনে ১৮৫৯ সালে মেট্রোপলিটন ট্রেনিং স্কুল স্থাপিত হয়, পরে নাম হয় ক্যালকাটা ট্রেনিং স্কুল। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পঠনপাঠনকে উন্নত করলেও ভাড়া বাড়িতে স্কুল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। ১৮৬৬-তে তিনি সুকিয়া স্ট্রিটে অন্য একটি ভাড়া বাড়িতে স্কুল স্থানান্তরিত করে নামকরণ করলেন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন। পরে ফের ভাড়া নিয়ে সমস্যার জেরে বিদ্যাসাগর সম্পত্তি বন্ধক রেখে সেই টাকায় শঙ্কর ঘোষ লেনে ১৮৮৭-তে নিজস্ব স্কুল ভবন প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়ের সুনামে শহরের অন্যত্র শাখা খোলা হয়। বড়বাজার শাখা বেশ কয়েকটি ভাড়া বাড়ি পেরিয়ে ১৯২৩-এ ভাড়ায় স্থানান্তরিত হয় বর্তমান ১০ প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিটে। পাথুরিয়াঘাটা ঠাকুর পরিবারের গোপীমোহন ঠাকুর নির্মিত বাড়িটি ১৯৫৪ সালে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন ট্রাস্ট ঠাকুরদের দৌহিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কাছ থেকে কিনে নেয়। শহর কলকাতায় যখন উন্নয়নের থাবায় ঐতিহ্যবাহী ভবনের বিলুপ্তি অব্যাহত, তখন সর্বাত্মক উদ্যোগে নতুন ফলক প্রতিষ্ঠায় বাঁচার দিশা দেখা গেল মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন (বড়বাজার)-এ।

স্বামী বিজ্ঞানানন্দ

প্রথম জীবনে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে শ্রীরামকৃষ্ণ-অর্পিত কাজে পুরোপুরি আত্মনিবেদন করেছিলেন, বেলুড় মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরের নির্মাণের পরিকল্পনা ও রূপায়ণ তাঁর স্মরণীয় কীর্তি— স্বামী বিজ্ঞানানন্দ। বরেণ্য এই স্বামীজি সন্ন্যাস গ্রহণের পূর্বে পরিচিত ছিলেন হরিপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায় নামে, একটি জেলার ভারপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি, ‘সে খড়কুটোর মতো ঐ পদ ত্যাগ করেছে’, তাঁর সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ জানিয়েছিলেন ভগিনী নিবেদিতাকে একটি চিঠিতে। তাঁর ব্রহ্মজ্ঞানের উপলব্ধি, নিরহং স্বভাব, এবং বিবিধ বিষয়ে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য আজও সকলের স্মৃতিপটে উজ্জ্বল। স্বামী বিজ্ঞানানন্দ-এর জন্মসার্ধশতবর্ষ উদ্‌যাপন ও স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দের স্বামী বিজ্ঞানানন্দ: এক গুপ্ত ব্রহ্মজ্ঞানী গ্রন্থটির প্রকাশ ৫ জুলাই সন্ধে ৬টায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের বিবেকানন্দ হলে। উক্ত গ্রন্থটির প্রকাশনা-প্রতিষ্ঠান সূত্রধর-এর রামকৃষ্ণ-ভাবধারা-কর্ম-উপাসনা বিষয়ক আরও বহুবিধ বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ সে সন্ধ্যায়। সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে থাকবেন স্বামী সুবীরানন্দ, অধ্যাপক অজয়কুমার রায়। প্রাককথনে স্বামী সুপর্ণানন্দ। আয়োজনে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার ও সূত্রধর।

মানচিত্রে দমদম

জর্জ এভারেস্ট ভারতে এসে দমদমে বেঙ্গল আর্টিলারি-তে সার্ভেয়র হিসেবে যোগ দেন। দেশজোড়া গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক সার্ভে সম্পন্ন করার কৃতিত্ব তাঁরই। বেঙ্গল আর্টিলারির লেফটেনান্ট রাল্‌ফ স্মিথ রেভিনিউ সার্ভেয়র হিসেবে ২৪ পরগনা জেলা সমীক্ষা করেন, তৈরি করেন পঞ্চান্নগ্রাম-সহ কলকাতার মানচিত্র। বেঙ্গল আর্টিলারির ক্যাপ্টেন জেমস ওয়াটারহাউস দমদমের যে মানচিত্র (১৮৬৮-৭০) তৈরি করেন, উনিশ শতকের দমদমকে বুঝতে তা অপরিহার্য। ঔপনিবেশিক পর্বে সর্বভারতীয় সমীক্ষা ও মানচিত্র-নির্মাণের ইতিহাসে যে দমদমের এত গুরুত্ব, তার বিভিন্ন এলাকা কী ভাবে গড়ে উঠেছিল জানতে গেলে তো সমসাময়িক মানচিত্রের সাহায্যই নিতে হবে। সেই অনুসন্ধানই করেছে ‘দেশকাল’, পিপলস গ্রিন সোসাইটি প্রকাশ করেছে ম্যাপস অব দমদম অ্যান্ড ইটস এনভায়রনস (সম্পা: মৌমিতা সাহা, পরি: দে’জ়)। এর প্রধান আকর্ষণ ১৫টি ভাগে ওয়াটারহাউসের মানচিত্রটি। আঠেরো-উনিশ শতকের আরও কিছু মানচিত্র থেকে দমদমের অংশ আলাদা করে মুদ্রিত হয়েছে, আছে আধুনিক মানচিত্র ও প্রাসঙ্গিক তথ্য।

বিদ্যানুরাগী

তাঁর চেষ্টায় গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান এক অন্য উচ্চতায় পৌঁছতে পেরেছিল। শুধু পড়াশোনায় আটকে না থেকে নিজেকে সুরের সাধনায়ও মগ্ন রাখতে পারতেন ভুবনেশ্বর চক্রবর্তী। সেই সত্তরের দশক থেকে বাংলায় গ্রন্থাগার বিজ্ঞান নিয়ে বই লিখে তিনি একে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। ভুবনেশ্বরবাবু গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞানের উপরে চল্লিশের বেশি বই লেখেন যার অধিকাংশই বাংলায়। ইতিহাসে এমএ-তে প্রথম শ্রেণি, এমলিবএসসি-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। বাফেলোর স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের এমএলআইএস-এ প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ভুবনেশ্বরবাবু বিশিষ্ট শিক্ষকের শিরোপাও পেয়েছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট এই অধ্যাপক সম্প্রতি প্রয়াত হলেন।

শিল্পী প্রয়াত

১ এপ্রিল ১৯৩৬ অবিভক্ত বাংলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মেবাসানি গ্রামে জন্ম। ’৪৭-এ দেশভাগের ফলে অসমে আশ্রয়। ’৫২-তে দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজে পড়াকালীন লীনা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় হয় ধীরাজ চৌধুরীর, ’৬০-এ বিয়ে। স্ত্রীই ছিলেন সংসারে আলোকবর্তিকা। একমাত্র মেয়ে রেশমী। ২০১৪-য় স্ত্রী প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই ভারাক্রান্ত চিত্রশিল্পী ধীরাজ চৌধুরী বিরাশি বছরে প্রয়াত হলেন বিবাহ বার্ষিকীর দিনেই। ’৫৫-য় সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি, কিন্তু পরে তিনি কলকাতা ছেড়ে দিল্লি কলেজ অব আর্ট থেকে শিল্পশিক্ষা শেষ করেন। পরবর্তীতে দিল্লি কলেজ অব আর্ট-এ অধ্যাপনা ও ’৯৬-এ অবসর। দেশে-বিদেশে বহু প্রদর্শনীতে প্রশংসা-সহ সম্মাননা পেয়েছেন। শিল্পীর প্রয়াণে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস ও শিল্পানুরাগীদের যৌথ আয়োজনে হল স্মরণ সভা। ক্যালকাটা পেন্টার্স, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব, ললিত কলা-সহ বহু সংস্থার আয়োজনেও হয়েছে স্মরণ অনুষ্ঠান।

অন্তর্দৃষ্টি

‘‘চোখে আমার দৃষ্টি নেই ঠিকই কিন্তু রবীন্দ্রনাথের গান গাইলেই অন্তরে আমি সব ঠিক দেখতে পাই’’, বলছিলেন শিল্পী বচ্চন সাউ, ‘‘জীবন যখন শুকায়ে যায়...’, এটি দেশ রাগের গান। এটি সন্ধে বেলার রাগ। এটি যখন গাই তখন আমি ঠিক বুঝতে পারি সন্ধ্যার রূপ কেমন, ভেতরে ঠিক একটা অনুভব হয়।’’ বচ্চনের আদি বাড়ি বিহারের সিওয়ান জেলায়, কিন্তু বাবার কাজের সুবাদে চলে আসেন এই শহরে। থিতু হন বড়বাজারে। ওঁর মা-বাবাও গান করতেন। পোস্তার সেই বাড়িতে এক বার প্রবল দুর্যোগের রাতে ঘর ভেঙে মারা যান মা, পরে দেশে ফিরে বাবার মৃত্যু হয়। সেই থেকে অনাথ বচ্চনের ঠিকানা হয় নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন। সেখানেই লেখাপড়া, ঠিক মতো গান শেখা। ‘অন্য দেশ’ নাটকের দলের শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ওঁকে নাটকের গান গাইতে নিয়ে আসেন। সেই থেকে ওঁর একটু পরিচিতি। অসাধারণ কণ্ঠের অধিকারী এই দৃষ্টিহীন শিল্পীকে সম্প্রতি উত্তরপাড়ার জীবনস্মৃতি-র পক্ষ থেকে প্রথম বছরের ‘অমল স্মৃতি সম্মাননা’ জানানো হল। কালিন্দী ব্রাত্যজনের সপ্তম আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও সঙ্গীত পরিবেশন করে মাতিয়ে দিলেন বচ্চন সাউ।

স্মৃতিপটে

নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সায়ন ভট্টাচার্য যেমন ছবি আঁকা ও সঙ্গীতচর্চায় উৎসাহী, তেমনই ছবি তোলায় একনিষ্ঠ। নালন্দার আগে পড়িয়েছেন কলকাতা, রবীন্দ্রভারতী ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেছেন অক্সফোর্ড, রয়্যাল সোসাইটি অব লন্ডন-সহ বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তাঁর ছবি তোলারও বিষয়: পরিবেশ ও সমাজ। ফটোগ্রাফিক ডকুমেন্টেশনের ভিতর দিয়ে পূর্ব হিমালয়ের স্থিতিশীল উন্নয়ন তুলে আনেন তিনি, তুলে আনেন নানান দেশের পরিবেশ ও সমাজ-সংস্কৃতি। এই মুহূর্তে তাঁর আশিটি সাদাকালো ও রঙিন ছবি নিয়ে একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘রেমিনিসেন্স’ চলছে গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শশালায়, ৩ জুলাই পর্যন্ত (২-৮টা)।

শ্রীজার উদ্যোগ

‘‘আমরা ভীষণ বিচ্ছিন্ন ভাবে রয়েছি। বিশেষত, আজকের সমাজে মেয়েরা,’’ বলছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী প্রযুক্তিবিদ শিবশঙ্কর দাশগুপ্ত। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের সঙ্ঘবদ্ধ করবার তাগিদ থেকে ভাবনাটা শুরু। দেড় বছর আগে বীরভূমের রাজনগর গ্রামে ৫০ জন পিছিয়ে পড়া মেয়েকে নিয়ে শুরু হয়েছিল শ্রীজা ইন্ডিয়া-র পথচলা। খেলায় যোগদানের শর্ত ছিল স্কুলে যেতে হবে এবং আঠারো বছরের আগে বিয়ে নয়। দেখা যাচ্ছে এই ভাবেই ওদের মধ্যে স্কুলছুটের সংখ্যা কমছে। অল্প বয়সে বিয়ের সংখ্যাও কমেছে। ফুটবল কেন্দ্র করে ওদের সামাজিক উন্নয়নের কথা ভাবা হচ্ছে। মায়েদের দিক থেকে দারুণ সাড়া মিলেছে। সম্প্রতি ‘দামিনী’ শীর্ষকে শ্রীজা-র সঙ্গে কলকাতা পুলিশের একটি যৌথ প্রকল্প শুরু হল পার্ক সার্কাস ময়দানে। সুকিয়া স্ট্রিটে ডিসি নর্থের মাঠ এবং অন্য দিকে খিদিরপুর ও বিবেকানন্দ পার্কে খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে এই প্রকল্পটি। আগামী দিনে ওদের জন্য বিশেষ কোচিংয়েরও পরিকল্পনা রয়েছে, জানালেন শ্রীজা-র কর্ণধার শিবশঙ্করবাবু।

মহীরুহ

অঙ্কুর থেকে যত্নে লালন করলে সেই গাছ মহীরুহ হয়ে উঠবে, এই ভাবনায় কবিতীর্থ খিদিরপুরে ১৯৯৩ সালে ‘দ্য খিদিরপুর অ্যাকাডেমি’-র অধীনে জন্ম নেয় ‘দি অ্যাকাডেমি ট্রানজ়িশন’। মূল উদ্দেশ্য শিশুকে তার প্রথম পাঠমন্দির থেকেই যথোপযুক্ত পাঠদানের সঙ্গে আদর্শগত দিগ্‌দর্শন। ১১২ বছরের খিদিরপুর অ্যাকাডেমিতে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন ব্যবস্থায় বহু কৃতী ছাত্র দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম অর্জন করেছেন। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক কমলেশ্বর গুপ্তের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত প্রাতঃকালীন ‘দি অ্যাকাডেমি ট্রানজ়িশন’ রজত জয়ন্তী বর্ষে পদার্পণ করল। এই উপলক্ষে সম্প্রতি দুই প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে রবীন্দ্র সদনে সান্ধ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাতাল বাংলার লোকগানের দল ‘দোহার’।

বিপ্লবতীর্থ

চট্টগ্রাম বিদ্রোহের সর্বাধিনায়ক মাস্টারদা সূর্য সেনের ফাঁসি হয় ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি। মাস্টারদা’র বাহিনীর অন্যতম প্রধান নেতা গণেশ ঘোষ ১৯৭০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘বিপ্লবতীর্থ চট্টগ্রাম স্মৃতি সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁরই উদ্যোগে ১৯৭৫-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে ‘সূর্য সেন স্মারক বক্তৃতা’ প্রবর্তিত হয়। এ বছরের বক্তা ছিলেন পঙ্কজ সাহা, বিষয়: ‘রবীন্দ্রনাথ ও লেনার্ড এল্‌মহার্স্ট’। সংস্থার কার্যালয় যোধপুর পার্কের ‘শহীদ সূর্য সেন ভবন’-এ ২০ জুন এটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুগ্ম-সম্পাদক লীলা পুরকায়স্থ ও অরূপ রায় বক্তৃতার তাৎপর্য তুলে ধরেন। সভাপতিত্বে ছিলেন শক্তিভূষণ ঘোষরায়।

সম্মানিত

একমাত্র প্রেমের জোরই সমস্ত জাগতিক বাধা ডিঙিয়ে যেতে পারে। এই ছবিতে সীমান্তে পাচারের মতো সমস্যাকে ইস্যু করতে চাইনি। বরং এমন সমস্যাকে অতিক্রম করে প্রেমেরই জয়গান গাইতে চেয়েছি’’, বলছিলেন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে তৈরি ২৩ মিনিটের ছবি ‘লাল ফিতে’-র (রেড রিবন) পরিচালক সব্যসাচী দে। ছবির প্রতি এই প্রেমের টানেই বিজ্ঞানের ছাত্র সব্যসাচী ওএনজিসি ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছাড়েন। ২০১৭-য় আমেরিকার হিউস্টনে ৫০তম ওয়ার্ল্ডফেস্ট ফিল্মোৎসবে সেরা ‘অরিজিনাল ড্রামাটিক শর্ট ফিল্ম’-এর জন্য সব্যসাচীর ছবিটি ‘গোল্ড-রেমি অ্যাওয়ার্ড’ পায়। অতীতে স্টিভেন স্পিলবার্গ, জর্জ লুকাস, অ্যাং লি-র মতো বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক তাঁদের প্রথম দিকের ছোট ছবির জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলস ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালেও স্বল্পদৈর্ঘ্যের সেরা চিত্রনাট্য, সেরা পরিচালক ও সেরা চিত্রগ্রহণের পুরস্কার পেয়েছে এ ছবি। ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বহুবিধ উৎসবে এই ছবি প্রশংসিত হয়েছে। কলকাতায় ১৫তম কল্পনির্ঝর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও ‘লাল ফিতে’ দ্বিতীয় সেরা ছবির পুরস্কার জেতে। স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবির সুবাদে সব্যসাচী দেশে-বিদেশে সম্মানিত। এর আগে যে সব ছবি করেছেন, সেগুলি দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রোৎসবে। তাঁর ‘ফেস অব দ্য মাস্ক’ কেরলের ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি অ্যান্ড শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা-র সম্মান পেয়েছিল। ‘‘আমার প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘মায়ার খেলা’-র (গেম অব ইলিউশন) জন্য তৈরি হচ্ছি’’, জানালেন সব্যসাচী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE