Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

কলকাতার কড়চা: জীবন থেকে শিক্ষা

সালটা ১৯৬৬। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবল ছাত্র-বিক্ষোভ চলছে। কোনও উপাচার্যই টিকতে পারছেন না। ত্রিগুণা সেন (১৯০৫-৯৮) সদ্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ ছেড়েছেন নীতিগত কারণে।

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০০:০১
Share: Save:

সালটা ১৯৬৬। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবল ছাত্র-বিক্ষোভ চলছে। কোনও উপাচার্যই টিকতে পারছেন না। ত্রিগুণা সেন (১৯০৫-৯৮) সদ্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ ছেড়েছেন নীতিগত কারণে। শিক্ষা কমিশনে তাঁরই সুপারিশ ছিল, কোনও উপাচার্যেরই দশ বছরের বেশি ওই পদে থাকা উচিত নয়। এ বার তাঁর ইচ্ছা, রামকৃষ্ণ মিশনের কোনও স্কুলে পড়াবেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে বিএইচইউ-র দায়িত্ব দিল। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বেনারস স্টেশনে অপেক্ষা করছে, গন্ডগোলের ভয়ে বিএইচইউ কর্তারা ত্রিগুণা সেনকে মোগলসরাই স্টেশনে নামিয়ে নিতে চাইলেন। ছাত্রদের ভয়? ১৯৪৩ সাল থেকে যিনি বর্ষে বর্ষে দলে দলে ছাত্র সামলেছেন, তিনি কেন ভয় পাবেন? উপাচার্য বেনারসেই গেলেন, ছাত্রদের বললেন, তোমাদের যা কিছু সমস্যা, অভিযোগ যদি শুধু আমাকেই বলবে প্রতিশ্রুতি দাও, বাইরের কাউকে নয়, তা হলেই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকব। ছাত্ররা তাঁর কথা মেনে নিয়েছিল। ছাত্র, শিক্ষক, কর্মী সকলকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই সে দিন শান্তি ফিরেছিল বিএইচইউ-তে। ত্রিগুণা সেন যাদবপুরের কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজি-র প্রিন্সিপাল হন ১৯৪৪-এ, ’৫৫য় বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে প্রথমে রেক্টর, পরে উপাচার্য। কলকাতার মেয়র, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, কত না দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি, কিন্তু তাঁর কাছে সবার উপরে ছিল যাদবপুর। ছাত্রগতপ্রাণ মানুষটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলেছিলেন, দিয়েছিলেন নিজস্ব আদর্শ ও চরিত্র। ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য ছিল তাঁর অবারিত দ্বার, যে খোলা মনে কথা বলার পরিবেশ তিনি তৈরি করে দিয়েছিলেন তা যাদবপুরের গর্ব। প্রশাসকের পাশাপাশি মানুষটিও কি কম উজ্জ্বল? উপাচার্য নিজের পুরনো বেয়ারা পূর্ণচন্দ্র মহাপাত্রকে হরিদ্বার বেড়াতে নিয়ে গিয়েছেন, বন্ধুর মতো সব ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন, মন্দিরে পুজো দিতে ঢুকলে নিজে দাঁড়িয়ে তাঁর জুতো পাহারা দিয়েছেন! এ বার তাঁরই স্মৃতিতর্পণ জাতীয় শিক্ষা পরিষদে। ৯ জুলাই বিকেল ৫টায় ইন্দুমতী সভাগৃহে এক অনুষ্ঠানে লেসন্‌স ইন লিভিং: স্টোরিজ় ফ্রম দ্য লাইফ অব ত্রিগুণা সেন বইটি প্রকাশ করবেন ছত্তীসগঢ়ের ভূতপূর্ব রাজ্যপাল শেখর দত্ত, তিনিই উদ্বোধন করবেন ত্রিগুণা সেন আর্কাইভ। থাকবেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস, পরিষদের সভানেত্রী সতী চট্টোপাধ্যায় ও সম্পাদক আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সঙ্গে ত্রিগুণা সেনের ছবি বইটির প্রচ্ছদ থেকে, শিল্পী প্রমোদ কার্লেকর।

কে সি নাগ ১২৫

১৯২৪। মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান উপদেষ্টা আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাঁকে অঙ্কের শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করেন। ১৯৬০ পর্যন্ত চলে শিক্ষাদান। এর মধ্যে পাঁচ বছর এই বিদ্যালয়েই প্রধানশিক্ষকতা। সহকর্মী ছিলেন কালিদাস রায়, দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী, জানকীনাথ শাস্ত্রী প্রমুখ। রঘুনাথ ও ক্ষীরদাসুন্দরীর পুত্র কেশবচন্দ্র নাগের (১৮৯৩-১৯৮৭) জন্ম হুগলির গুড়াপে। ১৯১২ সালে বিহারের কিষেনগঞ্জ স্কুল থেকে অঙ্ক ও সংস্কৃতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রবেশিকা পাশ করেন। রিপন কলেজ থেকে আই এসসি পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ। গণিতশিক্ষায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর প্রথম গণিতের বই ‘নব পাটিগণিত’। এর পর পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতির নানা বই প্রকাশ করেন। তাঁর ‘কোর গণিত’ বিশেষ জনপ্রিয়। এ বার ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনের উদ্যোগে ১৩ জুলাই সকাল ৯:১৫-য় রবীন্দ্রসদনে তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন এবং বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। সভাপতি প্রদীপকুমার দেব।

পথিক গবেষক

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় একবার তাঁর সম্বন্ধে বলেছিলেন, ‘‘সংসারের সার ফেলে দিয়ে কাজ করছেন।’’ শুধু বাংলাদেশের সঙ প্রসঙ্গে নয়, হেটো বই, কলকাতার মাটি ও মানুষ, লোকজীবনে লোকসংস্কৃতি, পথনাটকের কথা, লৌকিক দেবদেবী, যাত্রাগানের ইতিবৃত্ত এ সবও ছিল বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণার জগৎ। সারা বাংলাই তাঁর ক্ষেত্রসন্ধানের আঙিনা। খাটো ধুতি, খদ্দরের পাঞ্জাবি, কাঁধে ঝোলা ব্যাগ নিয়ে আটপৌরে জীবনের সঞ্চয়ে নানা অভিজ্ঞতা। প্রথমে স্বদেশি আন্দোলন, পরবর্তীতে কমিউনিস্ট পার্টির যোগসূত্রে এক স্বতন্ত্র জীবনচর্যা গড়ে উঠেছিল। ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে এসেছিলেন নির্মলকুমার বসু, বিনয় ঘোষ, ঋত্বিক ঘটক প্রমুখের। বিপিনবিহারী গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া ‘শেখ কালু’ ছদ্মনামেও লিখেছেন। সুকান্ত ভট্টাচার্য, সরোজ দত্তের সঙ্গে ‘জনযুদ্ধ’ পত্রিকা ফেরি করেছেন। বছরখানেক আগেও সক্রিয় থেকেছেন ধর্মঠাকুর, শূন্যপুরাণ প্রসঙ্গে বইটি লেখার কাজে। পেয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননা। বিরল কর্মচেতনার মানুষটি ২ জুলাই ৯৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন।

বিশ্বকাপ

নেমারও নেই আর, রোনাল্ডো আর মেসি আগেই বিদায় নিয়েছেন। মুখ ভার ফুটবল-পাগলদের। মনখারাপের উপশম হিসাবে বিশ্বকাপের শেষবেলায় তাঁরা বরং দু’টি বই একটু নেড়েচেড়ে দেখুন। প্রথমটি নোভি কাপাডিয়া-র দ্য ফুটবল ফ্যানাটিক’স এসেনশিয়াল গাইড (হ্যাচেট)। এতে সেই ১৯৩০-এর উরুগুয়ে থেকে হালের রুশ বিশ্বকাপ অবধি খুঁটিনাটি তথ্যনথি, দুর্লভ সব ছবিও সঙ্গে। পরেরটি মউমিতা ভট্টাচার্য ও শুভঙ্কর ভট্টাচার্যের দৃশ্যকথায় বিশ্বকাপ (পারুল)। দুই লেখক ১৯৩০-২০১৮ পর্যন্ত বিশ্বকাপের স্মরণীয় মুহূর্ত ও নেপথ্যকাহিনি সাজিয়েছেন প্রশ্নোত্তরের ধাঁচে। ইতিহাসের পাশাপাশি বইটি ডুব দিয়েছে বিষণ্ণ ও প্রসন্ন নানান স্মৃতিতে।

অরোরা

গত শতকের শুরুতে অদম্য ব্রিটিশ-বিরোধী আবেগ আর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রণয়নে অনুপ্রাণিত বাঙালি উদ্যোগী হয়ে ওঠে দেশীয় ব্যবসায়। এমনই এক একনিষ্ঠ জাতীয়তাবাদী অনাদিনাথ বসু ১৯০৬-এ শুরু করেন ‘ম্যাজিক অ্যান্ড থিয়েট্রিকাল কোম্পানি’। ১৯১১-য় অনাদিনাথ আর দেবী ঘোষের নেতৃত্বে এটি রূপান্তরিত হল উজ্জ্বল সুমেরুপ্রভা অরোরা-র অনুসরণে অরোরা সিনেমা কোম্পানিতে। নির্বাক যুগ থেকে একশো বছর পেরিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি, সংবাদচিত্র, কাহিনিচিত্র নির্মাণে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী অরোরা গত শতকেই আমেরিকার ‘ভ্যারাইটি’ পত্রিকা থেকে স্বীকৃতি পায় পূর্ব ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফিল্ম-প্রতিষ্ঠান হিসাবে। অনাদিনাথের পর অজিত বসুর সূত্রে ছবি প্রযোজনা ও পরিবেশনের জন্যে অরোরা-র খ্যাতি ক্রমশই বাড়তে থাকে, উল্লেখ্য উত্তম-কাবেরী বসুর ‘রাইকমল’, ‘ভগিনী নিবেদিতা’, ‘রাজা রামমোহন’, সর্বোপরি ঋত্বিকের ‘অযান্ত্রিক’ এবং সত্যজিতের ‘অপরাজিত’ ও ‘জলসাঘর’। বাঙালির মনন ও মনোরঞ্জনের সঙ্গী এই অরোরা-কে নিয়ে তৃতীয় প্রজন্মের উত্তরসূরি অঞ্জন বসু তৈরি করেছেন তথ্যচিত্র ‘অরোরা বায়োস্কোপ’ (ফিল্মস ডিভিশন)। এটি এশিয়াটিক সোসাইটির বিদ্যাসাগর হলে দেখানো হবে ১৩ জুলাই দুপুর ৩টেয়। এ বছর আমস্টারডাম ফিল্মোৎসবে ‘ভ্যান গঘ পুরস্কার’ পেয়েছে ছবিটি। ছবি দেখানর আগে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলবেন ‘বাংলার চলচ্চিত্র: স্টুডিয়ো যুগ’ শীর্ষকে।

ভাষা ও সংস্কৃতি

‘‘এক জন অভিনেতা ভাল করে নিজের কাজই করতে পারবেন না যদি না তিনি নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির উপর গুরুত্ব না দেন।’’ বলতে বলতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় খেয়াল করিয়ে দেন ‘‘ভাষা ও সংস্কৃতি যে আদতে জীবনযাত্রার উৎকর্ষ এই কথাটা আমরা ভুলে বসে আছি।’’ এ থেকে কতখানি সঙ্কট ঘনিয়ে উঠেছে বাঙালির জীবনে, তা নিয়েই বিশ্লেষণী আলোচনা করবেন সৌমিত্র। ১১ জুলাই বিকেল ৫টায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চন্দ্রমুখী কাদম্বিনী হলে (কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ৫ম তল), সপ্তম অধ্যাপক রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত স্মারক বক্তৃতায়। সে দিন অধ্যাপকের জন্মদিন, বক্তৃতার বিষয়: অভিনেতা এবং ভাষা ও সংস্কৃতি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের শ্রোতাদের কাছে এ হবে এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা।

অক্ষয় সপ্তাহ

‘আঁধার রাতে একলা পথিক’ অক্ষয়কুমার দত্ত (জন্ম ১৫ জুলাই ১৮২০) আজ প্রায়-বিস্মৃত। সাহিত্যের ছাত্ররা তাঁর নাম জানেন হয়তো, অথচ ধর্মব্যবসা ও কুসংস্কারের অন্ধকারে নিমজ্জিত দেশকে মুক্তির আলো দেখাতে পারত তাঁর যুক্তিবাদ ও বিজ্ঞান চেতনার পরিসর। তাই তাঁর প্রাক-দ্বিশততম জন্মবর্ষে ‘অক্ষয় সপ্তাহ’ উদ্‌যাপনে উদ্যোগী মফস্‌সলের চারটি দল— অহর্নিশ, উত্তরপাড়া জীবনস্মৃতি, বাণীপুর বেসিক ও ক্র্যাকার সাহিত্যপত্র। স্কুল-কলেজে বা গ্রন্থাগারে ‘অক্ষয় সপ্তাহ’ পালনের আবেদন জানাবে তারা। তারই সূত্রপাত ঘটবে অক্ষয়-গবেষক আশীষ লাহিড়ীকে (সঙ্গের ছবি) ‘অহর্নিশ সম্মাননা ২০১৮’ জ্ঞাপন করে। অক্ষয়কুমারকে নতুন ভাবে চিনিয়েছেন তিনি; তা ছাড়া অন্য কোনো সাধনার ফল, বিজ্ঞানীর ঈশ্বর ও অন্যান্য বিতর্ক, কোন সে ঝড়ের ভুল, দ্বিশতবর্ষে রাধানাথ শিকদার বইগুলি আমাদের চিন্তন সাহিত্যে স্বতন্ত্র ধারা সৃষ্টি করেছে। অনুবাদ গ্রন্থ ইতিহাসে বিজ্ঞান বা যৌথ সম্পাদনায় এভরিম্যান্‌স ডিকশনারি তাঁর জ্ঞান ও শ্রমপরিধিকে বুঝতে সাহায্য করে। আশীষ লাহিড়ীর হাতে সম্মান তুলে দেবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, ১৫ জুলাই, কলেজ স্ট্রিট বই-চিত্র সভাঘরে, বিকেল সাড়ে ৫টায়। আলোচনায় প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়, সলিল বিশ্বাস ও মৃণালকান্তি সরকার। সঙ্গের ছবি: সপ্তর্ষি লোধ।

শতবর্ষে বার্গম্যান

তাঁর সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার মূলে ছিল তাঁর ছেলেবেলা। সেই দিনগুলির নানান মুহূর্ত বরাবরই সজীব হয়ে থাকত বার্গম্যানের স্মৃতিতে, সিনেমায়। তাঁর সিনেমায় মুগ্ধ সত্যজিৎ চিহ্নিত করেছেন তাঁর শিল্পশৈলী: ‘‘আধুনিকতা ছবির বহিরঙ্গে তেমন স্পষ্ট নয়। সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি, যা বিশেষ মেজাজের মধ্যে পরিস্ফুট।’’ ১৪ জুলাই জন্মদিন, শতবর্ষ পূর্ণ করবেন সুইডেনের চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান (১৯১৮-২০০৭)। এই উপলক্ষে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস আজ থেকে এসআরএফটিআই-অডিটোরিয়ামে শুরু করছে তাঁর ছবির পূর্বাপর উৎসব, দেখানো হবে— ক্রাইজ় অ্যান্ড হুইসপার্স, দ্য সেভেন্থ সিল, দ্য সায়লেন্স, পার্সোনা, ফ্রম দ্য লাইফ অব দ্য ম্যারিয়োনেটস। প্রতি দিন বিকেল ৫:৪৫-এ প্রতিটি ছবি শুরুর আগে তা নিয়ে বলবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় গৌতম ঘোষ প্রমুখ। চলবে ১৩ জুলাই অবধি।

বুদ্ধদেব বসু কক্ষ

বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের স্তম্ভমূর্তি বুদ্ধদেব বসু ইংরেজিতেও রেখে গিয়েছেন তাঁর অনন্য মনন ও প্রতিভার অভিজ্ঞান। ছড়িয়ে থাকা সেই লেখাপত্রও যে বাঙালি পড়েনি তা নয়, তবে দু’মলাটের মধ্যে উজ্জ্বল সে সব উদ্ধারের অভাব অনুভূত হচ্ছিল বারে বারেই। তা-ই মিটতে চলেছে অ্যান একর অব গ্রিন গ্রাস অ্যান্ড আদার ইংলিশ রাইটিংস বাই বুদ্ধদেব বোস (সম্পা: রোসিঙ্কা চৌধুরী, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস) বইটির মাধ্যমে। ১০ জুলাই বিকেল পাঁচটায় ১০ লেক টেরেসের যদুনাথ ভবন সংগ্রহশালায় বইটির প্রকাশ, সঙ্গে আলোচনাও। আরও গুরুত্বপূর্ণ যা: পরিবারসূত্রে পাওয়া বুদ্ধদেবের প্রচুর বই, তাঁর ব্যবহৃত টেবিল, চেয়ার, আর্মচেয়ার ও অজস্র ছবির সম্ভারে সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই সংগ্রহশালার একটি কক্ষ, খুলে দেওয়া হবে সেটিও। গতায়ু গুণিজনদের গৃহগুলি সংগ্রহশালা করে তোলার প্রয়াস বা অভ্যাস এই শহরের নেই, সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর এই ভবনটির কয়েকটি কক্ষে সেই কাজই করা হবে, জানালেন যদুনাথ ভবন সংগ্রহশালার আহ্বায়ক তপতী গুহঠাকুরতা। এ দিকে ৭ জুলাই এক অনুষ্ঠানে যদুনাথ ভবনের প্রেক্ষাগৃহটি সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেসের প্রতিষ্ঠাতা-অধিকর্তা ইতিহাসবিদ বরুণ দে-র নামে চিহ্নিত হল।

একক

মনস্তাত্ত্বিক টানাপড়েনে আচ্ছন্ন একটা চরিত্র, নিজেই যেন নিজের আয়না, স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব, হুইলচেয়ারে বন্দি অসহায় বোনটির সঙ্গে ঈর্ষার সম্পর্ক— জটিল এই চরিত্রটায় একক অভিনয়ের দুঃসাহস জুগিয়েছেন নির্দেশক।’’ বলছিলেন সুকৃতি লহরী, তুলিকা দাস নির্দেশিত বহুস্বর-এর প্রযোজনা ‘ভাঙা ভাঙা ছবি’-র মুখ্য চরিত্রে নিজের অভিনয় নিয়ে। গিরিশ কারনাডের ‘ব্রোকেন ইমেজেস’-এর বঙ্গীকৃত (অনুবাদ: স্রোতস্বিনী দে) নাটকটির নামকরণ শঙ্খ ঘোষের। ইতিমধ্যেই মঞ্চস্থ এ নাটকের আগামী অভিনয় ২৬ অগস্ট, পদাতিক স্টুডিয়ো থিয়েটারে। ছোটবেলা থেকেই বাবার উৎসাহে আবৃত্তিতে আসক্তি সুকৃতির, কণ্ঠশিল্পের চর্চা করতে করতেই একদা আকাশবাণীর উপস্থাপক, একই সঙ্গে নাটকে অভিনয়। প্রেসিডেন্সিতে পড়তে পড়তেই শম্ভু মিত্রের নাট্যাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বহুরূপী-তে অভিনয় শুরু। আগাগোড়া তাঁকে নাট্যশিক্ষায় ঋদ্ধ করেছেন কুমার রায়। তিরিশ বছরেরও বেশি যুক্ত থেকে অভিনয় করেছেন বহুরূপীর বহু নাটকে... আগুনের পাখি, গ্যালিলেও, মালিনী, মিস্টার কাকাতুয়া, কিনু কাহারের থেটার, এবং ফুল্লকেতুর পালা-য় ফুল্লরার ভূমিকা অবশ্যই উল্লেখ্য। পাশাপাশি ফিল্ম ও টিভি সিরিয়ালেও অভিনয়। অধ্যাপনা করেন ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন কলেজে। যাদবপুর থেকে শেষ করেছেন গবেষণা: ‘বাংলা নাট্য নির্মাণ ও নির্দেশনায় মেয়েরা (১৯৪৩-২০০৩)’। সম্প্রতি ব্যস্ত নিজেদের নাট্যদল বহুস্বর নিয়ে। ‘‘নাটক করতে এসে একটা মেয়ে খুব সাহসী হয়ে ওঠে, নাটক আলাদা এক শক্তি জোগায়। নাটকের কাছে এটাই আমার সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি।’’ জানালেন সুকৃতি। ছবি: ময়ূখ দত্ত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE